বাংলা অন্যতম নামী অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন তিনি। অসম্ভব প্রতিভাময়ী, অসম্ভব গুণসম্পন্ন। যেকোনও চরিত্রেই তিনি নিজের অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। টলিউড থেকে বলিউড সর্বত্রই তাঁর দাপুটে গতিবিধি।
হ্যাঁ, কথা বলছি অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলীর। পাঁচ বছরের বেশি সময় পর তিনি ফিরেছিলেন স্টার জলসায় সম্প্রচারিত হওয়া নতুন ধারাবাহিক মেয়েবেলাতে। প্রশংসাও পাচ্ছিলেন, সেইসঙ্গে সমানে জুটছিল কটাক্ষ। শাশুড়ি বৌমার গল্প এই ধারাবাহিকের মূল উপজীব্য হলেও এই ধারাবাহিকের পোস্টার গার্ল ছিলেন রূপা গাঙ্গুলী।
আসলে বহু দর্শকই মেয়েবেলা দেখতে বসেছিলেন শুধুমাত্র এটি রূপা গাঙ্গুলীর কামব্যাক ধারাবাহিক ছিল বলে। কিন্তু না রূপা গাঙ্গুলীর কামব্যাক খুব একটা সুখকর হলো না। ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ ‘দ্রৌপদী’ কিন্তু অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করলেন না। উল্লেখ্য, ধারাবাহিকের অবাস্তবতা, নোংরামি মেনে না নিয়ে ধারাবাহিক ছেড়ে দেওয়ার মতো বড় সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
রূপা গাঙ্গুলী অভিনীত বিথীকা মিত্র চরিত্রটি দিনে দিনে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠছিল। এই ধারাবাহিক ছেড়ে দেওয়ার পর রূপা গাঙ্গুলী প্রশ্ন তোলেন ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে একজন শাশুড়ি নিজের বৌমার সঙ্গে কীভাবে এই আচরণ কিভাবে করতে পারে? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অভিনেত্রী আরও জানিয়েছেন, তাঁকে রীতিমতো জোর করে, অনুরোধ করে এই ধারাবাহিকে রাজি করানো হয়। এই ধারাবাহিকের গল্প শুনেই, তিনি এই ধারাবাহিক করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দেখেন ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে গল্প। তাঁকে বলা বিথীকা চরিত্রের সঙ্গে আর কোনও মিল খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। মাত্রা ছাড়াচ্ছে নোংরামো। আর তাই ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আর রূপা গাঙ্গুলীর এই সৎ সাহসকে কুর্নিশ জানাচ্ছে বাঙালি দর্শক সমাজ। বর্তমান টেলিভিশনের পর্দায় চলা ধারাবাহিকগুলিতে গল্পের গরু রোজ গাছে ওঠে। অবাস্তবতা, গাঁ’জাখুরি, পর’কীয়া, নোংরামিতে ভর্তি ধারাবাহিকগুলি। সিনেমা সিরিয়ালকে বাস্তব সমাজের আয়না বলা হলেও সিরিয়ালে যা দেখানো হয় তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের কণা মাত্র মেলে না। দর্শকরা বলছেন রূপা গাঙ্গুলীর মতো সৎ সাহস যদি প্রত্যেকটা অভিনেতা-অভিনেত্রী দেখাতে পারতেন তাহলে আজকে হয়তো বাংলা ধারাবাহিকের মান এতটা পড়ে যেত না। উল্লেখ্য, মেয়েবেলাতে এখন রূপা গাঙ্গুলীর জায়গায় অভিনয় করছেন অভিনেত্রী অনুশ্রী দাস।