হানিমুনে সঙ্গী নাকি গোটা পরিবার! চিরসখা ধারাবাহিকে চলছে নারী হেনস্থা! কটাক্ষের মুখে পড়ে কি বলছেন লীনা গাঙ্গুলী?

গতকাল ছিল বিশ্ব নারী দিবস। এই দিন মূলত দেশ-বিদেশের প্রতিটা পুরুষই প্রায় প্রত্যেক নারীকেই ওমেন্স ডে’র শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে। কিন্তু এত ঘটা করে নারী দিবস পালন করলেই কি আজও সত্যিই মহিলারা নিজেদের মতন করে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারে? এই নিয়ে রয়েছে অনেকের মনেই যথেষ্ট সন্দেহ।

এমনকি এই নারী দিবসের প্রভাবও পড়েছে বাংলার সিরিয়াল জগতে। বর্তমানে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে স্টার জলসার চিরসখা সিরিয়ালকে নিয়ে নতুন করে বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছে। একজন তরুণীর কি সত্যিই কোনো অধিকার নেই নিজের মতন করে সময় কাটানোর? কিংবা একলা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করাটা কি খুবই অন্যায়?

লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ধারাবাহিকের গল্প মূলত সমাজে স্বীকৃতি না পাওয়া এক সম্পর্কের অনেক না বলা কথা নিয়ে তৈরী হয়েছে। চিরসখার প্রেক্ষাপটে প্রথম থেকেই দেখা যাচ্ছে, এক বিধবা মহিলা তিনি তাঁর জীবনের সমস্ত শখ আহ্লাদকে বিসর্জন দিয়ে দিবারাত খেটে চলেছে সংসারের জন্য। বিধবা মহিলা অর্থাৎ মুখ্য চরিত্রের নাম কমলিনী। না পড়তে পারে নিজের পছন্দের রংয়ের পোশাক, না খেতে পারে ইচ্ছা মতো খাবার। এই গল্পে যেন আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত সংসারের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনাকে তুলে ধরা হয় সিরিয়ালের মাধ্যমে।

লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প মানেই যেনো যৌথ পরিবারের টক-ঝাল-মিষ্টিতে ভরপুর ছবিকে তুলে ধরে। চিরসখা’র গতকালের পর্বে দেখা গেছে, বিয়ে হচ্ছে তার বড় ছেলের। কিন্তু, এদিকে যে ছেলের বিয়ে মাকে দেখতে নেই, তার ওপরে আবার বিধবা। তাই, আরই তাঁর ছায়াও শুভ কাজে পরা অশুভ। সবকিছুকে উপেক্ষা করে কমলিনীর পাশে দাঁড়াবে স্বতন্ত্র অর্থাৎ কমলিনীর নায়ক। কবে ভাঙবে এই আজব প্রথা! তা অবশ্য দেখা যাবে আগামী পর্বে।

অন্যদিকে আবার দেখা যাচ্ছে, বাড়ির নতুন হবু বউকে নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না কমলিনীর গোটা পরিবার। ধারাবাহিকের দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, কমলিনীর ছোট ছেলে এবং মেয়ে তাদের হবু বৌদিকে দাদার সঙ্গে মধুচন্দ্রিমায় একা যাওয়ার কথা নিয়ে খোঁচা মারে। কেন বৌদি দাদার সঙ্গে একা মধুচন্দ্রিমায় যাবে? কেনইবা নিয়ে যাবে না পরিবারকে? পরিবারের মতে, বেড়াতে গেলে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় এটাই যে, তাহলে একজন মহিলার সামান্য শখ আহ্লাদের গুরুত্বই বা রইলো কোথায়? কেউ কী জানতে চাইল তাঁর মতামত?

হানিমুনের বিষয়কে ঘিরে শহরের এক সংবাদ মাধ্যম প্রশ্ন করে ছোট ছেলের প্রেমিকা অর্থাৎ লাভলী মৈত্রকে। সত্যিই কি এই বিতর্কের কোনো দরকার ছিল? জিজ্ঞাসা করাতে অভিনেত্রী বলেন, “চিত্রনাট্য অনুযায়ী কমলিনীর পরিবার এমনই। তারা সবাই বেঁধে বেঁধে থাকতে চায়। এ ধারাবাহিক শুরুই হয়েছিল পারিবারিক পুরী ভ্রমণের দৃশ্য দিয়ে। সেখানে ছেলের অবিবাহিত বান্ধবীকেও নিয়ে গিয়েছিল কমলিনী-স্বতন্ত্র, শুধু ভালবাসার খাতিরে। তাই পরিবারের ছোটদের প্রত্যাশা, বড়দার বিয়ের পরও এমন একটা জমজমাট ভ্রমণ হবে”।

আরও পড়ুনঃ বিরাট চমক! ‘উড়ান’ ধারাবাহিকের একরত্তি এবার ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ রিয়েলিটি শোতে! কোন বিশেষ ভূমিকায় থাকছে খুদে মিছরি?

ঠিক একই প্রশ্ন এই গল্পের লেখিকাকে জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি বলেন, “মধুচন্দ্রিমায় পরিবার নিয়ে যাওয়া যায় না, এটা আমি মনেই করি না। এক সময় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে চিনতেন না। সম্বন্ধ করে বিয়ে হত। তখন তাদের খানিকটা সময় একান্তে কাটানোর প্রয়োজন হতেও পারত, একে অপরকে চিনে নেওয়ার জন্য। এখন সকলেই একসঙ্গে সময় কাটিয়ে বিয়ের কথা ভাবেন। ফলে সে রকম যৌথ পরিবারে বিয়ের পর ভ্রমণের ক্ষেত্রে সকলকে নিয়ে যাওয়াই তো ভাল!” তবে এখানে প্রশ্ন উঠেছে একটাই, তাহলে কী স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে কি কোনো একান্তে সময় কাটানোর ইচ্ছা থাকাটা অন্যায়?