বছরের শেষ লগ্নে ফের হৃদয় ভার করা খবর। মাত্র ২৬ বছর বয়সে আ’ত্মহ’ত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিলেন এক জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী। তরুণ বয়স, কাজের ব্যস্ততা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা পরিকল্পনার মাঝেই হঠাৎ থেমে গেল একটি জীবন। সোমবার যে বাড়িতে তিনি পেইং গেস্ট হিসেবে থাকতেন, সেখানেই তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় পরিবার থেকে শুরু করে সহকর্মী ও দর্শক মহলে নেমে এসেছে গভীর শোক ও বিস্ময়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেই নোটে অভিনেত্রী তাঁর মানসিক চাপ ও ব্যক্তিগত টানাপোড়েনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে লিখেছেন, জীবনে বিয়ে বা সরকারি চাকরির পথে হাঁটার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। অভিনয়কেই তিনি নিজের পরিচয় ও ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিবার থেকে বারবার স্থায়ী জীবনের চাপ তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছিল। সেই হতাশাই শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দেয় বলে অনুমান।
তৃতীয় পর্বে জানা যায়, প্রয়াত অভিনেত্রীর নাম নন্দিনী সিএম। তিনি কন্নড় টেলিভিশনের পরিচিত মুখ ছিলেন এবং অল্প বয়সেই নিজের অভিনয় দক্ষতায় নজর কেড়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত কোনওরকম ফাউল প্লের প্রমাণ মেলেনি। তদন্তকারীদের কথায়, পারিবারিক মতবিরোধ ও মানসিক চাপের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত এগোলে আরও তথ্য সামনে আসবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কাজের দিক থেকে নন্দিনী তখন কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে ছিলেন। তিনি একটি তামিল ধারাবাহিক গৌরীতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছিলেন, যেখানে কনক ও দুর্গা নামে দ্বৈত চরিত্রে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। অদ্ভুত সমাপতন, ধারাবাহিকে সম্প্রতি এমন একটি দৃশ্য সম্প্রচারিত হয় যেখানে তাঁর চরিত্র বিষ গ্রহণ করে। বাস্তব জীবনের ঘটনার সঙ্গে সেই দৃশ্যের মিল এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে এবং দর্শকদের আরও আবেগপ্রবণ করে তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ“সংখ্যা আমি বানাইনি…যে নিয়মিত ব্যবসা দেয়, সে শো চাইতেই পারে!” ৩০ কোটি লাভ, তবু কাঠগড়ায় দেব! ‘প্রজাপতি ২’ শো-বিতর্ক ও ভুয়ো রেটিং অভিযোগে, মেগাস্টার সামনে আনলেন নিজের বিনিয়োগ ও লাভের পরিসংখ্যান! ২০২৫-এ কত টাকা বিনিয়োগ করলেন তিনি?
নন্দিনীর অভিনয়জীবন শুরু হয়েছিল পার্শ্ব চরিত্র দিয়ে। ধীরে ধীরে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলিতে। জীবা হুভাগিড়ে, সংঘর্ষ, মধুমাগালু, নীনাদে না সহ একাধিক প্রোজেক্টে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নিয়মিত সক্রিয় ছিলেন এবং শেষ পোস্ট ছিল তাঁর চলতি ধারাবাহিকের একটি প্রোমো। হাসিমুখের সেই ছবির আড়ালে যে এত গভীর কষ্ট লুকিয়ে ছিল, তা কেউ আঁচ করতে পারেনি। তাঁর অকালপ্রয়াণ দর্শক ও সহকর্মীদের মনে রেখে গেল অসংখ্য প্রশ্ন ও অপূর্ণতা।






