এ বছরের দুর্গাপুজোতে যাঁরা প্রতিবাদের স্বর তুলেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)। পুজোর আগেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, যদি আরজি কর (RG Kar) হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনায় সুবিচার না মেলে, তবে তিনি দেবী দুর্গাকে বরণ করবেন না। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে তিনি এ বার সিঁদুর খেলায় অংশ নেননি। অপরাজিতা বলেন, “প্রতি বছর ঢাক বাজিয়ে, মণ্ডপে নাচ করে পুজোর আনন্দে মেতে উঠি। এ বার একবারও করিনি। শুধু পুজোর হোম-যজ্ঞের দিন মণ্ডপে গিয়েছিলাম। তবে পাড়ার কেউই সিঁদুর খেলেননি, মহিলাদের নাচও বন্ধ ছিল। আমরা দেবীকে পুজো করলেও, আড়ম্বর থেকে নিজেদের দূরে রেখেছি।”
চৈতি ঘোষাল (Chaiti Ghoshal)ও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন। তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctors) পাশে দাঁড়িয়ে অনশনমঞ্চেও দেখা দিয়েছেন। অষ্টমীতে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান চৈতি, সঙ্গে ছিলেন দেবলীনা দত্ত (Debolina Dutta), উষসী চক্রবর্তী (Ushasi Chakraborty) ও সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Soumya Bandopadhyay)। মর্মান্তিক এই ঘটনার পরে পুজোর আনন্দে যোগ দেওয়ার মানসিক অবস্থা আর ছিল না তাঁদের। চৈতি বলেন, “এই অবস্থার পর মণ্ডপে গিয়ে আনন্দ করা অসম্ভব। আমাদের বাড়ির পুজো হয়েছে, তবে শুধুমাত্র জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্যই বিশেষ প্রার্থনা করেছি।”
পাওলি দাম (Pawali Dham)ও এ বছর পুজোর কোনও আনন্দেই অংশ নেননি। তিনি জানান, কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঠাকুর দেখা, কিছুই করেননি এ বার। দেবী বরণেও যোগ দেননি তিনি। পাওলি বলেন, “আরজি করের ঘটনার কোনও সুরাহা না হওয়ায় মন ভারাক্রান্ত। এ বছর কোনও নতুন শাড়ি পরিনি, আবাসনের পুজোতেও অংশ নিইনি। প্রতি বছর সিঁদুরখেলার পরে ধুনুচি নাচ হয়, কিন্তু গত বছর প্রিয় সঙ্গী নীলাঞ্জনা দি-কে হারিয়েছি, তাই এই বছর সবকিছু থেকে দূরে রয়েছি।”
বিদীপ্তা চক্রবর্তী (Bidipta Chakraborty)ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে অস্বীকার করেছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, আরজি করের ঘটনায় সুবিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। রাত দখলের কর্মসূচিতেও বিদীপ্তার বিশেষ অংশগ্রহণ ছিল। তাঁর বোন সুদীপ্তা চক্রবর্তী (Sudipta Chakraborty)ও এ বছর পুজোর কোনও চিহ্ন রাখেননি। তাঁদের প্রতিবাদে ফুটে উঠেছে পুজোর আবহে নিরবচ্ছিন্ন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই।
আরও পড়ুন: এতবছর পর একফ্রেমে রূপা-সূর্য! মেয়েকে এত কাছ থেকে দেখেও চিনল না বাবা
এই বছর শারদীয়ার আড়ম্বর থেকে নিজেদের দূরে রেখেছেন এই তারকারা। আরজি কর-কাণ্ডের সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের প্রতিবাদ চলবে। তবে আশা করা যায়, আগামী বছরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং আবারও পুজোর আনন্দ ফিরে আসবে।