“বামপন্থী বলে মা কালীকে মানবো না?”—রাজনৈতিক মতাদর্শের গণ্ডী ভেঙেই ঠাকুরে বিশ্বাসী মানসী সিনহা! একদিকে বামপন্থী চিন্তাধারা, অন্যদিকে গভীর ভক্তি—এই দ্বন্দ্বের মাঝেই অভিনেত্রীর মুখে শোনা গেল বিশ্বাসের অন্যরকম রূপ!

বিনোদন জগতে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে মানসী সিনহা এক আলাদা পরিচয় গড়ে তুলেছেন। শুধুই অভিনয় নয়, বরং সমাজের নানা বিষয় নিয়ে স্পষ্টভাষী হওয়ায় তিনি দর্শকদের মধ্যে বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তার চরিত্রগুলো সবসময় জীবনের কাছাকাছি এবং দর্শকের সঙ্গে সহজে সংযোগ তৈরি করে। টলিউডে তিনি এমন একজন অভিনেত্রী, যিনি অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং সমাজ সচেতনতার কথাও সাহসের সঙ্গে প্রকাশ করেন।

মানসী সিনহার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল তিনি সবসময় সোজা সাপ্টা কথা বলেন। টলিউডের কারোর কুরুচিকর মন্তব্য কিংবা সমাজে অন্যায় চোখে পড়লে তিনি তা নিয়ে চুপ থাকেন না। অভিনয় জীবনের প্রথম থেকে এই স্বচ্ছন্দ প্রকৃতির কারণে দর্শকরা তাকে খুব প্রিয় মনে করেন। তার ভাষায়, “যা সত্যি, সেটাই বলতে হবে, আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মানসী সিনহা বলেছেন, তিনি বামপন্থী হলেও তার বিশ্বাস মানুষের মঙ্গলের উপর ভিত্তি করে। তার ভাষায়, “বামপন্থায় বিশ্বাস মানে সবার মাথার উপর ছাদ থাকবে, সবাই খেতে পারবে, নাকি মা দুর্গা বা কালীকে উপেক্ষা করা?” তিনি স্পষ্টভাবে বোঝাতে চেয়েছেন, ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থাকা জরুরি, কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ তাকে ভগবানের প্রতি সম্মান দেখাতে বাধা দিতে পারে না।

ছোটবেলায় তার এক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন তিনি। পুরনো বাড়িতে থাকাকালে বাড়ির বাগানে একটি ছোট বেলী গাছ ছিল, পরে তার দাদু ওই গাছের কাছে মানুষের কিছু হাড় দেখতে পান, যা যা তৎকালীন বাড়ির আগের মালিকের ভাইয়ের ছেলের মৃত্যুর সঙ্গে কিছু ভুতুড়ে ব্যাপারে সঙ্গে জড়িত ছিল। এরপর তারা আত্মার শান্তির জন্য শ্মশানে হাড়গুলো পৌঁছে দেন। এই স্মৃতি থেকে বোঝা যায়, মানসী ছোটবেলা থেকেই ভগবান ও জীবনের গভীর সত্যকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে অনুভব করেছেন।

আরও পড়ুনঃ “মুখের উপরে কথা বলি বলে জীবনে বহুবার বিপদে পড়েছি, কিন্তু মিথ্যে বলতে পারি না”— অঞ্জনা বসুর বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি! “সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ারের দাপটে বর্তমানে শিল্প মূল্য হারাচ্ছে, তাসের ঘরে পরিণত হয়েছে ইন্ডাস্ট্রি!”—ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিনেত্রী

মানসী সিনহা শুধু টলিউডের অভিনেত্রী নন, তিনি একজন স্পষ্টভাষী, মানবিক এবং বিশ্বাসী মানুষ। ছোটবেলার স্মৃতি থেকে শুরু করে আজকের তার সমাজ সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি, সবই তার ব্যক্তিত্বকে আরও উজ্জ্বল করেছে। দর্শকরা তাকে কেবল অভিনয় নয়, তার মানবিক এবং সৎ চরিত্রের জন্যও মনের গভীরে ভালোবাসেন।