স্টার জলসার চর্চিত ধারাবাহিক ‘রোশনাই’ (Roshnai) শুরু থেকেই দর্শকমহলে বিতর্কের সৃষ্টি করছে। গল্পের আবেগ, চরিত্রের জটিলতা আর টানটান নাটকীয়তা, এই সব মিলিয়ে ধারাবাহিকটি একদিকে যেমন ধীরে ধীরে কিছু দর্শকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে অন্যদিকে তেমন একাংশের প্রিয় তালিকায় জায়গাও পেয়েছে। যদিও প্রথমে এতটা জটিলতা ছিল না, কিন্তু নায়িকা পরিবর্তনের কারণে কিছু দর্শক হতাশ হয়েছিলেন। সেই থেকেই মূলত দর্শক সংখ্যা কমলে শুরু করেছে। তবুও অনেকে মনে করছেন, ধারাবাহিকের গল্পের বাঁকে ফের ফিরে এসেছে সেই পুরোনো জনপ্রিয়তা।
প্রথম থেকেই নির্মাতাদের চেষ্টা ছিল চরিত্রগুলোর টানাপোড়েন দর্শকদের মনে প্রশ্ন তোলা, ভালোবাসা নাকি দায়িত্ব, কোনটা বড়? গল্পের মূল তিনটি চরিত্র—আরণ্যক, রোশনাই ও গরিমা, এই ত্রিকোণ সম্পর্কের টানাপোড়েনই ধারাবাহিকটির চালিকাশক্তি। রোশনাই ও আরণ্যকের সম্পর্ক যতটা গভীর, ততটাই জটিল। ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও একে অপরের সঙ্গে দূরত্ব ঘুচছে না, কারণ কখনও তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি, কখনও আবার পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা তাদেরকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
এর মধ্যেই গরিমার উপস্থিতি যেন নতুন করে জটিলতা তৈরি করেছে। সে আরণ্যকের জীবনে নিজের জন্য স্থায়ীভাবে জায়গা করতে মরিয়া, আরণ্যকের মনে স্থান না পেলেও সে কখনওই হার মানতে নারাজ। আরণ্যক নিজেও এক ধরণের দ্বিধার মধ্যে রয়েছে। একদিকে তার নতুন প্রেম রোশনাই, অন্যদিকে গরিমার প্রতি তার দায়বদ্ধতা। সে রোশনাইকে ভুলতে পারে না, আবার গরিমাকে একেবারে অগ্রাহ্য করাও সম্ভব হয় না। এই মানসিক দ্বন্দ্বই আরণ্যক চরিত্রটিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
গল্প এখন এমন এক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে গরিমা ও আরণ্যকের আবার বিয়ে হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কিন্তু আদৌ কি সেই বিয়ে হবে? এর আগেও তো দেখা গেছে, আরণ্যক নিজেই রোশনাইয়ের জন্য পাত্র খুঁজে এনেছিল। এবার কি সে গরিমার জন্য একই উদারতার পরিচয় দেবে? অভিনেতা শন বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থাৎ ‘আরণ্যক’ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই চরিত্রের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অবাক করার মতো নয়।
আরও পড়ুনঃ “আমার লেখায় কোনও চরিত্র পুরো কালো বা সাদা নয়, ‘রোশনাই’ নিঃসন্দেহে সময়ের চেয়ে এগিয়ে”— বলেন লীনা গাঙ্গুলি! খলচরিত্র হয়েও দর্শকের কাছে গরিমাই ঠিক! তাঁকে ঘিরেই আবেগে ভাসছেন দর্শক! ‘রোশনাই’ ধারাবাহিক কি পাল্টে দিচ্ছে বাংলা ধারাবাহিকে খলচরিত্রের সংজ্ঞা?
নতুন কোনও পুরুষ চরিত্র গরিমার জীবনে প্রবেশ করতেই পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। শনের বক্তব্যে সহমত জানিয়েছেন লেখাও অর্থাৎ গরিমারও। তিনি বলেন, গরিমার জীবনে এতটা কষ্টের পরে এবার তার নিজের জন্য ভাবার সময় এসেছে। এতদিন ধরে সে শুধুই ভালোবাসার অপেক্ষা করেছে, কিন্তু এবার হয়তো তার নতুন করে শুরু করার দরকার। জীবনে নতুন কাউকে গ্রহণ করতে পারলে সেটা তার জন্যই ভালো হবে।