অসমবয়সী প্রেমের অভিনয় করতে করতেই কৌশিক সেনকে সত্যি মন দিয়ে বসলেন অভিনেত্রী! ‘গোধূলি আলাপ’ শেষের মুখে বেফাঁস ‘নোলক’ সোমু সরকার
শুরু যার শেষও তার। অর্থাৎ যার শুরু হবে তার শেষও হবে। যদিও শুরুটা যতটা আনন্দ পূর্ণ হয় শেষটা কিন্তু অবশ্যই কষ্টের। ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট। আর সেই শুরু বন্ধের ধারাবাহিকতাতে বাংলার বিভিন্ন জনপ্রিয় চ্যানেলে বন্ধের মুখে বেশ অনেকগুলি জনপ্রিয় ধারাবাহিক। বেশ কিছু ধারাবাহিকের অন্তিম পর্বের শুটিংও হয়ে গেছে।
আজ হয়ত দর্শকদের কাঁদিয়ে শেষবারের মতো জি বাংলার পর্দায় বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে বাংলা সিরিয়ালের এই মুহূর্তের সর্বাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিক মিঠাই। পাশাপাশি আবার স্টার জলসাতেও বন্ধ হচ্ছে কিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিক। নতুনদের জায়গা করে দিতে বন্ধ হচ্ছে নতুন ধারাবাহিক। যেমন জলসার পর্দায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাজ চক্রবর্তী প্রোডাকশনের ধারাবাহিক ‘গোধূলি আলাপ।’
গত ৩০ মে শেষবারের মতো শুটিং হয় এই ধারাবাহিকের। টিআরপি তালিকায় নম্বর তুলতে ব্যর্থ হলেও দর্শকের মনের রাজত্ব করতে ব্যর্থ হয়নি এই ধারাবাহিকটি। হটস্টারে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল ধারাবাহিকটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই এই ধারাবাহিকের গল্পের জমাটি বুনন এই ধারাবাহিক দর্শকদের দিল জিতে নেয়। অসমবয়সী প্রেমের এই গল্প দর্শকদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
পোড়খাওয়া অভিনেতা কৌশিক সেন ও নবাগত অভিনেত্রী সমু সরকারের অসমবয়সী এই জুটিকে ভীষণভাবে মনে ধরেছিল দর্শকদের। স্বভাব ছটফটে নোলকের দুষ্টু মিষ্টি অভিনয়ে মজে ছিল নেটিজেনরা। নিজের প্রথম কাজেই দারুন ভাবে সফল নায়িকা। এই ধারাবাহিকে উঠে এসেছিল বহুরূপীদের গল্প। এর আগে এই ধরনের গল্প আর অন্য কোনও বাংলা ধারাবাহিকে দেখা যায় নি।
উল্লেখ্য, অভিনেত্রী সোমু সরকারের এটাই ছিল প্রথম কাজ।দক্ষিণ দিনাজপুরের মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মেয়েটি সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় পড়তে এসেছিলেন। এমনকি কাজও করেন। তারপর সবকিছু বদলে যায় এক লহমায়। অভিনেত্রী হয়ে ওঠে সোমু। আনন্দ, ভালোবাসা, উত্তেজনা সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল সোমুর। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
গোধূলি আলাপ ধারাবাহিক বন্ধের খবরের ভীষণ রকম কষ্ট পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ‘এটাই ছিল আমার প্রথম কাজ। আর কিছু শেষ হলে মন খারাপ তো হবেই। ভীষণই খারাপ লাগছে। সবার সঙ্গে একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতাম। মন থেকে জুড়ে গিয়েছিলাম সবার সঙ্গে। কিন্তু ওই সবেরই তো শেষ থাকে।’ অভিনেত্রীর কথায়, আমি শিল্পী, শিল্পীদের কখনও কোনও একটা ঘর হয় না। আর তাই আমাকে আমার কাজটা করে যেতেই হবে।
প্রথম ধারাবাহিকেই কৌশিক সেন, সোহাগ সেন-এর মতো অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজের সুযোগ কি কোথাও গিয়ে বিরাট প্রাপ্তি? এক কথায় তা স্বীকার করেন অভিনেত্রী! তাঁর কাছে বিরাট বড় পাওনা বলে জানান তিনি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন প্রথম দিকে ভয় পেলেও ধীরে ধীরে সেই ভয় কেটে যায়। তাঁকে বড় বড় ডায়লগ বলার ক্ষেত্রে বহু সময় সাহায্য করেছেন অভিনেতা কৌশিক সেন। তাঁর কাছ থেকে অনেককিছু লিখেছেন তিনি। মাঝখানে আবার কৌশিক সেনের সঙ্গে তাঁর প্রেমের গুঞ্জন উঠেছিল! যদিও সেই গুঞ্জনকে এক লহমায় উড়িয়ে দেন সোমু।
যদিও অভিনেত্রী জানিয়েছেন একদম প্রথম দিকে তাঁদের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে রীতিমতো হাত-পা কাঁপত তাঁর। কিন্তু ধীরে ধীরে যেন কাজ করতে করতে কেটে যায় সেই ভয়। তবে অভিনেত্রীর ভালো অভিনয় মুগ্ধ হয়েছিলেন এই দুঁদে অভিনেতা- অভিনেত্রীরা। আসলে যখন যে চরিত্রটা করেন সেটার মধ্যে একেবারে ঢুকে যান তিনি। সোমুর মধ্যে ধারণ করেন সেই চরিত্রটাকে। আর তাই এরকম চরিত্র ছাড়তে কষ্ট তো হবে। তবে এখন ছুটি। আগামী কিছুদিন পাহাড়ে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছেন অভিনেত্রী।দেখা করবেন নিজের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে। আর তারপর কলকাতায় ফিরে আবার শুরু হবে নতুন পথচলা।