গান আছে, কাজ নেই! ফেডরেশন-পরিচালক বিবাদের জেরে কর্মহীন বাংলার প্রতিভাশালী অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য ! শুরু করতে চলেছেন জীবনের এক নতুন অধ্যায়

এক সময় একের পর এক সফল ছবিতে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ২০১৯ সালে সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, অঞ্জন দত্ত থেকে বিরসা দাশগুপ্ত— প্রায় সকলের প্রিয় অভিনেতা ছিলেন তিনি। তারপর পরিচালনায় পদার্পণ— ওয়েব সিরিজ মন্দার থেকে বল্লভপুরের রূপকথা, দুই দিকেই সমান সাফল্য। এমনকি বলিউডেও পা রেখেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করে। কিন্তু ২০২৫-এ এসে ছবিটা যেন একেবারে পাল্টে গেল। হাতে এখন কাজ নেই বললেই চলে। সারা বছরে মাত্র দু’টি ছবি— তার মধ্যেও একটিই বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছে।

শোনা যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রির কিছু বিরোধ ও ফেডারেশন-পরিচালক বিবাদের জেরেই কাজ কমেছে তাঁর। অনির্বাণ অবশ্য থেমে থাকেননি। গানের দলে মন দিয়েছেন, লিখেছেন তীক্ষ্ণ গানের কথা— “এসব গান-বাজনা ছাড়, চল প্রোমোটারি করি…”। তাঁর গলায় যেমন প্রতিবাদের সুর, তেমনই ব্যঙ্গের ছোঁয়া। তবে অনির্বাণের এই পথ চলা সহজ নয়। নানা জায়গায় অনুষ্ঠান থেকেও বাদ পড়েছেন বলে জানা যায়। তবু তিনি বিশ্বাস করেন— “কাজ না থাকলেও গান থেকে যায়।”

ফেডারেশনের সঙ্গে জটিলতা এখনও মেটেনি। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় যেমন বলেছেন, “একজন শিল্পীকে বেঁধে রাখা যায় না। অনির্বাণদা যেখানে যাবেন, সেখানেই শ্রেষ্ঠ থাকবেন।” সহ-অভিনেত্রী সোহিনী সরকারও পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে কেউ কেউ বলছেন, অনির্বাণ নিজের অবস্থানে অনড়— আপস নয়, নীতিই শেষ কথা।

তবে অনির্বাণের জীবন কখনও কেবল আলো বা বিতর্কে সীমাবদ্ধ নয়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এই অভিনেতা বরাবরই নাটকের মানুষ— তাঁর চিন্তায়, কথায়, সুরে বারবার ফিরে আসে মঞ্চের সেই জগৎ। একসময় বলেছিলেন, “নাটক শেষ হওয়ার আগে স্টেজ ছাড়বেন না।” হয়তো আজও সেই মঞ্চেই তিনি দাঁড়িয়ে আছেন— একটু থেমে, একটু ভেবে, আবারও ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ “দিনের শেষে আমি শুধুই একজন অভিনেত্রী, সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম…”— মাঝপথে ছেড়েছিলেন ‘গাঁটছড়া’, এতদিন বাদে ছোটপর্দায় ফিরতেই কারণ জানিয়ে সত্যি ফাঁস শোলাঙ্কির! কার জন্য বাধ্য হয়ে ছোটপর্দা ছেড়েছিলেন তিনি?

এই মুহূর্তে অনির্বাণের হাতে বড় প্রযোজনার কাজ না থাকলেও তাঁর গান, তাঁর লেখা, আর তাঁর ভক্তরা এখনো পাশে আছেন। বিতর্কের কুয়াশা কাটিয়ে তিনি আবারও আলোয় ফিরবেন— এটাই বিশ্বাস করেন তাঁর অনুরাগীরা। কারণ, প্রতিভাকে থামানো যায় না, শুধু অপেক্ষা করতে হয় পরের দৃশ্য ওঠার।