গ্ল্যামারের দুনিয়ায় খল-নায়িকাদের সামনে যত আলো ঝলমল করে, ক্যামেরা অফ হতেই সেই আলো অনেক সময়ই ম্লান হয়ে যায়। গল্প, ধারাবাহিক বা সিনেমার সাফল্যের পিছনে তাঁদের কঠোর পরিশ্রম যেমন থাকে, তেমনই থাকে নানান কটু কথা, অপমান, এমনকি ভুল বোঝাবুঝিও থেকে যায়। পর্যায় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দর্শক যেমন ভাবে দেখেন তার থেকেও বেশি অন্যরকম হয় পর্দার পেছনের গল্প।
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত নাম ডলি বসু। তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। সিনেমা, সিরিয়াল—সব ক্ষেত্রেই তিনি নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন সহজেই। তবে বহুদিন তাঁকে ছোটপর্দায় দেখা না গেলেও, ‘রাশি’ ধারাবাহিকের অপলা রায়ের চরিত্র আজও দর্শকের মনে অমলিন। বাস্তব জীবনে তিনি শান্ত, স্থির—কিন্তু পর্দার সামনে অন্য রূপেই ধরা দিতেন।
‘রাশি’ ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা যত বাড়তে থাকে, ততই বাড়তে থাকে ডলি বসুর চরিত্র নিয়ে মানুষের আবেগ। নেগেটিভ ভূমিকায় তাঁকে এতটাই বিশ্বাসযোগ্য লাগত যে, আউটডোর শুটিংয়ের সময় সাধারণ মানুষ সত্যিই তাঁকে খুঁজতেন। কেউ কেউ তো রাগে চড় মারার জন্য সেই সময় তাকে খুঁজতেন। সেই সময়কার দর্শকদের দাবি ছিল ‘অপলা রায়ের মতো খারাপ মানুষকে যেন শাস্তি দিতেই হবে।’
২০০৬ সালে ‘অনুরণন’, পরে ‘মন্দবাসার গল্প’—বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি অভিনয় জগত থেকে দূরে রয়েছেন। খুব কমই ইন্টারভিউ দেন, দেখা মেলে না কোনও ইভেন্টেও। তবে যাঁরা একসময় তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন, তাঁদের কাছে তিনি এখনও সমান প্রিয়। কিন্তু অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন ভালো কোন কাজের সুযোগ আসলে তিনি নিশ্চয়ই আবার কাজে ফিরবেন।
আরও পড়ুনঃ ছিলেন নায়িকা হয়ে উঠেছেন ভয়ংকর খলনায়িকা! একঘেয়ে চরিত্রে কেমন লাগছে শিঞ্জিনীর? কি বললেন অভিনেত্রী? ফিরতে কী চান নায়িকা চরিত্রে?
ডলি বসু আসলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পুত্রবধূ। চাইলে সহজেই রাজনীতিতে বড় জায়গা করে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়কেই। একটি ইন্টারভিউতে যখন তাঁকে জ্যোতি বসুর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, হেসে বলেছিলেন—এ নিয়ে কিছু বলতে চান না। সেখান থেকেই স্পষ্ট, তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব গভীর ছিল না। তবুও নিজের পথে স্থির থেকে অভিনয়কেই তিনি জীবনের পরিচয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।






