নতুন মোড় নিয়েছে স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’ (Chiroshokha)। কিন্তু এই মোড়ে যতটা চমক, ততটাই দ্বিধা আর প্রশ্নও জেগেছে দর্শকদের মনে। বিশেষ করে স্বতন্ত্রর প্রতি দর্শকদের আবেগ যেন আগের থেকে অনেক বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, একটা মানুষ কতটা নিঃস্বার্থ হলে এমন পরিস্থিতিতেও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। অথচ, যার জন্য এতটা করল সে— সেই কমলিনীর কাছ থেকেই যখন অবিশ্বাস আর নিরুত্তরতা পেল, তখন কোথাও যেন একটা তীব্র অব্যক্ত কষ্ট ঘিরে ধরেছে দর্শকদেরও।
ধারাবাহিকের সাম্প্রতিক পর্বে পার্বতীর বিয়ের আসরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো যেন একেকটা চরিত্রকে একেবারে নতুন আলোয় তুলে ধরছে। স্বতন্ত্রর প্রতি পার্বতীর একরোখা দাবি, তার মুখের কথার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে আবেগের নাটক। স্বতন্ত্র যতই বলুক যে সে এই বিয়ে চায়নি, এই সম্পর্কটা সত্যি নয়, তবুও পার্বতী জোর করে সম্পর্কের সত্যতা চাপিয়ে দিতে চাইছে তার ওপর। এমনকি স্বতন্ত্রর নিজের মুখে কমলিনীর জন্য ভালোবাসা স্বীকার করাও যেন থামাতে পারেনি পার্বতীর এই একতরফা সিদ্ধান্ত।
স্বতন্ত্রর দিকটা বুঝতে পারছে অনেকেই। সে নিজেই একথা বলেছে— কমলিনীকে সে স্ত্রী হিসেবে চাইত, কিন্তু কমলিনী সেটা চায়নি, তাই সে বন্ধু হিসেবেই পাশে থাকবে। তবে তাদের দু’জনের সম্পর্ক বন্ধুত্বের থেকেও বেশি, এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে সে। তবুও এতটা স্পষ্ট করে বলার পরেও, পার্বতীর এই সম্পর্কটাকে জোর করে বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা যেন স্বতন্ত্রর আত্মসম্মানে আঘাত করছে, এবং দর্শকদের হৃদয়েও প্রশ্ন জাগাচ্ছে— সত্যি কি একতরফা আবেগ দিয়েই একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে?
তবে সমানভাবে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে কমলিনীর নীরবতা। সে জানে না, না জানার ভান করছে— এই প্রশ্নটা উঠছেই। এতদিন যাকে চোখে চোখ রেখে ভরসা করত, সেই স্বতন্ত্রর স্পষ্ট কথা শুনেও কেন তার অনুভবের প্রকাশ নেই? স্বতন্ত্রর প্রতি তার অনুভূতি কি সত্যিই নেই, নাকি জেদ বা ভুল বোঝাবুঝির পেছনে লুকিয়ে আছে একটা গভীর অসহায়তা? দর্শকদের কেউ কেউ বলছেন, কমলিনী যেন নিজের জন্য নয়, বরং সমাজের চাপে চলতে থাকা এক নিষ্প্রাণ চরিত্রে পরিণত হয়েছে, যাকে না বলা এবং না বোঝার মধ্যেই আটকে রেখেছে লেখিকা।
আরও পড়ুনঃ “ইমোশন বেচে খায়, বিশ্বাস করাই মূর্খামি!” “সবাই ফুর্তি করতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে না!”— সমাজ সংস্কারের উদ্দেশ্যে রাজা-মধুবনীর বার্তায় ভিজল না চিঁড়ে, উল্টে ক’টাক্ষ নেটপাড়ার! বাঙালির সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে মন্তব্যেই ঘি ঢাললেন তাঁরা, তুঙ্গে নতুন বিতর্ক!
সব মিলিয়ে, ধারাবাহিকের সম্প্রতিক পর্বে— আত্মত্যাগ, আত্মসম্মান আর ভালোবাসার জটিল সমীকরণ ফুটে উঠছে। স্বতন্ত্রর নিঃশব্দ যন্ত্রণা, কমলিনীর অব্যক্ত দ্বন্দ্ব আর পার্বতীর একপাক্ষিক আবেগ— এই তিনে মিলে তৈরি হয়েছে এমন এক পরিস্থিতি, যা সহজভাবে মেনে নেওয়া যাচ্ছে না দর্শকদের পক্ষে। একদিকে কষ্ট, অন্যদিকে কৌতূহল— ঠিক কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে এই গল্প, তা দেখার অপেক্ষায় সকলে। তবে এটুকু স্পষ্ট, স্বতন্ত্রর মতো চরিত্র আমাদের ভাবায়, কখনও কাঁদায়, আর বারবার প্রশ্ন তোলে— ভালোবাসা কি সত্যিই বোঝার থেকেও বেশি কিছু?