এমন অনেক বর্ষীয়ান শিল্পীরা আছেন, যাঁদের শৈশবকালের অভিজ্ঞতা শুনলে একটা অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি হয় আমাদের। ঠিক যেমন দাদু-ঠাকুমারা গল্প শোনাতেন আগেকার দিনে আর নাতি-নাতিরা মুগ্ধ হয়ে সেগুলো শুনতো। যেমন কিছুদিন আগে জন্মভূমি’র পিসিমা ‘মিতা চট্টোপাধ্যায়’ জানিয়েছিলেন অতীতের স্মৃতি। এবার টলিউডের দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ ‘ছন্দা চট্টোপাধ্যায়’ (Chhanda Chatterjee) জানালেন নিজেরটা। এখনও ক্যামেরার সামনে সমান স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
আশির কোটা পার করেও তাঁর মধ্যে কাজের আগ্রহ যেন কোনওভাবেই কমেনি। বহু জনপ্রিয় ছবিতে এবং ধারাবাহিকে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ছোটপর্দায় যেমন ‘পটলকুমার গানওয়ালা’ কিংবা ‘তোমায় আমায় মিলে’-র মতো ধারাবাহিক তাঁকে দর্শকের মনে গেঁথে দিয়েছে, তেমনি বড়পর্দায়ও ‘চারুলতা’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘কালবেলা’, ‘শুভ দৃষ্টি’র মতো একের পর এক উল্লেখযোগ্য ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। অভিনেত্রীর কথায়, “আসল শক্তি আসে মানসিক দৃঢ়তা থেকে। শারীরিক কষ্ট বা বয়স কোনও কিছুই বাধা নয় যদি মনের জোড় ঠিক থাকে।”
কাজের ক্ষেত্রে এমনই বিশ্বাস তাঁর। নব্বইয়ের দশকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তাপস পাল কিংবা মিঠুন চক্রবর্তীর মতো কোনও তারকা নেই যাদের সঙ্গে কাজ করেননি তিনি। আজও সেই উদ্যম নিয়ে কাজ করতে পারা তাঁর অভিনয়জীবনের বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন তিনি। তবে ছন্দা দেবীর জীবন শুধু পর্দার আলোয় সীমাবদ্ধ নয়। ছোটবেলায় টালিগঞ্জ যাওয়া-আসা থেকে শুরু করে পরিবারে নানা সাহায্য, সবই তাঁর অভিজ্ঞতাকে বিশেষ করে তুলেছে। বরাবর খুব চুপচাপ মেয়ে ছিলেন তিনি। মুখ ফুটে খাওয়ারও চাইতেন না কারোর কাছে।
খুব অল্প বয়সেই অভিনয়ে পা রাখলেও সেই সময়ের কঠোর পরিশ্রম, প্রতিদিন হাঁটাপথের ক্লান্তি, কিংবা পরিবারের যত্ন— সব মিলিয়ে গড়ে উঠেছিল তাঁর ভিত। শৈশবের এক বিশেষ অভিজ্ঞতার কথাও আজও ভোলেননি তিনি। ছন্দা দেবী বলেন, “আমার ১০-১২ বছরের চেহারা দেখলে কেউ বুঝতেই পারতো না। মামার বাড়িতে থাকতাম তখন সারাদিন। দাদু আমার জন্য প্রতি মাসের মাংসের পরিমাণ বরাদ্দ করে রেখেছিলেন। এক কেজি মাংস দিয়ে পঁচিশটা রুটি খেতাম প্রতিদিন রাতে। বাড়ির সবার জন্য হাফ কেজি হলেও, দাদু আমার জন্য এক কেজি খাসির মাংস আলাদা করে আনতেন।
রাতে খাবার সেরে যখন হেঁটে বাড়ি আসতাম, দ্বারিকানাথ থেকে হাফ কেজি দুধ খেতাম ৯-৯:৩০ টার সময়। এই খরচাগুলো সব সামলাতেন দাদুই। আমার বাবা পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। উনি এসে একদিন বললেন যে, এই যা চেহারা হচ্ছে আমার তাতে নাকি আমি কুস্তিগীর হয়ে যাবো। নির্দেশ দিলেন তড়িঘড়ি করে খাওয়ার কমাতে। দিদিমা আপত্তি করেছিলেন কিন্তু আমার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই মেনে নিয়েছিলেন।” অভিনেত্রীর এই স্মৃতিচারণ বলে দিয়েছে, প্রতিটা সাফল্যের পেছনে কতটা অভ্যাস, ত্যাগ আর শৃঙ্খলা জড়িয়ে থাকে। আজ টলিউডের এক বর্ষীয়ান শিল্পী হিসেবে যেখানেই তিনি পৌঁছেছেন, তার পেছনে সেই অভিজ্ঞতাগুলোরই গভীর প্রভাব রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ “আমার ঝাঁঝটা শুকনো লঙ্কার, কাঞ্চনেরটা টোপা কাঁচালঙ্কা”— কাঞ্চন-শ্রীময়ীর ভাইরাল মন্তব্য! “ঝাঁঝটা নিজেদেরকেই দেখাবেন শুধু! জনসাধারণকে বেশি দেখাতে আসবেন না, পরেরবার মা’র খাবেন!”— সরকারি হাসপাতালের ঝা’মেলা প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ নেটপাড়ার!
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
https://www.facebook.com/share/r/17KPtzonTA/