“আমাকে তো কেউ কাজে দেয় না, বাংলায় আমায় ডাকে না কেউ!” টলিউড নিয়ে আক্ষেপ সীমা বিশ্বাসের! ঋত্বিক-মৃণাল-সত্যজিতের যুগের অভিনেত্রী জাতীয় পুরস্কারজয়ী হয়েও, আজ বাংলায় বঞ্চিত!

বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে ‘সীমা বিশ্বাস’ (Seema Biswas) এক অনন্য নাম। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রীকে নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস সর্বদাই তুঙ্গে থাকে। দীর্ঘ তিন দশক পর শিবপ্রসাদ এবং নন্দিতার হাত ধরে ‘রক্তবীজ ২’ (Raktabeej 2) দিয়ে বাংলার ছবিতে ফিরেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এত বড় মাপের অভিনেত্রী হয়েও কেন টলিউডে তাঁকে প্রায় দেখা যায় না? সম্প্রতি এই প্রশ্ন করা হয় তাঁকে সীমা বিশ্বাস অকপটে উত্তর দিয়ে বলেন, “আমাকে তো কেউ কাজে দেয় না, বাংলায় আমায় ডাকে না কেউ!

ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়ের যুগে বড় হয়েছি। হয়তো এখনকার ছবির চরিত্রদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবো না বলেই আমায় ডাকে না। যোগ্য হলে নিশ্চয়ই ডাকত!” তাঁর এই প্রতিক্রিয়া মুহূর্তে আলোচনার ঝড় তুলেছে। অভিনেত্রীর উত্তর শুনে অনেকেই বিস্মিত। কারণ, এখনও তাঁর অভিনয় ক্ষমতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। হিন্দি ছবিতে তিনি যেমন ধারাবাহিকভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন, তেমনই আঞ্চলিক ছবিতেও তাঁর উপস্থিতি সমান শক্তিশালী।

Seema Biswas, Raktabeej 2, Jolly LLB 3, Tollywood, Bollywood, Puja Release, Shiboprosad Mukherjee, Nandita Roy, National Award winning Actress, Sheikh Hasina Role, সীমা বিশ্বাস, রক্তবীজ ২, জলি এলএলবি ৩, টলিউড, বলিউড, পুজো রিলিজ, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নন্দিতা রায়, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী, শেখ হাসিনা চরিত্র

এমন প্রতিভাবান শিল্পী যদি বলেন বাংলায় তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয় না, তাহলে সেটা কেবল তাঁর ব্যক্তিগত আক্ষেপ নয়, টলিউডের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যারা সীমার দীর্ঘ অভিনয়যাত্রার সঙ্গে পরিচিত, তারা জানেন তিনি সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসেন। সমাজ বা ব্যক্তিজীবনের জটিলতা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন অনবদ্য ভঙ্গিতে। এমন শিল্পীর কাছে টলিউডের দরজা কেন বন্ধ থেকে যায়, সেটাই এখন দর্শকদের কৌতূহল।

অনেকেই মনে করছেন, বাংলা সিনেমার চরিত্র নির্মাণে যেভাবে পরিবর্তন এসেছে, তাতে হয়তো সীমাকে উপযুক্ত মনে করছেন না নির্মাতারা। কিন্তু দর্শকরা একবাক্যে বলছেন, তাঁর জন্য সঠিক চরিত্র লেখা হলে তিনি আজও পর্দা কাঁপিয়ে দিতে পারেন। অভিনেত্রীর আক্ষেপের মধ্যে একটা গভীর বাস্তবতা লুকিয়ে আছে। নতুন প্রজন্মের নির্মাতারা প্রায়ই আন্তর্জাতিক উৎসবে যাওয়ার মতো বিষয় বা অভিনব আঙ্গিকের ছবি তৈরি করতে চান।

আরও পড়ুনঃ “একটা সারল্যভরা ইনোসেন্স ফুটে বেরোচ্ছে”— রুক্মিণীকে নিয়ে কুণাল ঘোষের অপ্রত্যাশিত প্রশংসা! দেবকে কটাক্ষ করলেও সঙ্গিনীর পাশে শাসক দলের মুখপাত্র! “ইনোসেন্স ফুটে বেরোচ্ছে, বলতে কি আপনি শুভশ্রীর ইনোসেন্স হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা টানলেন?”– প্রশ্ন নেটপাড়ার!

কিন্তু অভিজ্ঞ শিল্পীদের সেই জায়গায় খুব একটা কাজে লাগানো হয় না। ফলে সীমা বিশ্বাসের মতো প্রতিভাধররা দূরে সরে যাচ্ছেন। এ নিয়ে অনেকে দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং মনে করছেন, বাংলার চলচ্চিত্রজগৎ আসলে এক বড় সুযোগ হারাচ্ছে। তবে এর মধ্যেও সীমা বিশ্বাস নিজের কাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছেন। বাংলার দর্শকরাও আশা ছাড়ছেন না, হয়তো খুব শিগগিরই কোনও নির্মাতা সাহস নিয়ে তাঁকে নতুনভাবে টলিউডে ফিরিয়ে আনবেন।