টেলিপাড়ার পরিচিত মুখ মধুবনী গোস্বামী (Madhubani Goswami) এবং তাঁর স্বামী রাজা গোস্বামী (Raja Goswami) বহুদিন ধরেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। চলতি বছরই একাধিকবার বিতর্কের শিকার, কটক্ষবিদ্ধ হয়েছে তাঁরা। কখনও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন, কখনও পোশাক-আশাক, আবার কখনও সন্তান পালনের ধরন। প্রায় সবকিছু নিয়েই কটাক্ষের মুখে পড়েছেন তাঁরা। তবুও সমালোচনার তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো করেই এগিয়ে চলেছেন তাঁরা। সম্প্রতি নিজেদের নতুন ব্যবসা শুরু করার ঘোষণার পরেও সেই পুরনো কটাক্ষ ফিরে এসেছিল।
অবশ্যই তার কারণ, সন্তান সম্ভবা অবস্থায় ছবি পোস্ট করে তারা ইঙ্গিতপুণ্য বার্তা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে জানা যায় সেটি সন্তান নয় বরং নতুন ব্যবসা জন্মের উদ্দেশ্যে করা পোস্ট। মাতৃত্বের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে এই ছেলেখেলা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। এছাড়াও ব্যাগে কোনও লোগো বা ট্যাগ না থাকায়, অনেকেরই অভিযোগ যে সস্তার ব্যাগকে তাঁরা নিজেদের ব্র্যান্ড বলে চড়া দামে বিক্রি করছেন। তবে এবার তাঁরা সেই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন সোজাসাপ্টা ভাষায়, যুক্তির মাধ্যমে।
ব্যাগের ব্যবসা নিয়ে মধুবনীর একটি পোস্টে লিখেছেন, যাঁরা একসময় বন্ধু ছিলেন, তাঁরাই আজ প্রশ্ন করছেন ব্যাগ বিক্রি করার দরকারটা কী! অথচ অভিনেত্রীর যুক্তি, পরিবার জমানো পুঁজি নয় বা পূর্বপুরুষদের সম্পত্তি নয়, নিজেদের রোজগার দিয়েই এই উদ্যোগ শুরু করেছেন তাঁরা। ব্যবসা মানেই যে অপমান, এই ধারণা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মধুবনী। তাঁর মতে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করছেন তাঁরা এবং এতে লজ্জার কিছু নেই। বরং সমস্যাটা সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে, যেখান থেকে ব্যবসাকে ছোট করে দেখা হয়।
এই প্রসঙ্গে বাঙালিদের ভোক্তা মনোভাব নিয়েও মধুবনীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, তাঁর ব্যাগের প্রধান ক্রেতা গুজরাটি বা মারওয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষজন, বাঙালিরা নাকি তেমন সাড়া দেন না। এই নিয়েই তাঁর দাবী– বাঙালিরা চাকরি করতে রাজি, কিন্তু ব্যবসা নিয়ে আজও অনেকের মনে সংকোচ। যেন এক অলিখিত সংস্কৃতি, যেখানে স্বাধীনভাবে কিছু শুরু করলে সেটা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। অথচ সৎ পথে রোজগার করাই তো সবচেয়ে গর্বের বিষয় হওয়া উচিত।
এরপর তারা একটি ভিডিও পোস্ট করেন এই একই বিষয়ে। যেখানে রাজা গোস্বামীর কথাতেও ধরা পড়েছে একই রকম হতাশা। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের সময়ে তিনি লক্ষ্য করেছেন, কীভাবে বাঙালিদের পুরনো বাড়ি একের পর এক বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এক প্রজন্মের সঞ্চয় দিয়ে তৈরি সেই বাড়িগুলো বেচে দেওয়া হচ্ছে খুব স্বাভাবিকভাবেই। নিজের অনুভব থেকে তিনি বলেন, “রোজ গিরিশপার্ক থেকে সেন্ট্রাল এভিনিউ হয়ে টলিগঞ্জ যাওয়ার পথে লক্ষ্য করে রেখেছি বাঙালিদের বাড়িই নেই আর।
আরও পড়ুনঃ সুদীপার বাড়িতে শো’কের ছায়া! পরিবারের সদস্য নিখোঁজ, ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী! উঠছে নৃ’শং’সভাবে খু’নের অভিযোগ! রহস্য উদঘাটনে আইনের দ্বারস্থ তিনি এবং পরিবার!
বাপ-ঠাকুরদারা যেখানে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে হলেও জীবনের সঞ্জয় দিয়ে বাড়ি করেছিলেন। নির্দ্বিধায় সেই বাড়ি বেচে ফুর্তি করছে বাঙালিরা। চাকরি করার আশায় শেষ হয়ে যাচ্ছে একটা সম্প্রদায়, তবু সৎ পথে ব্যবসা করবে না!” যদিও অনেকে সমর্থন করেছেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে, তবে কটাক্ষও কম হচ্ছে না। যেমন, “যারা ইমোশন বেচে খায় তাদের বিশ্বাস করা মূর্খামি।” আবার, “সবাই ফুর্তি করতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে না , অনেকে নিরুপায় হয়ে করে। ফুর্তিবাজরা ঠিক যে ভাবেই হোক ফুর্তি করার টাকা জোগাড় করে নেবে , আবার অনেককে দেখেছি সম্পত্তি বাঁচিয়ে রাখতে ধার দেনা করে।”