“স্ত্রী বাজার করছে আর স্বামী ঘরে বসে খবরের কাগজ পড়ছে…থেকে ঘৃ’ণ্য দৃশ্য কিছু হয় না!” “যে পুরুষরা সংসারের কাজে হাত লাগান না, বঞ্চিত হচ্ছেন পরম আনন্দ থেকে!” পুরুষতান্ত্রিক অভ্যাসকে তুলোধোনা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের! রোজকার জীবনে দাপট নয়, সুখ খুঁজে পাওয়ার সূত্র বললেন পরিচালক!

টলিউডে ছবির মাধ্যমেই হোক বা নিজের ভাষা, স্বচ্ছন্দ ভঙ্গিতে মতামত রাখতে পারেন পরিচালক ‘কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়’ (Kaushik Ganguly)। এদিনও যেন তার ব্যতিক্রম হয়নি। বহু বছর ধরে চলচ্চিত্রে সাফল্য পেলেও, তিনি ব্যক্তিগত জীবনের সাফল্য এবং সমীকরণের প্রসঙ্গে আরও বেশি সরল ভাবে ব্যাখ্যা করলেন এদিন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ব্যস্ততার ফাঁকে নিজের ভাবনা ভাগ করতে গিয়ে সমাজে দেখা পুরনো অভ্যাসগুলিকেই প্রশ্নের মুখে তুললেন তিনি! কিন্তু কী এমন বললেন তিনি?

প্রসঙ্গত, কলেজের সেই পুরোনো পরিচয় আজ পরিণত হয়েছে শক্ত ভরসায়। চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Churni Ganguly) সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈবাহিক পথচলা এখন টলিউডে সফল দাম্পত্যের অন্যতম উদাহরণ হিসেবেই দেখা হয়। একজন বাংলা সাহিত্যের ছাত্র আর অন্যজন ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী, সেখান থেকেই শুরু হওয়া বন্ধুত্ব যে এত দূর গড়াবে, তা হয়তো তখন কেউই ভাবেননি। এখন তাঁদের সম্পর্ক শুধু ব্যক্তিজীবনেই নয় বরং কাজের ক্ষেত্রেও একে অপরকে সম্পূর্ণ করে রোজ। তবে, পরিচালকের কথায় এদিন ছিল সমাজের প্রচলিত এক দৃশ্য, যা নিয়ে তাঁর স্পষ্ট আপত্তি।

তিনি অকপটে বললেন, “স্ত্রী বাজার করে ব্যাগ নিয়ে বাড়িতে ফিরছে আর স্বামী বসে বসে খবরের কাগজ পড়ে পৃথিবী উদ্ধার করছে, এর থেকে ঘৃ’ণ্য দৃশ্য আর কিছু হয় না!” সমান অধিকারের তর্ক না তুলেই তিনি জানালেন, ঘরের পরিশ্রমকে অবহেলা করার মানসিকতা এখনও বদলানো দরকার। তাঁর কথায়, “স্ত্রী সারাদিন ঘর সামলাচ্ছেন, রান্না করছেন আর স্বামী বলছে একটা চা দাও, একটা কফি দাও! কেন, কারণ তিনি রোজগার করেন! কিন্তু অফিসে তো গিয়ে আড্ডা মারে অর্ধেক সময়।

বাড়িতে এসে এমন একটা ভাব করে যেন মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে যা চাপ ছিল। আমি বলছি কিচ্ছু ছিল না হয়তো চাপ, উল্টে সারাক্ষণ হয়তো খেলা দেখে কাটিয়েছে অফিসে।” পরিচালকের পর্যবেক্ষণ শুধু সমালোচনাতেই থেমে থাকেনি, তিনি পরিবর্তনের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন! তাঁর মতে, “যেমন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ছিল, সেটা মরে এসেছে আস্তে আস্তে। এখন পুরুষদের দাপটটা কমে গেছে, ভয়ে যে রাগ দেখলে নারী ত্যাগ করবে তাঁকে। ফলে এইসব ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে। তবে বুদ্ধিমান পুরুষ যারা, তারা বুঝে গেছে কি করে ভারসাম্য রাখতে হয়।”

আরও পড়ুনঃ “এখন সব আগেই হয়ে যায়, আর কিছু বাকি থাকে না…বিয়ের পর দুটো আত্মা ও শরী’র যেভাবে কাছাকাছি আসে, সেটা আলাদা অনুভূতি!” বিয়ের আগে মিল’নের প্রবণতায় কী বদলাচ্ছে সম্পর্কের সংজ্ঞা, আজকের যুবসমাজকে প্রশ্ন করলেন মমতা শঙ্কর!

তিনি মনে করেন, সম্পর্কের ভিত টিকে থাকে বোঝাপড়া ও দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই। শেষে তিনি এমন এক অনুভূতির কথা বললেন, যা অনেকেই হয়তো ভাবলেও উচ্চারণ করেন না। তাঁর ভাষায়, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলছি সমান অধিকারের কথা তুলতেই হবে না। সোজা কথায় যে পুরুষরা সংসারের কাজে হাত লাগান না, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন পরম আনন্দ থেকে। নিজের হাতে যে অন্যকে রান্না করে খাওয়াচ্ছে এবং তারা ভালো বলছে, এটার অন্যরকম ভালোলাগা আছে। সংসারের প্রাত্যহিক কাজে যদি নারী ও পুরুষ উভয়েই কোনও সুখ খুঁজে না পেয়ে, তবে পৃথিবীতে কোথাও পাবে না।”