বাংলায় একটা কথা আছে, “আসছি বলে চলে যাওয়া যায়”। কথাটা এত সত্যি। বাংলা ভাষা যেমন মিষ্টি আবেগঘন ভাষা, বাঙালিরাও তাই। এক একটি ভালোবাসার বিষয়ের খুঁটি নাটি হিসেব রাখে তাঁরা। আর সেটা যদি হয় নিজের প্রিয় ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে, তাহলে তো দিন খন তারিখ সবের হিসেব রাখে। যেমন দর্শকরা হিসেব রেখেছে স্টার জলসায় (Star Jalsha) তাঁদের প্রিয় ধারাবাহিক “গাঁটছড়া”র (Gaatchora) ক্ষেত্রে।
আজ থেকে চার মাস আগেই গাঁটছড়া নিজের একটা জায়গা হারিয়েছিল। আসলে একসময় অবশেষে টিআরপি লিস্টে তুলনামূলক বাজে রেজাল্ট আনছিল গাঁটছড়া। ওদিকে চ্যানেলেরও সোজা হিসেব। টি আর পি দিয়েই শুরু টি আর পি দিয়েই শেষ। টেলিভিশনে যেকোনও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই টিআরপি শেষ কথা বলে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় দর্শকদের টেলিভিশনে কোনও অনুষ্ঠান ভীষণ পছন্দ হলেও টি আর পি কিন্তু বাড়ছে না।
বরং টিআরপির কারণে সেই প্রোগ্রাম গুলিকে মাত্র ৫০০-১০০০ পর্বের মধ্যেই শেষ করে দিতে হচ্ছে। অথবা পাল্টে দিতে হচ্ছে স্লটের টাইম। এছাড়া দর্শকদের কাছে টানার জন্য নিত্যনতুন অনুষ্ঠান ও ধারাবাহিক তো খুবই সহজ ঘটনা হয়ে গেছে টলিউডের কাছে।
সে কারণেই একের পর এক নতুন ধারাবাহিক প্রথম দিকে মারমার টানটান অবস্থায় চলে, পরের দিকে টি আর পি লিস্টে হারিয়ে যাচ্ছে। গাঁটছড়া এরকমই কিছু ধারাবাহিকের নাম।
এক সময় গাঁটছড়া সব ধারাবাহিককে টেক্কা দিয়ে প্রথম খেতাব অর্জন করেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারাবাহিকও হারিয়ে যাচ্ছে টিআরপি লিস্টে। এক সময় প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি এই ধারাবাহিকটিও বন্ধ হতে চলেছে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে সরাসরি যোগাযোগ করাও হয়েছিল ধারাবাহিকের অন্যতম মুখ্য চরিত্র খড়ি অর্থাৎ অভিনেত্রী সোলাঙ্কি রায়ের সঙ্গে।
অভিনেত্রী তখনই স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ধারাবাহিক বন্ধ হবে এরকম কোন খবরই তাঁর কাছে আসেনি। বরং শেষের দিকে বেশ ভালো মতোই ঘুরে দাঁড়ালো দর্শকদের প্রিয় গাঁটছড়া। কিন্তু আজ সেই ধারাবাহিক সত্যিই শেষের মুখে।
আর সেই সময় আবেগঘন হয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এক দর্শকদের মনে পড়ে, আজ থেকে চারমাস আগে জগদ্ধাত্রীর কাছে স্লট হারিয়েছিল গাঁটছড়া। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে নিজের টি আর পি সবসময় ৬+ এর বেশিই রেখেছে। তাই সব কিছুর মধ্য দিয়েও স্বমহিমায় থাকার জন্য একদিকে যেমন হারানোর ব্যাথা অনুভব করছেন তাঁরা, আবার বিজয়ের একটা হাসিও তাঁদের মুখে। এই জয় যেন একা গাঁটছড়ার জয় নয়, এই জয় যেন দর্শকদের সবার।