টলিউডের এমন কিছু অভিনেত্রী আছেন যাঁরা নিজের মতামত প্রকাশে কখনও পিছিয়ে যান না— ‘দেবলীনা দত্ত’ (Debolina Dutta) তাঁদের মধ্যে অন্যতম। নিজের স্পষ্টভাষী স্বভাবের জন্য তিনি যেমন প্রশংসা পেয়েছেন, তেমনই অনেক বিতর্কেও জড়িয়েছেন। একসময় রাজ্যের শাসক দলের নানা নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তিনি কাজ হারানোর কথাও স্বীকার করেছিলেন খোলাখুলি। কিন্তু তাতে তিনি থেমে থাকেননি, বরং নানা সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে নিজের অবস্থান আরও জোরদারভাবে তুলে ধরেছেন।
কিছু বছর আগে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেবলীনাকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের কথা আজও অনেকে মনে রেখেছেন। সেদিন অনুষ্ঠানে এক অতিথি মহাষ্টমীর দিন গো’মাংস খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। দেবলীনা, যিনি নিজে নিরামিষভোজী, সেখানে বলেন যে অন্য কেউ চাইলে সেই দিন গ’রুর মাংস রান্না করে খেলে তাঁর তাতে কোনও আপত্তি নেই। এই মন্তব্যের পর নানা মহল থেকে সমালোচনা আসে, কিন্তু অভিনেত্রী নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বাইরে গিয়েও অন্যের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে তিনি সমানভাবে গুরুত্ব দেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেবলীনা আরও একবার নারীর স্বাধীনতা প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তাঁর কথায়, “স্বামী মারা গেলে স্ত্রীদের চুল ছোট করে কেটে দেওয়া হয়, সাদা পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়। একঘরে করে রাখা হয় আর সেখানেই যা পারবে রান্না করে খাবে সেটা অবশ্যই নিরামিষ হতে হবে। এগুলোর একটাই কারণ যে, বিধবা নারীর ইচ্ছাকে মেতে দেওয়া। তাঁর প্রতি যেন আর কেউ আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, সেটা আটকানো। কোনও রকম সম্পত্তির ভাগ যাতে না দিতে হয়, সেটাও অবশ্যই একটা কারণ। মোট কথা নারীর স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়।
তাই আমি মনে করি, সে তোমার ছোটবেলা থেকে টাটা-বিড়লার সঙ্গেই বিয়ে ঠিক হোক না কেন, নিজের দায়িত্ব নিজেকে নেওয়ার ক্ষমতা রাখতে হবে। নিজের খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে জানতে হবে।” অভিনেত্রীর এই কথা যেমন একাংশের কাছে প্রশংসিত হয়েছে, তেমন আবার কটাক্ষও কম আসেনি কিন্তু! এদিন একজন সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, “কথাগুলো খুব সত্য, খুব বাস্তব। কিন্তু আজকের দিনেও এমন কিছু বাবা মা আছেন, যারা নিজের মেয়েকে, আত্মনির্ভর হতে দিতে চান না।”
আরও পড়ুনঃ গান আছে, কাজ নেই! ফেডরেশন-পরিচালক বিবাদের জেরে কর্মহীন বাংলার প্রতিভাশালী অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য ! শুরু করতে চলেছেন জীবনের এক নতুন অধ্যায়
অন্যজন লিখেছেন, “আজকাল আর এইসব হয় নাকি। একটু বাইরে বেরিয়ে দেখুন। আর মেয়েরা সুধু ট্রেন প্লেন ছাড়াও প্রয়োজনে টোটো, ভ্যান রিক্সা ট্যাক্সি চালাচ্ছে। ট্রেনে হকারি, ফুচকা, সবজি মাছ বিক্রি করছে। বরং আপনি নারী সুরক্ষা নিয়ে বলুন।” কেউ লিখেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে দেবলীনা উল্টোপাল্টা বকছে। নারী এবং পুরুষ উভয়ের সবদিক থেকে স্বাধীনতা থাকা উচিত কখনোই নারীর বা পুরুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার নয় দুই জনেরই থাকতে হবে তবে বর্তমান যুগে সব কথা বলছে এগুলো অন্তত ৫০ বছর আগেকার কথা।”






