রঙিন পার্টি, বাড়তে থাকা উত্তেজনা আর তারপরেই প্রযোজকের বাড়ির বাথরুমে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার হন অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত! কী এমন ঘটেছিল সেই রাতে?

আজকে টলিউডে ‘স্বস্তিকা দত্ত’কে (Swastika Dutta) দেখলে বোঝা যায়, সময় কীভাবে মানুষকে বদলে দেয়। আজ তিনি পরিণত, জনপ্রিয় এবং ব্যস্ত এক অভিনেত্রী, কিন্তু এই জায়গায় পৌঁছনোর পথ একেবারে মসৃণ ছিল না। বড় হওয়া মুম্বাইয়ে, মা পাঞ্জাবি আর বাবা বাঙালি হওয়াতে দুই সাংস্কৃতিক পরিবেশ মিশে তাঁর শৈশব গড়ে উঠলেও অভিনয়ের জগতে আসার পরিকল্পনা তখনও ছিল না। বরং দুর্গাপুজোর এক ছোট্ট প্রতিযোগিতা থেকেই যাত্রা শুরু আর সেখান থেকেই খুলে যায় বড়পর্দার দরজা।

যে অভিনয়জীবনের এত মসৃণ শুরু, সেখানে প্রথম বড় আঘাতও আসে খুব তাড়াতাড়ি। রাতারাতি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠার উত্তেজনা সামলাতে তিনি তখনও প্রস্তুত নন। প্রথম ছবির সাফল্য উদযাপনে প্রযোজকের বাড়িতে ছিল বড় আয়োজন। নাচগান, আড্ডা আর রঙিন পানীয়ে ভরপুর সেই রাতেই ঘটে যায় বিপত্তি! বয়স কম, অভিজ্ঞতাও কম, ফলে উত্তেজনার মাথায় মাত্রাতিরিক্ত পানীয় সেবনের পর অজ্ঞান হয়ে পড়েন প্রযোজকের বাথরুমেই! ভোরবেলা সারা শরীরে যন্ত্রণা আর ভাঙা কমোড দেখে পুরো ঘটনার আন্দাজ করতে পারেন।

সেদিন লজ্জার ভার মুখ লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন এই ঘটনা তাঁকে যেমন নাড়িয়ে দিয়েছিল, তেমনই শিখিয়েছিল কীভাবে আলোঘেরা দুনিয়ার চাপ সামলাতে হয়। ভাগ্যক্রমে তাঁর প্রথম ছবি এতটাই সফল হয় যে আজও সেই ছবির গান পুজোর প্যান্ডেলে বাজে। ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ ছবির সাফল্য তাঁকে টলিউডের দরজায় দৃঢ়ভাবে দাঁড় করায়। তারপর একে একে আরও ছবি আর ধীরে ধীরে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে কাজের মাধ্যমে। জনপ্রিয়তা বাড়লেও তিনি নিজেকে গুটিয়ে রাখতে শিখেছিলেন সেই অপমানের পর থেকেই।

বড়পর্দার পরে তিনি দুধারে জৌলুস ছড়ালেন ছোটপর্দায়ও। স্টার জলসার ‘ভোজগোবিন্দ’-তে ডালির চরিত্রে তাঁর সহজ-সরল অভিনয় মন কেড়ে নেয় দর্শকের। সেই ধারাবাহিকের সাফল্য তাঁকে নিয়ে আসে একাধিক ধারাবাহিক, অন্য চরিত্রে– তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। মাধ্যম বদলে ওয়েব সিরিজেও তিনি প্রশংসা পেয়েছেন, আবার বড়পর্দায় ‘ফাটাফাটি’র মতো ছবিতে ফিরে নিজের জায়গা আরও মজবুত করেছেন। এত পথ পেরিয়ে এখন তিনি প্রায় আট বছর পর ছোটপর্দায় ‘প্রফেসর বিদ্যা ব্যানার্জি’ হয়ে ফিরেছেন।

আরও পড়ুনঃ ‘ধ’র্ষণ এ যুগেও আছে, রামের সময়েও ছিল, সীতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল রাবণ, ধর্ষ’ণ করতে না পারলেও ওকে অচ্ছুৎ করে দিয়েছিল!’ অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর ধ’র্ষণ মন্তব্যে ফের তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই পুরনো স্বস্তিকা আর নেই! এখন তিনি অনেক বেশি স্থির, পরিণত ও সংযত। প্রেমে আঘাত পেয়েছেন বহুবার, আবার সেই অভিজ্ঞতাই তাঁকে আরও শক্ত করেছে। আজ তিনি যেমন জনপ্রিয়তার চাপ সহজে সামলান, তেমনই নিজের মতো করে হাসতেও জানেন। সেদিনের লজ্জায় থমকে যাওয়া তরুণী আজ টলিউডের এক প্রতিষ্ঠিত নাম! নিজের ভুল থেকে শেখাই যাঁর বড় সম্পদ। সামনে আরও জীবন, অভিনয় এবং চরিত্র বাকি। আমাদের আশা, তিনি এভাবেই মাথা উচু করে এগিয়ে যাবেন!