‘এটা কি ব্রিটিশ শাসন চলছে নাকি, কীসের বিপ্লবী?’ ‘সবটা যদি আগেই জানত, এতদিন আবেগের নামে স্বতন্ত্র কি নাটক করছিল!’ বিপ্লবী স্বামীকে নিয়ে পার্বতীর প্রত্যাবর্তন, ‘চিরসখা’য় অবাস্তব গল্পের মোড় নিয়ে বিরক্ত দর্শক!

স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’র (Chiroshokha) সাম্প্রতিক মোড় দর্শকদের বেশ চমকে দিয়েছে। কিছুদিন আগেই পার্বতীর আচরণ ঘিরে ক্রমশ সন্দেহ বাড়ছিল, বিশেষ করে যখন তাকে দেখা যায় নিজে নিজেই সিঁদুর পরে স্বতন্ত্রকে দখলে রাখার চেষ্টা করতে। ছোটবেলার পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে যে নাটক সে সাজিয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত আর চাপা থাকেনি। স্বতন্ত্র যখন কমলিনীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জানায়, তখনই পার্বতীর তৈরি করা গল্পটা ভেঙে পড়ে। এই মোড়টাই এখন গল্পকে নতুন আলোচনায় নিয়ে এসেছে।

কিছুদিন আগে পার্বতীর চিঠি রেখে হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়াটা প্রথমে যেন এক অদ্ভুত নাটকীয়তা তৈরি করে। কিন্তু আশ্চর্যভাবে স্বতন্ত্রকে খুব বেশি অবাক হতে দেখা যায় না। যেন আগেই সব জেনে রেখেছিলেন তিনি যে এমনটাই হবে। দর্শকদের অনেকেই বলছেন, চরিত্রের এই অংশটুকু বেশ কৃত্রিম মনে হয়েছে। কারণ যেভাবে চাপ দিয়ে পার্বতী স্বতন্ত্রকে নিজের প্রতি টেনে আনছিল, তার পরে এভাবে চিঠি ফেলে চলে যাওয়ার ঘটনাটা অনেকের চোখে একধরনের গোঁজামিল ছাড়া আর কিছু নয়।

এদিকে গল্প কিছুটা এগোতেই বর্তমান পর্বে দেখা গেল, স্বতন্ত্র নিজেই খুঁজে পার্বতীকে ফিরিয়ে আনছে, তাও আবার তার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে! পরক্ষণেই জানা যায়, অনিমেষ নাকি পার্বতীর কলেজজীবনের প্রেমিক। যে নাকি কোনও ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ বিপ্লবী দলের সঙ্গে যুক্ত বলে পার্বতীকে বিয়ে করতে পারেনি। তাই পার্বতী গ্রামের বাইরে আসার পথ খুঁজতেই স্বতন্ত্রকে বিয়ে করার নাটক সাজিয়েছিল। এই সত্যি জেনে অনেক দর্শক মাথায় হাত দিয়ে বসেছেন। এইটা যে কতটা বাস্তবতার বাইরে, সেটাই প্রশ্ন জাগাচ্ছে এখন।

আরও অবাক করা বিষয় হলো, স্বতন্ত্রের নাকি শুরু থেকেই বিষয়টা জানা ছিল! এতদিন ধরে তার দ্বিধা, রাগ ও মন খারাপ, সবই যেন নাটকের অংশ হয়ে গেল যখন জানা গেল সে-ই আবার পার্বতীকে তার স্বামীর কাছে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছে! এই পুরো ঘটনাকে দর্শকরা মেনে নিতে পারছেন না। কারণ চরিত্রগুলোর আবেগ, সিদ্ধান্ত আর আচরণ বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাচ্ছে না। বিশেষ করে পার্বতীর চরিত্রকে এত বড় মাত্রার নাটকীয়তা দিয়ে দেখানোই তাদের বিরক্তির মূল কারণ।

আরও পড়ুনঃ “এই তিরিশ বছর বুম্বা একা ইন্ডাস্ট্রি টানলে কি মিঠুন, ভিক্টর থেকে তাপস আর আমি পার্শ্ব অভিনেতা?” প্রসেনজিতের ‘ইন্ডাস্ট্রি’ তকমা ঘিরে চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর সরাসরি কটা’ক্ষ!

দর্শকদের প্রতিক্রিয়া এখন আরও সরব একটা কারণেই। আজকের দিনে ‘বিপ্লবী’ পরিচয়ে কেউ আন্ডারগ্রাউন্ড থাকে কীভাবে? ব্রিটিশ শাসন চলছে নাকি? এমন মন্তব্য এবং সমালোচনাই চলছে সমাজ মাধ্যমে। ধারাবাহিক বলে কিছুটা নাটকীয়তা থাকতেই পারে, সেটাও অনেকেই মানছেন। কিন্তু যখন গল্প এমন জায়গায় পৌঁছয় যেখানে যুক্তির খোঁজেই বেশি সময় চলে যায়, তখন বিরক্তি জমাট বাঁধে। ‘চিরসখা’র বর্তমান ট্র্যাক ঠিক সেই জায়গাতেই এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে গল্পের চেয়ে বাস্তবতার প্রশ্নই যেন বড় হয়ে উঠছে।

\