স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’র (Chiroshokha) নতুন মোড়ে দর্শক যেন একেবারে হতবাক। এতদিন ধরে স্বতন্ত্র আর কমলিনীর সম্পর্কের টানাপোড়েন, ভুল বোঝাবুঝি, সব পেরিয়ে অবশেষে স্থিরতার এসেছিল তাঁদের জীবনে। দর্শকরাও ভেবেছিলেন, এবার বোধহয় এই দু’জনের গল্পে একটু গতি আসবে। কিন্তু হঠাৎই এক অঘটন যেন আবার সেই সম্পর্কের ভিত নাড়িয়ে দিল। পার্বতীর বিয়ের আসরে পুলিশ হানা, আর তারপরেই পার্বতীর বাবার চমকে দেওয়া প্রস্তাব, স্বতন্ত্রকেই জামাই হিসেবে দেখতে চান তিনি!
এই অপ্রত্যাশিত প্রস্তাব শুনে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কমলিনী কেন এত নিরুত্তাপ? এতদিন ধরে যাঁর পাশে থেকেছেন স্বতন্ত্র, প্রতিটি বিপদে, প্রতিটি অপমানে— আজ যখন সেই মানুষটি এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েছে, তখন কমলিনীর নীরবতা যেন অনেককেই ভাবাচ্ছে। চন্দ্রের ফিরে আসায় যখন তাঁর জীবন অশান্তিতে ভরে উঠেছিল, তখন স্বতন্ত্রই ছিল তাঁর একমাত্র আশ্রয়। এমনকি নিজের মাথার ছাদ না থাকলেও, কমলিনীর জন্য সে নিজের ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিল। অথচ আজ সেই মানুষটির পাশে দাঁড়ানোর বদলে কমলিনীর মুখে যেন এক অদ্ভুত নীরবতা।
পার্বতীকে স্বতন্ত্র প্রত্যাখ্যান করার পরেও সে নিজে নিজেই সিঁদুর পরে এবং বাবার কথা মাথায় রেখে স্বতন্ত্রকে চুপ থাকতে বলে পার্বতী। সবার মতো সত্যিটা না জেনেই কমলিনী স্বতন্ত্র আর পার্বতীর বিয়েটা মেনে নেয়, তাদের কলকাতার বাড়িতে গৃহ প্রবেশ করায়। সংসার গুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়, স্বতন্ত্র যতবারই বোঝানোর চেষ্টা করছে এই বিয়েটা সত্যি নয় কিছুতেই যেন মানতে চাইছে না সে। নিজের মুখে সেদিন বন্ধ ঘরে পার্বতীর সঙ্গে স্বতন্ত্রর কি কথা হয়েছিল সবার সামনে বলার পরেও কমলিনী উদাসীনতা দেখাচ্ছে।
এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, “কমলিনী কি সমস্যায় পরেছে, বুঝতে পারছি না। স্বতন্ত্রকে এতো বছর ধরে এতো কাছ থেকে চেনে, তার পরেও বিশ্বাস না করে পার্বতীর দিকে চলে গেল কেন! এটা তো নতুন কে অপমান করা, নিজেদের সম্পর্কের অপমান করা। সারা জীবন ঠকতে ঠকতে কমলিনী কি সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করছে!” আবার কেউ কেউ বলেছেন, “কমলিনীর চেয়ে বেশি ঠকেছে স্বতন্ত্র। কমলিনী তো স্বতন্ত্রর কাছে নিয়ে গেছে দুহাত ভরে।
তবু সামাজিক স্বীকৃতিটুকুও দেয়নি। নিজের সংসার গুছিয়েছে ওর কাঁধে ভর রেখে। ওর কতটুকুও ভালবাসা নেই স্বতন্ত্রর প্রতি? এই ধরণের সুবিধাবাদী পরজীবী আত্মসম্মানবোধহীন চরিত্র কেন নায়িকা করলেন লেখিকা জানি না।” অন্য জনের মতে, “বড় খারাপ লাগে এইভাবে কোন প্রধান চরিত্র কে দেখতে। পুরো সমাজের কাছে একজন মেয়ের স্বার্থপরতা ছাড়া কিছুই বার্তা যায় না।” আবার কেউ বলেছেন, “কমোলিনী স্বতন্ত্র-পার্বতীর ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব পালন করার কে? বাড়াবাড়িটা মোটেই ভালো লাগছে না!”
আরও পড়ুনঃ ফের ছোট পর্দায় ফিরলেন অভিনেতা কৌশিক রায়! কোন ধারাবাহিকে দেখা যাবে তাঁকে?
অন্যদিকে, স্বতন্ত্রর চরিত্র নিয়েও চলছে আলোচনা। কেউ বলছেন, সে অতিরিক্ত আত্মত্যাগ করছে, আবার কেউ মনে করছেন, স্বতন্ত্রর নিঃস্বার্থ ভালোবাসার গল্পটাই এই ধারাবাহিকের আসল শক্তি। ধারাবাহিকের নতুন অধ্যায়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গল্প এবার আরও জটিল পথে এগোচ্ছে। ভালোবাসা, বিশ্বাস আর আত্মসম্মানের টানাপোড়েনের এই গল্প কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। তবে একটা জিনিস পরিষ্কার— স্বতন্ত্র আর কমলিনীর এই জটিল সম্পর্ক দর্শকদের ভাবাচ্ছে, কষ্ট দিচ্ছে, আবার আগ্রহও বাড়াচ্ছে।