মায়ের সেট-রুটিনেই ভরসা মেয়ের! ইন্ডাস্ট্রির আলোচনায় প্রশ্ন, কেন সেটে দিতিপ্রিয়ার পাশে সবসময় থাকেন তাঁর মা? অবশেষে কারণ জানিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী!

টেলিপাড়ায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত অভিনেত্রী হচ্ছেন ‘দিতিপ্রিয়া রায়’ (Ditipriya রয়)। সম্প্রতি জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) ধারাবাহিক থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন, আর তাতেই সমাজ মাধ্যমে শুরু হয় নতুন করে নানান গুঞ্জন। দর্শকদের একাংশ থেকে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত, এত জনপ্রিয় ধারাবাহিকের অংশ হওয়া সত্বেও সামান্য কিছু মতবিরোধের থেকে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তিনি আর্টিস্ট ফোরামকে ইমেল পাঠিয়ে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, তিনি আর করতে পারবেন না চরিত্রটা।

আর্টিস্ট ফোরামও পরবর্তীতে বিবৃতি প্রকাশ করে জানায় তাঁর বিদায়ের খবর এবং সেখানে বলা হয়, তাঁকে চাপ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাঁর সিদ্ধান্তের দ্রুততা যত না অবাক করেছে, তার থেকেও বেশি আলোচনায় এসেছে এই সিদ্ধান্তের পেছনের সম্ভাব্য কারণগুলো। কারও মতে ধারাবাহিক শুরু থেকেই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে, সহ-অভিনেতা জিতু কমলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ টানটান ছিল। যদিও দিতিপ্রিয়া ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে সাধারণত মুখ খোলেন না, তাই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে, কয়েক মাস আগে জিতুর একটি মন্তব্য করেছিলেন।

যেটাকে এখন দিতিপ্রিয়া ধারাবাহিক ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাব্য কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। জিতু বলেছিলেন, তিনি নাকি দিতিপ্রিয়ার মাকে ভয় পান! সেটা নিয়েও তখন হাসাহাসি হয়েছিল, কিন্তু সেই হালকা মন্তব্য এখন আবার অনেকে নতুন করে টেনে আনছেন অনেকেই। ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের এইসব ব্যাখ্যা-ব্যাখ্যান উত্তাপ বাড়ালেও, দিতিপ্রিয়া নিজের দিকটি যথেষ্ট সংযতভাবে সামলেছেন। তবে তাঁর কেরিয়ারজুড়ে একটা জিনিস প্রায় সবাই লক্ষ্য করেছেন, শুটিং সেটে প্রায় সবসময়ই তাঁর মা উপস্থিত থাকেন। অনেকেই এটিকে তাঁর অভ্যাস বা নিরাপত্তার জায়গা ভেবে নানা মত দেন।

কিন্তু সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিতিপ্রিয়া সেই কারণটা নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর কথায়, তিনি স্বভাবগতভাবে দ্রুত রেগে যান এবং ব্যস্ত শুটিংয়ের চাপ সামলাতে অনেক সময় কষ্ট হয়। কোন পরিস্থিতিতে মাথা গরম হয়ে যাবে তিনি নিজেও আগে থেকে ঠিক বুঝে ওঠেন না। তাই তাঁর মতে, মায়ের উপস্থিতি তাঁকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে আর সেটে কাজ করা সহজ হয়। এই স্বীকারোক্তিতেই স্পষ্ট যে, বাইরে থেকে শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত মনে হলেও ভেতরে ভেতরে আবেগ সামলানো তাঁর জন্যও কষ্টকর। চূড়ান্ত ব্যস্ততা, অনবরত শুটিং মিলিয়ে কখন কীভাবে প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত?

আরও পড়ুনঃ মাঝপথে ছেড়েছিলেন ‘বুলেট সরোজিনী’, দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ছোটপর্দায় ফিরছেন কাঞ্চনপত্নী শ্রীময়ী চট্টরাজ! সমালোচনা-বিতর্ক পেরিয়ে প্রত্যাবর্তন করছেন মুখ্য চরিত্রে? অভিনেত্রীকে দেখা যাবে কোন ধারাবাহিকে?

সেটাই পূর্বানুমান করা কঠিন বলেই তিনি মাকে অন্যতম ‘সাপোর্ট’ মনে করেন। প্রয়োজন হলে যিনি বোঝান, আবার কখনও শুধু পাশে থাকেন যাতে দিতিপ্রিয়ার কাজের গতি আর মানসিক ভারসাম্য ঠিক থাকে। শিল্পী হিসেবে তিনি ছোটবেলা থেকেই ক্যামেরার সামনে বড় হয়েছেন তিনি, আর সেই সময় থেকেই তাঁর মা তাঁর সময়-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে কাজের রুটিন পর্যন্ত সবকিছু দেখভাল করেন। দিতিপ্রিয়ার কথায়, মায়ের সিস্টেমটাই তাঁকে স্থির থাকতে সাহায্য করে। তাই সেটে তাঁর মায়ের উপস্থিতি যে শুধু অভ্যাস নয়, বরং তাঁর শক্তির উৎস।