যোগ্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হল মেজ কন্যা মৌবনীর! কিন্তু অন্য দুই মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন জাদুকর! কী বাধা রয়েছে বাকি দুই মেয়ের বিয়েতে?

গত বছর তিন কন্যার বিয়ের জন্য কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বেশ হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন জাদুকর পিসি সরকার জুনিয়র। বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট জানানো ছিল, ধর্ম বা জাতপাত নয়, মেয়েদের জন্য চাই উপযুক্ত, সুদর্শন এবং স্থায়ী কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত পাত্র। সেই খোঁজের মধ্যেই ৩০ নভেম্বর বিয়ে হয়ে গেল মেজ মেয়ে মৌবনী সরকারের। তবে বড় মেয়ে মানেকা এবং ছোট মেয়ে মুমতাজের জন্য এখনও চলছে সুপাত্রের অনুসন্ধান। আর সেই খোঁজেই নাকি সমাজের কিছু বাস্তব চিত্র তাঁকে অবাক করে দিয়েছে।

সরকার পরিবার বরাবরই জাতপাতের বাইরে দাঁড়িয়ে সম্পর্ক বেছে নিতে চায়। মানেকা এবং মুমতাজের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে পিসি সরকার এবং তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী বেশ কিছু আগ্রহী পরিবার পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু শেষমেশ দেখা যাচ্ছে অনেকেই এখনও ধর্ম এবং জাতকে গুরুত্ব দেন। এতে বিস্মিত শিল্পী বলেন, শিক্ষিত হওয়ার পরও যদি মানুষ এমন পুরনো ধারণা ছাড়তে না পারেন, তাহলে সমাজের উন্নতি কীভাবে হবে। তিনি জানান, তাঁর নিজের বাবাও একই সমস্যার মুখে পড়েছিলেন, কারণ ‘সরকার’ পদবি নাকি অনেকের চোখে নিচু বলে মনে হতো।

মেয়েদের জন্য পাত্র বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়েও পরিবারটি খুবই যত্নশীল। প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন করেন জয়শ্রী সরকার। তারপর মেয়েদের মতামত নেওয়া হয় এবং শেষ সিদ্ধান্ত নেন বাবা। মৌবনীর হবু স্বামীর সঙ্গে আগে কিছু সময় কাটানোর পরামর্শও দিয়েছিলেন তিনি, যাতে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং বোঝাপড়া তৈরি হয়। সরকার মনে করেন, বিয়েতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরস্পরের প্রতি সচেতনতা এবং সম্মান।

ছোট মেয়ে মুমতাজের ক্ষেত্রে উচ্চতাই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেবীর মতো লম্বা হওয়ায় অনেক পাত্রই মানানসই হচ্ছেন না। উপরন্তু মুমতাজ খুবই স্পষ্টবাদী, তাই সঙ্গীকে একইরকম হতে হবে। অন্যদিকে বড় মেয়ে মানেকা যুক্তিবাদী হলেও ঈশ্বরবিশ্বাসী, আর তাঁর বৌদ্ধাঙ্ক বেশ বেশি। পরিবার এমন একজন মানুষ খুঁজছেন যিনি মানসিকভাবে পরিণত এবং জীবনের প্রতি সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন।

আরও পড়ুনঃ ধর্মেন্দ্রের বিপুল সম্পত্তি পেলেন না দেওলরা! বঞ্চিত খোদ ছেলেরাই! কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি পেলেন এই সমস্ত মানুষরা!

সামাজিক কুসংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পিসি সরকার জুনিয়র। তাঁর মতে, যেদিন পাত্রপাত্রী বিজ্ঞাপনে জাত বা বর্ণের উল্লেখ বন্ধ হবে, সেদিনই বোঝা যাবে সমাজ সত্যিই বদলেছে। আপাতত তাঁরা খুশি যে মৌবনীর ভালো সঙ্গী মিলেছে, আর বাকি দুই মেয়ের জন্যও একইরকম সুপাত্রের অপেক্ষায় রয়েছেন। সুযোগ পেলেই আবার বাজবে সানাই সরকার পরিবারের আঙিনায়।