দর্শকদের মতে বর্তমানে বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম বাস্তবধর্মী ধারাবাহিক হচ্ছে ‘মেয়েবেলা।’ অত্যন্ত সহজে এই ধারাবাহিক মন জিতে নিয়েছে বাঙালি দর্শকদের। এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন পর বাংলা সিরিয়ালে এন্ট্রি নিয়েছেন তুখোড় অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী(Rupa Ganguly)। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর্দা থেকে দূরে ছিলেন তিনি। রাজনীতির অঙ্গন ছেড়ে ফের অভিনয় দুনিয়ায় ফিরেছেন তিনি। স্টার জলসায় নতুন শুরু হওয়া ধাবাবাহিক ‘মেয়েবেলা’র(Meyebela) হাত ধরে কামব্যাক করেছেন এই অভিনেত্রী। নায়কের মায়ের চরিত্রে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় অভিনয় করলেও এখানে নায়ক নয়, ছেলের বৌয়ের সঙ্গে শাশুড়ির সম্পর্কের রসায়ন দেখানো হচ্ছে।
রূপা গাঙ্গুলী’র বৌমা অর্থাৎ মৌ’এর চরিত্রে এই ধারাবাহিক অভিনয় করছেন, খেলাঘর’ ধারাবাহিক খ্যাত অভিনেত্রী পূর্ণা অর্থাৎ অভিনেত্রী স্বীকৃতি মজুমদার। নায়কের ভূমিকায় রয়েছেন অভিনেতা অর্পণ ঘোষাল যিনি ডোডো নামে দারুন পরিচিতি পেয়েছেন। আর তাঁর প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করছিলেন টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ দেবপর্ণা পাল চৌধুরী। পর্দায় চিনি চাঁদনী নামে পরিচিত। এত সুদক্ষ অভিনীত অভিনেত্রীদের পাশে নজর কেড়ে নিয়েছেন তরুণ অভিনেতা অভিনেত্রীরাও। যেমন মেয়েবেলা ধারাবাহিকে অসামান্য অভিনয়ে দর্শকদের মন জিতে নিয়েছেন এই ধারাবাহিকে ডোডো’র বোন টিকলি ওরফে শ্রেয়া ভট্টাচার্য।
শুরু থেকেই তাঁর অভিনয় দারুণ লেগেছিল দর্শকদের। তবে সাম্প্রতিক পর্বে তাঁর নজরকাড়া অভিনয় দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা। শিশু নিগ্রহের মত এক সংবেদনশীল ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে এই ধারাবাহিকে। আর ছোটবেলায় সেই শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার টিকলির অভিনয় দেখে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়েছে দর্শকদের।
গল্প অনুযায়ী ২০ বছর আগে এক দোলের দিন মাত্র ৭ বছর বয়সী টিকলিকে শারীরিক নির্যাতন করেছিল মিত্র বাড়ির বড়ো জামাই অর্থাৎ ডোডোর বড়ো পিসেমশাই। সেই যন্ত্রণা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ভেতরে কুরে কুরে খেতো টিকলিকে। রঙে তাঁর ভীষণ ভয়। আর তাঁকে সেই ট্রমা থেকে বের করে নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে মৌ। প্রথমে মৌ’কে কিছু বলতে না চাইলেও ধীরে ধীরে মৌ-এর কাছে সব খুলে বলে টিকলি। তাঁর কথা বলার সময় ফুটে ওঠে যন্ত্রণা। তবে অবশেষে মৌ-এর চিকিৎসা সফল হয়েছে। ট্রমা থেকে বেরিয়ে এসেছে টিকলি। যদিও তাঁর এখনও কিছুটা চিকিৎসার প্রয়োজন।
তবে এই নির্যাতনের শিকার একা টিকলি নয়। মিত্র বাড়ির বড় মেয়ে গুঞ্জার ওপরেও নির্যাতন হয়েছে। যেহেতু গুঞ্জা চুপচাপ তাই সে সবার সামনে কিছু বলতে পারেনি। আসলে গুঞ্জা ছোট থেকেই চুপচাপ তাই সে কারোর কাছেই কিছু বলে উঠতে পারেনি বা বললেও তাঁর কথা কতদূর কেউ শুনেছে সেটাই প্রশ্নের। এই ধারাবাহিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আম্মা এখনও বিশ্বাস করেন না তাঁর বড় জামাই এই ধরনের কোনও কুকর্ম করেছে। শিশু নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত বড় জামাই ও তাঁকে সাপোর্ট করা বড় মেয়ের সঙ্গে দীর্ঘ কুড়ি বছর দেখা না হওয়ার আফসোস
শোনা গেছে তাঁর গলায়। আর যা ক্ষুদ্ধ করেছে দর্শকদের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভক্ত লিখেছেন, ‘শুধু টিকলি নয়, মিত্রবাড়ির গুঞ্জাও child abusing-এর শিকার! গুঞ্জা ছোট থেকেই চাপা স্বভাবের তাই কাউকে কিছু বলেনি আর বললেও আম্মা বিশ্বাস করেনি!ইভেন এখনও বিশ্বাস করে না আম্মা!বলে কিনা একটা সাত বছরের বাচ্চার কথা শুনে আমার জামাই আর মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হলো!’