বিরাট দুঃসংবাদ! সঙ্গীতমহলে গভীর শূন্যতা, ভোররাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী!

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে এক বড় শূন্যতার খবর এসে পৌঁছেছে বৃহস্পতিবার ভোরেই। এই মুহূর্তে ভারতীয় সঙ্গীতমহলে ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া। দীর্ঘদিন ধরেই এই শিল্পী শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন, তাঁর অবস্থা গত কয়েকদিনে আরও খারাপের দিকে গিয়েছিল। চিকিৎসকদের তৎপরতা চললেও শেষ পর্যন্ত আর ফিরিয়ে আনা গেল না তাঁকে (Classical Singer Death)। পরিবারের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিল্পীকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল।

এমনকি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী ভেন্টিলেশনে রাখা হয়নি। এই শিল্পীর সঙ্গীতপ্রতিভা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ছিল সমানভাবে প্রশংসিত। তাঁর কণ্ঠে যে আবেগ আর মাধুর্য ধরা দিত, তা নিঃসন্দেহে শ্রোতাদের মনে অনন্য ছাপ রেখে যেত। একসময় তিনি অনবদ্য খেয়াল, দাদরা কিংবা ভজন গান গাইতেন, আর তাতে বোঝা যেত শিল্পের প্রতি তাঁর নিবেদন কতটা গভীর। বহু তরুণ শিল্পী তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, তাঁদের কাছে তিনি ছিলেন এক জীবন্ত পাঠশালা।

শেষ কয়েক মাসে শারীরিক অসুস্থতা তাঁকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছিল। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, এমনকি শ্বাসকষ্টও তাঁকে ভীষণ কাবু করে তুলেছিল। চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল তাঁর পাশে ছিলেন সবসময়। তবে একাধিক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর দেহ আর সাড়া দেয়নি। শেষ রাত পর্যন্ত বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু বুধবার রাতের পর থেকে অবস্থার অবনতি দ্রুত হয়।

পরিবার তখনই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান, যদিও পৌঁছনোর পর তাঁকে মৃ’ত ঘোষণা করা হয়। শিল্পীর মৃ’ত্যুর খবরে তাঁর পরিবারও ভেঙে পড়েছেন। কন্যা নম্রতা জানিয়েছেন, বাবার শেষ মুহূর্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল এবং তাঁকে বাঁচানো যায়নি। অন্যদিকে তাঁর পুত্র, যিনি নিজেও একজন প্রখ্যাত তবলাশিল্পী, দিল্লি থেকে রওনা দিয়েছেন বাবার শেষকৃত্যে যোগ দিতে। বিমানের টিকিট না পেয়ে সড়কপথেই আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ ক্রিকেট মাঠ থেকে হঠাৎ মঞ্চে, তারপরই জীবন বদলে গেল ভীষ্ম গুহঠাকুরতার! ব্যক্তিগত জীবনে টানাপড়েন, পেশায় নিরলস অধ্যবসায়ের পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেনন তিনি! শেষের দিনগুলো অত্যন্ত ক’ষ্টে কেটেছে এই বর্ষীয়ান শিল্পীর!

এই প্রয়াত শিল্পী আর কেউ নয়, শিল্পী ছন্নুলাল মিশ্র, গতকাল উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃ’ত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তিনি ছিলেন উত্তর ভারতের বারাণসী ঘরানার এক উজ্জ্বল প্রতিনিধি। খেয়াল, ঠুংরি, দাদরা, কাজরি ও ভজন গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। সঙ্গীতের দীর্ঘ পথচলায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক অবিস্মরণীয় নাম, যাঁর মৃ’ত্যুতে সঙ্গীতমহল আজ শোকাভিভূত।