‘নির্মল হাওয়া’ ছবিতে একসাথে কাজ করার সময়ের বন্ধুত্ব, ভালোবাসা—এই সবকিছুই ছিল মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar) ও মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) সম্পর্কের অঙ্গ। একে অপরের জন্য জীবন পরিণত হওয়া প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। তবে, সেই প্রেমের কাহিনী ছিল পরিণতির দিক থেকে একেবারেই ভিন্ন। এমনকি দুজনের পরিবারও তাদের সম্পর্কের কথা জানতো, বিয়ের তারিখও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, পরিণতি যে এত অদ্ভুত হবে, সেটা কে জানত!
১৯৭৮ সালের বছর ছিল রোমান্টিক কিছু খন্ডাংশের মধ্যে বিভক্ত। মিঠুন চক্রবর্তী ও মমতা শঙ্করের প্রেম যেমন গভীর হতে শুরু করেছিল, তেমনই সেই সময় জীবনঘনিষ্ঠ অন্য কিছু চিত্রও তৈরি হচ্ছিল। মমতা শঙ্করের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তাদের প্রেমের সম্পর্কের এক বিপদসংকুল মোড় ছিল। একদিকে, মমতা শঙ্করের জন্য বিয়ে পাকা ছিল বাপিদা (চন্দ্রদয় ঘোষ)-র সঙ্গে, অপরদিকে মিঠুন চক্রবর্তীও তার প্রথম বিয়ের পথে। এক ঐতিহাসিক বছরের মধ্যে এই দুই চরিত্রের প্রেমের উত্থান ও পতন ছিল রীতিমতো অবাক করা।
তবে কীভাবে সমস্ত কিছু বদলে গেল? মমতা শঙ্করের মতে, মিঠুনের সঙ্গে তার সম্পর্ক অন্যদিকে গড়াতে শুরু করে, যখন একদিন মিঠুনের সাথে এক আউটডোর শ্যুটে আলাপ হয়। সেখানেই, এই সম্পর্কের কেমিস্ট্রি কিছুটা মধুর হলেও বাপিদার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে নিজেকে অনেক কষ্টে সামলাতে হয়েছিল। “বাপিদাকে ঠকাতে আমি চাইনি। তবে কীভাবে কী হয়ে গেল, কিছু বুঝতে পারিনি,” বলছিলেন মমতা শঙ্কর। মিঠুনের সঙ্গে সম্পর্ক কাটলেও, মমতা শঙ্কর জানাচ্ছেন, মিঠুনের পরিবারের সঙ্গেও তার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল।
এদিকে, মিঠুনের বিয়ে না হওয়ার পিছনে আসল কারণ ছিল তার ক্যারিয়ারের উঠতি সময়। মিঠুন চক্রবর্তীর মতে, তখন তার ক্যারিয়ার আরও শিখর ছুঁতে চেয়েছিল, আর বিয়ে তা কিভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তা তিনি ভাবতে চাননি। কিন্তু, মমতা শঙ্কর যখন তার পুরনো প্রেমিক বাপিদার সঙ্গে ফিরে যান, তখন মিঠুন তার পাশে দাঁড়াতে পারেননি। তিনি মমতাকে ফোন করে বলেছিলেন, “আই হেট টিয়ার্স,” এমনকি মমতাকে বলেছিলেন, “তুমি ফোন করলে, তবে কাল না পরশু করো”।
অবশেষে, বিয়ের দিনই মমতা শঙ্কর সিদ্ধান্ত নেন তার সম্পর্কের নতুন দিক নির্দেশে। এক রেকর্ডিং স্টুডিওতে মিঠুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি মিঠুনকে জানিয়ে দেন যে, তিনি বিয়ে করতে যাচ্ছেন। মিঠুন এর জবাবে সোজাসুজি বলেন, “তোর সঙ্গে কথা আছে একটা, বিয়ে করছিস তো?” তখন মমতাও মিঠুনের সঙ্গেই তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। মিঠুন পরে হেলেনার সাথে বিয়ে করলেও, মমতা শঙ্কর ফিরে যান তার প্রথম প্রেমে, বাপিদার সঙ্গেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।
আরও পড়ুনঃ দুর্গাকে অনাথ আশ্রমে দেখতে এলো কে? রহস্যে বাঁধা জগদ্ধাত্রীর আসন্ন পর্ব
মমতা শঙ্কর ও মিঠুন চক্রবর্তী বর্তমানে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে রয়েছেন। একসাথে কাজ করা ছবিতে তাদের কেমিস্ট্রি দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।