বাংলা টেলিভিশনের দৃঢ় নারী চরিত্রে কথা বলতেই বর্তমানে প্রথমেই যে নামটি উঠে আসছে, সেটি হলো ‘প্রফেসর বিদ্যা ব্যানার্জি’ (Professor Bidya Banerjee)। চরিত্রটি যেভাবে শিক্ষার মূল্য, নারীর দৃঢ়তা এবং সামাজিক সচেতনতার কথা বারবার তুলে ধরছে, তা দর্শকদের একাংশ ভীষণভাবে প্রশংসা করছেন। কিন্তু এই প্রশংসার মাঝেই হঠাৎ করেই ছোট্ট একটি ভুল এমনভাবে ভাইরাল হয়ে গেছে, যা গোটা টিমকে বিব্রত অবস্থায় ফেলেছে। শিক্ষাকে কেন্দ্র করে তৈরি ধারাবাহিক, অথচ ব্ল্যাকবোর্ডেই সবচেয়ে জরুরি শব্দটির বানান ভুল! এখান থেকেই সমালোচনা, হাসাহাসি ও নানা রকম মিম ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
ঘটনাটা আসলে খুব সাধারণ। সম্প্রতি একটি পর্বে ক্লাসরুমের দৃশ্যে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা ছিল, “নলেজ ইজ দ্যা পাওয়ার”, কিন্তু ‘নলেজ’-এর ‘ডি’ বাদ পড়ে গিয়েছিল। দ্রুত এডিট করে ভুলটা ঢাকার চেষ্টা হলেও দর্শকদের চোখ এড়ায়নি। আর এখান থেকেই শুরু অনলাইন ট্রোলিং। কেউ মজা করে বললেন, “বায়োলজি পড়িয়ে তো ইঞ্জিনিয়ার বানাচ্ছেন, এদিকে নলেজ বানানও ঠিক লিখতে পারেন না!” আবার একজন মন্তব্য করেছে, “শিক্ষা নিয়ে ধারাবাহিক, এদিকে বানান ভুলটা বড্ড বেমানান!” এই ছোট্ট ভুলের জন্যই ধারাবাহিকটিকে বাস্তবতা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি অনেকে।
টিআরপিতে ভালো অবস্থানে থেকেও ধারাবাহিকটি নিয়ে যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, তা এড়াতে পারেননি অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্তও। তাই বাধ্য হয়েই তিনি ফেসবুক লাইভে এসে দর্শকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন। খুব স্বাভাবিক, পরিশ্রমের মাঝে একটা ছোট ভুল হতেই পারে সেই কথাই বোঝাতে গিয়ে তিনি বললেন, “ছোটবেলায় অঙ্ক করতে গিয়ে যেমন সিলি মিসটেক হতো, এটাও ঠিক তেমনই।” শিক্ষিকার চরিত্রে অভিনয় করছেন বলে এই ভুলকে তিনি নিজের ব্যক্তিগত দায় হিসেবেও নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ছাত্ররা যেমন ভুল করলে ক্ষমা চাইতে শেখে। তেমনই দর্শকরাও তাঁর শিক্ষক, তাই তাঁদের কাছেও ক্ষমা চাওয়া উচিত।
লাইভে স্বস্তিকার ব্যাখ্যা ছিল আরও মানবিক। তিনি জানালেন, একটা পর্ব শুট করতে তাদের প্রায় ১৪ ঘণ্টা লেগে যায়, প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় পুরো টিমকে। ফলে শুটিং চলাকালীন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এই বানান ভুলটি বেরিয়ে গেছে। পরে যখন টিমের নজরে আসে, ততক্ষণে দৃশ্যটি পুরোপুরি শ্যুট হয়ে গিয়েছে। এডিট করতে গিয়ে সমস্যাটার সমাধন করাটা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। তাই তিনি অনুরোধ করেন, একই ভুলের জন্য যেন আর কাউকে আক্রমণ না করা হয়। কারণ এটি ইচ্ছাকৃত নয়, একেবারেই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি।
আরও পড়ুনঃ আচমকাই গুরুতর অ’সুস্থ নচিকেতা! বুকে বসল দু’টি স্টেন্ট! এখন কেমন আছেন জনপ্রিয় গায়ক?
অবশ্য বিতর্কের মাঝেও দর্শকদের একাংশ ধারাবাহিকের মূল উদ্দেশ্যটাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষার মূল্য এবং নারীর আত্মবিশ্বাসের বার্তাকে জোর দেওয়া। তবে বাস্তবতার ঘাটতি, যেমন একই কলেজে ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার তৈরির সংলাপ কিংবা এই বানান ভুল যে দর্শকরা চোখ এড়িয়ে যেতে দেননি! গল্পের শক্ত দিকের সঙ্গে এসব ছোট ভুল মিলেমিশে কখনও হাসির, কখনও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। দেখার বিষয়, ট্রোলের চাপ পেরিয়ে ধারাবাহিকটি একইভাবে দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে পারে কি না। আর স্বস্তিকাও আগের মতোই দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারে কি না।






