সঙ্গীত নির্মাতা পলাশ মুচ্ছল (Palash Muchhal) এবং ভারতীয় ক্রিকেটের তারকা স্মৃতি মান্ধানাকে (Smriti Mandhana) ঘিরে কয়েক সপ্তাহ ধরেই নানা জল্পনা চলছিল। মাঝপথে বিয়ে স্থগিত হওয়া, পরিবারের দুই সদস্যের হঠাৎ অসুস্থতা আবার সামাজিক মাধ্যমে নীরবতা, সব মিলিয়ে প্রশ্ন বেড়েই চলছিল। ঠিক কবে তাঁদের বিয়ে হবে, আদৌ হবে কি না এই অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও দু’জনের পরিবার মিলেই আগের মতো প্রাক-বিবাহের অনুষ্ঠান শুরু করেছিল। নতুন তারিখে বিয়ের আয়োজনের কথাও আলোচনায় ছিল। এমন সময় পলাশ নিজেই জানান যে তাঁর এবং স্মৃতির বিয়ের অনুষ্ঠান ৭ ডিসেম্বর, রবিবার বিকেলেই হওয়ার কথা।
ঘনিষ্ঠ মহল ধরে নিয়েছিল, অবশেষে জট কাটছে। কিন্তু সবকিছু বদলে যায় সেই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই! কয়েক সপ্তাহ ধরে দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষো বাড়ছিল ঠিকই, তবে কেউই আশা করেনি এত দ্রুত সবকিছু ভেঙে পড়বে। এর আগে স্মৃতির বাবার অসুস্থতা এবং পরে পলাশের শারীরিক সমস্যার কারণে অনুষ্ঠানের দিনেই পিছিয়ে গিয়েছিল বিয়ে। সেই সময় স্মৃতি হঠাৎ করে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে বিয়েবাড়ির সমস্ত ছবি ও ভিডিও মুছে দেন। এই আচরণ নিয়ে শুরু হয় নানারকম অনুমান।
সম্পর্ক ভাঙনের গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের পক্ষ থেকে অবশ্য প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। সব জল্পনার কেন্দ্রে থাকা স্মৃতিই অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন। রবিবার সকাল হতেই, নিজের সমাজ মাধ্যমে পাতায় একটি পোস্ট করে স্মৃতি জানিয়েছেন যে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঠিক এই কারণেই এখন তাঁর বক্তব্য জানানো জরুরি হয়ে উঠেছে। তিনি নিজে অত্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনকে গুরুত্ব দেন এবং সেটিকে ব্যক্তিগতই রাখতে চান। তবে একইসঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে বিয়ে ভেঙে গেছে।
আর এই অধ্যায় এখানেই শেষ করতে চান তিনি। স্মৃতির অনুরোধ, এই বিষয়টিকে আর টেনে না নিয়ে গিয়ে দুই পরিবারের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান জানানো হোক। সবাই যেন তাঁদের নিজের মতো করে সময় নিয়ে এই পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারে, এই সুযোগ দিতে চান তিনি। তিনি আরও বলেছেন, প্রত্যেকের জীবনে একটা না একটা উচ্চতর উদ্দেশ্য থাকে। তাঁর ক্ষেত্রে সেই পথ সবসময়ই দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামা, দেশকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপন করা। ভবিষ্যতেও ভারতের হয়ে খেলতে চান, দেশকে আরও বেশি ট্রফি জিতিয়ে যেতে চান, এটাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
শেষে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্মৃতি বলেছেন, ‘এগিয়ে যাওয়ার সময় এখন।’ স্মৃতির এই পোস্ট সামনে আসতেই স্পষ্ট যে যত আয়োজন, যত প্রস্তুতি সবই অতীত। পলাশের পরিবারের তরফে আগে বলা হয়েছিল, বিয়েটা পিছিয়ে গেলেও শীঘ্রই হয়ে যাবে। কিন্তু স্মৃতির লেখা পরিষ্কার জানিয়ে দিল, সম্পর্কের অধ্যায় শেষ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, পলাশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ঘুরছিল, সেগুলো নিয়ে এখনও কোনও পক্ষই সরাসরি কিছু বলেনি। তবে পরিস্থিতি যে শান্ত নয়, তা দু’জনের সমাজ মাধ্যমের আচরণ থেকেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।
আরও পড়ুনঃ ‘অঙ্কে সিলি মিসটেক হয়, এটাও তেমন…আপনারা বাবা-মা’র মতো’ সমালোচনায় ‘বিদ্যা ব্যানার্জি’র গোটা টিম! ব্ল্যাকবোর্ডে ‘নলেজ’ বানান ভুল ভাইরাল, ট্রোল সামলাতে লাইভে কান ধরে ক্ষমা চাইলেন স্বস্তিকা!
শেষ পর্যন্ত সেই অনিশ্চয়তার শেষ হল স্মৃতির নিজের কথাতেই। খেলোয়াড় জীবনের কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে থেকেও ব্যক্তিগত জীবনের এমন চাপে যে মনখারাপের ছাপ পড়েছে, তা তাঁর লেখাতেই বোঝা যাচ্ছে। তবুও সামনে এগোনোর প্রত্যয় তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সম্পর্ক ভাঙন যে যেকোনও মানুষের জীবনে কঠিন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটার হিসেবে নিজের লক্ষ্য আর দায়িত্বকেই তিনি প্রাধান্য দিচ্ছেন। ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা তিনি বরাবর জানিয়েছেন, তাই আমাদেরও উচিত তারই কঠিন সময় পাশে থাকার।






