ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক অনন্য ধারক অজয় চক্রবর্তী। সঙ্গীতজগতের প্রতি তাঁর দীর্ঘদিনের সাধনা, অভিজ্ঞতা ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গি সর্বদাই শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করে। সম্প্রতি শহরের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আধুনিক সঙ্গীত, সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া গান এবং আজকের সঙ্গীতচেতনা নিয়ে সরব হলেন এই বরেণ্য শিল্পী।
অনুষ্ঠানে অজয়বাবুকে প্রশ্ন করা হয়, সমাজমাধ্যমের দাপট এবং ভাইরাল গানবাজনার যুগে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কি কোনও ভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে? তাঁর সরল অথচ দৃঢ় উত্তর ছিল, তিনি এখন আর গান করেন না, কারণ বর্তমান প্রবণতা যেন সব ধরনের সঙ্গীতকে একসঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। তাঁর মতে, এই মিশ্রণের ফলে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মৌলিকত্ব ও অভিনবত্ব বোঝানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই সবার সঙ্গে এক স্রোতে না গিয়েও অন্য ধরনের গানকে তিনি সমান শ্রদ্ধা জানান।
কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলে মতো কিংবদন্তিদের প্রসঙ্গও। অজয় চক্রবর্তী জানান, এই দুই শিল্পী বহুবারই বলেছেন যে রাগসঙ্গীত তাঁদের শিল্পীজীবনের ভিত। লতা মঙ্গেশকর নিজে তাঁর মেয়েকে শেখানোর ধরন দেখার জন্য আবার আসার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছিলেন। অজয়বাবুর মতে, এটি তাঁর ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গভীরতা এবং ঐতিহ্যের জয়।
বর্তমান সময়ে ভাইরাল হওয়া শিল্পীদের প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি উদাহরণ টানেন রানাঘাটের রানু মণ্ডল ও কাঁচা বাদাম-খ্যাত ভুবন বাদ্যকরের। সমাজমাধ্যমের প্রবল সংযোগে রাতারাতি জনপ্রিয় হওয়া এই গানগুলিকে তিনি সময়ের বাস্তবতা হিসেবেই দেখেন। কিন্তু এই প্রবণতা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পথে প্রভাব ফেলেছে কি না, সেই প্রশ্নে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট।
আরও পড়ুনঃ “ফেসবুকে নিয়মিত অগ্রীম পর্ব পোস্ট মানুষ না, জন্তু-জানোয়ার আর ছোটলোকরা করে!” “এরা রক্তবীজ, একটা শেষ হলে অন্যটা জন্মায়!” ধারাবাহিকের পর্ব ফাঁস হওয়া নিয়ে অর্কপ্রভর বি’স্ফো’রক মন্তব্য! উত্তাল নেটপাড়া
শেষ পর্যন্ত অজয় চক্রবর্তীর মন্তব্যে ফুটে ওঠে এক গভীর জীবনদর্শন। তাঁর কথায়, কেউ দুধ বেচে মদ খায়, কেউ মদ বেচে দুধ খায়। সঙ্গীতও তেমনই ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। যে মানুষ যেটা ভালোবাসবে, সেটাই করবে। আর সেই স্বাধীনতার মাঝেই সঙ্গীতের প্রকৃত সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায়।






