ধ’র্ষণ এ যুগেও আছে, রামের সময়েও ছিল, সীতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল রাবণ, ধর্ষ’ণ করতে না পারলেও ওকে অচ্ছুৎ করে দিয়েছিল! অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর ধ’র্ষণ মন্তব্যে ফের তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

টলিউড অভিনেতা ও তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। কয়েক দিন আগেই ধর্ষণ নিয়ে তাঁর বক্তব্য নিয়ে চর্চার ঝড় ওঠে। তিনি বলেছিলেন, যুগ যুগ ধরে যে অপরাধ চলছে তার কোনও স্থায়ী সমাধান নেই। নতুন করে চলচ্চিত্র প্রচারের সময় তাঁকে যখন সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ তোলা হয়, তিনি একটুও পিছু হাঁটলেন না। বরং সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি সত্য কথাই বলেছেন এবং সত্য থেকে সরে যাওয়ার কোনও কারণ তিনি দেখছেন না।

সাক্ষাৎকারে চিরঞ্জিত বলেন যে ধর্ষণ আজকের সমস্যা নয়, ইতিহাসেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে তিনি রামায়ণের গল্প টেনে আনেন এবং বলেন, সীতাকে রাবণ অপহরণ করেছিল, আর সেই ঘটনাকে সমাজ মেনে নিয়েছিল। তাঁর দাবি, এই ধরনের ঘটনা প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে এবং সমাজের সিস্টেমের মধ্যেই কোথাও এক ধরনের ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। ফলে চোখে দেখা সত্যিটাকে অস্বীকার করতে তিনি রাজি নন।

এই বক্তব্যের পাশাপাশি অভিনেতার আরেক মন্তব্যও সমালোচনার কেন্দ্রে। তিনি জানান, মেয়েদের পোশাক ধর্ষণের একটি ‘ফ্যাক্টর’। তাঁর মতে, অতিরিক্ত ছোট পোশাক বিপদের কারণ হতে পারে। নিজের মেয়েকে তিনি এই ধরনের পোশাক পরতে দিতেন না বলেও জানান। তবে যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে অনেক ক্ষেত্রেই পোশাক ছোট না থাকলেও একই অপরাধ ঘটে, তখন তিনি বলেন, পোশাক একমাত্র কারণ নয়, তবে এটিও একটি বিষয় যা খেয়াল রাখা উচিত।

চিরঞ্জিতের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ বলেন, তাঁর কথার কিছু অংশ বাস্তবের সঙ্গে মিললেও পোশাক নিয়ে মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। অনেকে মনে করেন, ক্ষমতাবান একজন মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং সমাজে ভুল বার্তা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পোশাক কোনও অপরাধের কারণ নয় এবং এ ধরনের মন্তব্য অপরাধীকে পরোক্ষে প্রশ্রয় দেয়।

আরও পড়ুনঃ যোগ্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হল মেজ কন্যা মৌবনীর! কিন্তু অন্য দুই মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন জাদুকর! কী বাধা রয়েছে বাকি দুই মেয়ের বিয়েতে?

নেটিজেনদের বড় অংশই চিরঞ্জিতের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। অনেকে মনে করেন, জনপ্রিয় অভিনেতা হয়েও তিনি নারীর প্রতি সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে আরও পরিণত মন্তব্য করতে পারতেন। কারও মতে, এই ধরনের মন্তব্য সমাজের মানসিকতা বদলে দেওয়ার পরিবর্তে আরও সংকীর্ণ করে তোলে। বিতর্ক যদিও থামেনি, বরং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং অনেকে তাঁর বক্তব্যের জবাব চাইছেন।