উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ধস! পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে বিপদে অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত! পরিবারের সঙ্গে আটকে পড়েছেন পাহাড়ে, উৎকন্ঠায় পরিবার ও ভক্তরা

পুজোর ছুটি মানেই ঘুরতে যাওয়ার উন্মাদনা। সমুদ্র হোক বা পাহাড়, বাঙালির মন টানে দূরদূরান্তে ঘুরে বেড়ানো। প্রতি বছরই পুজোর মরশুমে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং বা সিকিমে ভিড় জমে হাজার হাজার পর্যটকের। তারকারাও এর ব্যতিক্রম নন। এ বছরও সেই ভ্রমণের আনন্দে বেরিয়েছিলেন অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত। কিন্তু প্রকৃতির রুদ্ররূপে আনন্দযাত্রা বদলে গেল আতঙ্কে।

কিছুদিন আগেই জানা গিয়েছিল, মানসী তাঁর ছেলে, মেয়ে ও বোনেদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন। সেখানে তাঁরা একটি সুন্দর হোমস্টেতে ছিলেন, পরিকল্পনা ছিল আশপাশের পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখার। কিন্তু ভাগ্যের অন্য লিখন। প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি রাস্তায় নেমেছে ভয়াবহ ধস। যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। একাধিক রাস্তা ভেঙে পড়েছে, সেতু গুঁড়িয়ে গিয়েছে প্রবল জলের চাপে। সেই পরিস্থিতিতেই আটকে পড়েন মানসী ও তাঁর পরিবার।

রবিবার অভিনেত্রী নিজেই একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেন সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, তাঁরা লাদাখগামী রাস্তায় রয়েছেন, কিন্তু সামনে বিশাল ধস। রাস্তা বন্ধ, যানবাহন থেমে আছে দীর্ঘ লাইনে। ভিডিয়োতে মানসীর মুখে উদ্বেগ স্পষ্ট, যদিও তিনি শান্তভাবে জানাচ্ছেন যে স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন দফতর উদ্ধার তৎপরতায় নেমেছে। ভিডিয়োর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “লাদাকের রাস্তায় ধস।” অনুরাগীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্তব্যে তাঁর নিরাপত্তার কামনা করেছেন।

উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ভয়াবহ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২৬১ মিলিমিটার। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারেও চলছে প্রবল বর্ষণ। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গিয়েছে মহানন্দার বাঁধ, প্লাবিত হয়েছে আশপাশের গ্রাম। তোর্সা নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। দার্জিলিঙে ধসের ফলে কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বহু মানুষ নিখোঁজ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক বাড়ি ও দোকানপাট।

আরও পড়ুনঃ “বিয়ে ভাঙলে কি আমি রাজার আসন পাবো, না গোলাপ ছড়ানো রাস্তায় হাঁটব?” “বিয়ে-মাতৃত্ব কোনও বাধা নয়, বরং এগিয়ে চলার প্রেরণা হতে পারে, সংসার ভাঙলেই জীবন সহজ হয় না!”— অকপট অঞ্জনা বসু! সংসার আর সাফল্যের ভারসাম্য রাখতে শেখালেন অভিনেত্রী!

পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, প্রশাসন উত্তরবঙ্গের একাধিক সড়ক বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাতিল হয়েছে ট্রেন ও বাস পরিষেবা। পর্যটকরা নিরাপদে ফিরতে না পারায় স্থানীয় লজ, হোটেল ও হোমস্টেতে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয় শিবির। মানসী সেনগুপ্তের মতো আরও বহু মানুষ এখন সেখানে আটকে। পাহাড়ের মনোরম সৌন্দর্য ম্লান হয়ে গিয়েছে ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যে।

প্রকৃতির এই তাণ্ডব আবারও মনে করিয়ে দিল, পাহাড়ের সৌন্দর্য যেমন মুগ্ধ করে, তেমনি এক মুহূর্তে তার রূপ বদলে যেতে পারে বিপদের মুখে। আশা, মানসী সেনগুপ্ত ও অন্যান্য পর্যটকরা দ্রুত নিরাপদে ফিরতে পারবেন, আর পাহাড়ের এই দুঃস্বপ্ন শিগগিরই কাটবে।