বেশ কিছু বছর আগের কথা, তখন তিনি ছিলেন শুধুই অভিনেত্রী। এখন যদিও তিনি রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধি। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে ‘সায়নী ঘোষ’কে (Saayoni Ghosh) নিয়ে। অতীতে নানা কারণে তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও ভগবান শিবকে ক’ন্ডম পরানোর কথা বলে, তো কখনও অপরেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশ্ন তুলে। শিব ঠাকুরকে নিয়ে এমন সেই সময় তাঁকে নিয়ে শুরু হাওয়া বিতর্ক আজ ও ঘুরে ফিরে আসে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন হিন্দু তথা বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছেন তিনি!
দশমীর দিন হাজরা পার্কের পুজো প্যান্ডেলে আনন্দে মেতে উঠেছিল সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকারাও। ঢাকের তালে তালে নাচ, দেবী বরণ আর তারই মাঝে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হওয়া সায়নী ঘোষও। বিজয়ার আবহে তিনি বললেন, “মাকে বলেছি যেন তাড়াতাড়ি ফিরে আসে আবার। বাংলার মানুষ ভালো থাকুক, যাদবপুরের মানুষ ভালো থাকুক আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও সুস্থ থাকুন, এটাই চেয়েছি।” এদিন প্যান্ডেলের জমজমাট ভিড়ে ঢাক বাজানো থেকে শুরু করে ঢাকের তালে নাচ, সবেতেই ছিলেন তিনি।
তবে এখানেই প্রশ্ন ওঠে– এই সেই সায়নী ঘোষ, যিনি কিছু বছর আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন একটি টুইটার পোস্টের কারণে, যেখানে হিন্দু ধর্ম ও ভগবান শিবকে ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্য ছিল। যদিও তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাকড’ হয়েছিল এবং পরে তিনি পোস্টটি ডিলিটও করে দিয়েছিলেন, তবু বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। সেই সময় বহু মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কারণে পুলিশে অভিযোগও জমা করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, তাঁরা শিবের ভক্ত এবং এই ধরনের মন্তব্য তাঁদের আবেগে গভীরভাবে আঘাত করেছে।
প্রসঙ্গত, তাঁর অতীত মন্তব্য ও পোস্ট দেখে মনে পড়ে যায়, কীভাবে বারবার হিন্দু ধর্ম নিয়ে কিছু বলার পর বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। তখন তাঁর ভাষা ছিল উগ্র, ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননার মতো ঠেকেছিল অনেকের চোখে। অথচ আজ সেই তিনিই সিঁদুরের মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করছেন, দেবী বরণের মুহূর্তে সম্মান ও ভক্তির কথা বলছেন! প্রশ্ন উঠছে— এই বদলটা সত্যিই আন্তরিক, নাকি রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে এ এক নতুন চেষ্টা? অনেকেই যদিও কথাক্ষ করেছেন এবারও।
আরও পড়ুনঃ “সবাই পেল, আমি শুধু বঞ্চিত…না পেলাম টাকা, না সম্মান!” “পরিশ্রমের কি কোনও মূল্য নেই?”— ‘রক্তবীজ ২’-এর শিল্পী সিরাজ চিত্রকরের ক্ষোভ! পটচিত্রে জীবন, বিনিময়ে অবহেলার অভিযোগ শিবপ্রসাদের বিরুদ্ধে!
একজন যেমন বলেছেন, “শিবকে কটাক্ষ করে সেই মুখে মা দুর্গার বরণ করেন কী করে? লজ্জা লাগে না আপনার?” অন্যজন আবার বলেছেন, “শিবকে ক’ন্ডোম পরিয়ে, মা দুর্গার সিঁদুর নিয়ে নেত্রী এখন মাহাত্ম্য বোঝাচ্ছেন!” সব মিলিয়ে, রাজনীতিক হিসেবে সায়নী নিজেকে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে চাইছেন। কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে খেলা করার যে অতীত রয়েছে তাঁর, তা মুছে ফেলতে শুধু ঢাক বাজানো আর সিঁদুরের মাহাত্ম্য বোঝানোই যথেষ্ট নয়। বরং হঠাৎ করে সংস্কার ও ভক্তির বার্তা দেওয়া অনেকের কাছেই ভণ্ডামি মনে হতে পারে।