শুধু বলিউড বা টলিউড নয় পুরো দেশের কাছে এক জনপ্রিয় গায়িকা হলেন শ্রেয়া ঘোষাল। তার গলায় একাধিক গান মন্ত্রমুগ্ধ করেছে শ্রোতাদের। তার জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে হলেও তার বেড়ে ওঠা রাজস্থানের কোটার নিকটবর্তী রাওয়াতভাতারে। ছোট থেকেই গানকে কেন্দ্র করেই তার বড় হয়ে ওঠা। মাত্র চার বছর বয়স থেকেই শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছিলেন শ্রেয়া। ছোট থেকেই লতা মঙ্গেশকরের অন্ধ ভক্ত তিনি।
জি টিভির জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো ‘সারেগামা’তে প্রথমবারের জন্য টিভির পর্দায় দেখা যায় শ্রেয়া ঘোষালকে। ১৯৯৯ সালে প্রতিযোগী হয়ে এসেছিলেন শ্রেয়া, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। এখনকার সাধারণ রিয়েলিটি শো গুলোর মত ছিল না তখনকার শো গুলি। সেই বছর “সারেগামার” বিজয়ী হয় শ্রেয়া। সেই শোতে তার মন্ত্রমুগ্ধ করা গান এবং সুরেলা কন্ঠ সারা ভারতের মানুষকে মুগ্ধ করেছিল।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই শোয়ের সেমিফাইনালে শ্রেয়া আর উপস্থাপনা করা একটি গান ভাইরাল হয়েছে। এটি ছিল ঊষা মঙ্গেশকরের গাওয়া একটি জনপ্রিয় রাজস্থানী লোকগান। সেমিফাইনালের বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন ঊষা খান্না এবং শাবির খান। এত বড় বড় জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সামনে তিনি নির্দ্বিধায় এবং সাবলীলতার সাথে এই গানটি গেছিলেন।
সেদিনই তিনি মনে ধরে গিয়েছিলেন সেই প্রধান অতিথিদের। অবশ্য গান শেষে শো এর সঞ্চালক সনু নিগাম তাকে জিজ্ঞাসা করেন, যে “তোমার মাতৃভাষা বাংলা তাও তুমি রাজস্থানী গান গাইছো কেন”? তখন শ্রেয়া বলে যে ভারতের “প্রতিটি ভাষাই তার কাছে খুব প্রিয়।”
এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তারপরেই সঞ্জয় লীলা বনসালির পরিচালিত ‘ দেবদাস ‘ সিনেমায় তাকে প্রথম প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে গান গাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সেখানে ‘বৈরি পিয়া’, ‘ঢোলা রে’, ‘মোরে পিয়া’ প্রতিটি গানই জনপ্রিয়তা অর্জন করে। শ্রেয়ার ভুবনমোহিনী গলা যেন ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষকে মুগ্ধ করেছিল। এই সিনেমার জন্য তিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সে সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।তারপর থেকেই একাধিক ভাষায় একাধিক গান গেয়েছেন শ্রেয়া। আর এখন ভারতবর্ষের একজন জনপ্রিয় গায়িকা হিসেবে নিজের পরিচিতি লাভ করেছেন। ভারতবর্ষ তথা বিদেশেও অগুন্তি ভক্ত রয়েছে তার।
২০১৫ সালে শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন শ্রেয়া ঘোষাল। গত বছর তিনি মাতৃত্বের স্বাদ পান, তার একটা পুত্র সন্তান হয়। এখন নিজের গানের জগত সামলে মাতৃত্ব উপভোগ করছেন সুরের জাদুকরি।