স্টার জলসার সাম্প্রতিক ধারাবাহিক ‘কম্পাস’-এর (Compass) সদস্যরা এখনো সাফল্যের রেশে ভাসছেন। কয়েক মাস আগে শুরু হলেও নবাগত পর্ণা চক্রবর্তী (Parna Chakraborty) ও অর্কপ্রভ রায়ের (Arkaprovo Roy) অনস্ক্রিন রসায়ন দর্শকের নজর কাড়তে দেরি হয়নি। ১০০ পর্বের মাইলফলকে পৌঁছনোর পর স্বাভাবিকভাবেই পুরো টিমের মধ্যে খুশির হাওয়া থাকার কথা, কিন্তু অর্কপ্রভের কথাবার্তায় ঠিক উল্টো সুর শোনা যাচ্ছে! একটা তীব্র ক্ষোভ, যা তিনি আর চেপে রাখতে পারছেন না। কিন্তু কী এমন হয়েছে তাঁর সঙ্গে?
প্রসঙ্গত, অভিনেতা হিসেবে অর্কপ্রভর পথচলা খুব দীর্ঘ নয়, কিন্তু অভিজ্ঞতা যথেষ্ট ঘন। স্টার জলসার ‘তোমাদের রাণী’-তে প্রথম দেখা মিলতেই দর্শক তাঁকে আপন করে নিয়েছিল। বিশেষ করে অভিকা মালাকারের সঙ্গে তাঁর জুটি বেশ জনপ্রিয় হয়। সেই জনপ্রিয়তা তাকে এরপর ‘দুই শালিক’-এ নায়ক হওয়ার সুযোগ দেয়। সেখানে বস্তির ছেলের চরিত্রে অভিনয় করে আরও ভালোবাসা পান তিনি। সেই ধারাবাহিক শেষ হতে না হতেই, ‘কম্পাস’-এর নায়ক হওয়ার সুযোগ। তারপরেই তাঁর সামনে আসে টেলিভিশন জগতের প্রতিযোগিতা আর চাপের কঠিন বাস্তব!
এই বাস্তবতার বড় অংশই জুড়ে আছে টিআরপির চাপ এবং স্পনসরশিপের হিসেব। নিয়মিত পর্ব ফাঁস হয়ে গেলে সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। মানুষ যখন টিভিতে সম্প্রচারের আগেই সমাজ মাধ্যমে ধারাবাহিকের পুরো পর্ব দেখে ফেলে, তখন ক্ষতি হয় নির্মাতা ও শিল্পী দু’পক্ষেরই। অর্কপ্রভ তাই সমাজ মাধ্যমে ধারাবাহিকের চুরি করা ক্লিপ আপলোডকারীদের নিয়ে নিজের ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রকাশ্যেই! অর্কপ্রভ বলেন, “ফেসবুকে যারা প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকের ক্লিপ বা পর্ব পোস্ট করেন, তারা মানুষ না। জন্তু জানোয়ার, ছোটলোক তারা! আমি এদের নাম দিয়েছি রক্তবীজ।
একটাকে যদি রিপোর্ট করি, অন্যটা ঠিক তৈরি হয়ে যায়! আমাদের ইনকাম এমনিতেই কমে এসেছে, এবার চ্যানেলও জানিয়ে দিয়েছে ২০২৬ এর মধ্যে সব সিরিয়াল শেষ করতে হবে।” তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, টেলিভিশনে প্রচার হওয়া সিরিয়ালের আয় আসে মূলত বিজ্ঞাপন থেকে। সিনেমার মতো টিকিট বা ওয়েব সিরিজের মতো সাবস্ক্রিপশন নেই, ফলে অ্যাড না দেখলে আয়ের রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। অর্কপ্রভের দাবি, এই অননুমোদিত পোস্টিংয়ের কারণে তাদের ইনকাম কমে গেছে। তাই বিষয়টি তাঁর কাছে শুধুই ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়, বরং পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা সতর্কবার্তা।
অর্কপ্রভর নিজের ভাষায়, “ছোটপর্দায় তো আর সিনেমা হলের মতো টিকিটের ব্যবস্থা নেই বা ওয়েব সিরিজের মতো সাবস্ক্রিপশনেরও সুবিধা নেই। কাজেই আমরা টাকাটা পাই শুধুমাত্র অ্যাড থেকে, এবার যদি কেউ অ্যাডই না দেখেন তাহলে তো আর কষ্ট করে কাজ করে লাভ নেই। বরং আপনার সমাজ মাধ্যমে রিলেই আমাদের দেখুন। আমার কোনও সমস্যা নেই, এরপর আর ধারাবাহিক করব না, মুম্বাইতে চলে গিয়ে আগে যা করতাম তাই করব।” তবে তিনি একইসঙ্গে এটাও স্বীকার করেছেন যে পুরোনো কিছু খুঁজে না পাওয়া ছবি তিনি নিজেও টেলিগ্রাম থেকে ডাউনলোড করেন।
আরও পড়ুনঃ “ছোটপর্দা ছাড়লাম ওই একজন প্রোডিউসারের জন্যই…” একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয়, হঠাৎ করেই টেলিভিশন ছেড়ে যাওয়ার আসল কারণ জানালেন সৌরভ দাস! এই সিদ্ধান্তের পেছনে কে, ঠিক কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?
কিন্তু নতুন ধারাবাহিকের পর্ব ফাঁস হওয়াকে তিনি ‘চুরি’ বলেই মনে করেন। তাঁর কথায়, “এখন কিছু কিছু পুরোনো ছবি আছে যেগুলো আর পাওয়াই যায় না, সেগুলো আমিও ডাউনলোড করি টেলিগ্রাম থেকে। কিন্তু ধারাবাহিকের অগ্রীম পর্ব চুরিটা মানা যায় না! আমার চোখে পড়লেই ওইসব পেজকে বন্ধ করাই, কিন্তু মনে রাখবেন আপনার রক্তবীজ হলে, আমি কিন্তু রক্তবীজ কিলার!” অর্কপ্রভ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে অননুমোদিত কনটেন্ট পোস্টকারীদের বিরুদ্ধে তিনি আগের তুলনায় আরও কঠোর হবেন এবং অন্য ব্যাবস্থা নিয়েও দ্বিধা করবেন না।






