ঐন্দ্রিলাকে মারধর করতেন তাঁর মা! কিন্তু অভিনেত্রীর জেদ ছিল বিপুল! অকপট প্রয়াত ঐন্দ্রিলা শর্মার মা
নভেম্বর মাসে টানা ২০ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে অসীম লড়াই করে প্রয়াত হন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল গোটা বাংলা।টলিউডের অন্যতম তরুণী এই সুঅভিনেত্রী গতবছর ২০শে নভেম্বর প্রয়াত হন। দীর্ঘ শারীরিক লড়াই শেষে চলে যান ‘জিয়ন কাঠি’ খ্যাত ঐন্দ্রিলা।
উল্লেখ্য, মাত্র ২৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন এই অভিনেত্রী। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে টলিউড। সবার সব প্রার্থনাকে বিফলে দিয়ে প্রয়াত হন এই তিনি।অভিনয় পেশার তাগিদে কলকাতার কুঁদঘাটে থাকলেও আদতে কিন্তু বহরমপুরের মেয়ে ছিলেন ঐন্দ্রিলা।
অভিনেত্রীর বাবা ছিলেন পেশায় চিকিৎসক, মা ছিলেন নার্স আর দিদিও চিকিৎসক। অভিনেত্রীর মা সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভীষণ রকমের জেদি ছিল ঐন্দ্রিলা। যেটা মনে করত করবে সেটাই করে ছাড়ত সে। এর জন্য মারও খেত সে। কিন্তু ওই যে বড্ড জেদ।
অভিনেত্রীর দিদি ঐশ্বর্য জানিয়েছেন, তাঁর সবটা জুড়েই ছিল বোন। তাঁর প্রত্যেকটা পদক্ষেপে তাঁর পাশে থাকা থেকে তাঁকে সাজিয়ে দেওয়া সবকিছুতেই বোন। ঐন্দ্রিলাকে হারিয়ে এখন ঐশ্বর্যকে আঁকড়েই বেঁচে রয়েছেন তাঁর বাবা-মা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ঐন্দ্রিলার মা শিখা দেবীও একজন ক্যান্সার রোগী।
কালার্স বাংলার ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিক দিয়ে বাংলা টেলিভিশনের দুনিয়ায় পা রাখেন মুর্শিদাবাদের ঐন্দ্রিলা। এরপর স্টার জলসার ‘জীবন জ্যোতি’ ধারাবাহিকেও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পান সান বাংলার ‘জিয়ন কাঠি’ ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে। ২০১৫ সাল থেকে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন ঐন্দ্রিলা। গত বছর ফের একবার তাঁর শরীরে হানা দেয় কর্কট রোগ। যদিও অভিনেত্রীর মায়ের কথায় তাঁর মেয়ের মানসিক জোড় ছিল অসম্ভব তীব্র। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী, ধৈর্য্যশীল, অদম্য সাহসী ছিলেন ঐন্দ্রিলা!
উল্লেখ্য, সুস্থ হতে হতেই গত ১লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। তাঁকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই অস্ত্রপচার হয় অভিনেত্রীর। দুবার ক্যান্সারকে হারিয়ে ফিরে এসে ঐন্দ্রিলা সাজিয়ে নিয়েছিলেন নিজের জীবনটা নতুন করে। কিন্তু তার সেই ভালো থাকা আর বেশি দিনের জন্য স্থায়ী হয় না। ব্রেন স্ট্রোক ও লাগাতার হৃদরোগে প্রয়াত হন তিনি। আর আজ মেয়ের স্মৃতিকে প্রবল ভাবে আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন এক সন্তান হারা মা।