নতুন ওটিটি প্লাটফর্ম দার্শুর নতুন সিরিজ ‘সাইকো’ ইতিমধ্যেই আলোচনায় উঠে এসেছে, আর এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন অভিনেতা ‘কিঞ্জল নন্দ’ (Kinjal Nanda)। চিকিৎসক হয়েও অভিনয়ের প্রতি যে টান, তা তাঁর সাম্প্রতিক চরিত্রে আরও স্পষ্টভাবে ধরা দিয়েছে। সমদর্শী নামের এক জটিল মানুষকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া ভয়ংকর এক স্মৃতি, বাবা-মায়ের হ’ত্যার দৃশ্যের ট্রমা রয়েছে চরিত্রের। সেটা বাস্তবসম্মতভাবে প্রকাশ করা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু কিঞ্জল বইপত্র ঘেঁটে, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক বিশ্লেষণ করে তিনি চরিত্রটিকে আত্মস্থ করেছেন।
এদিন সিরিজের ট্রেলার লঞ্চে এসে কিঞ্জল জানিয়েছেন, এই মানুষটির ভেতরের দ্বন্দ্বকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে তাঁকে একেবারেই নতুনভাবে ভাবতে হয়েছে। কেবল ঠাণ্ডা মাথার খুনির গল্প নয়, বরং সামাজিক নৃশংসতার এক নির্মম প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে এই সিরিজ। কিঞ্জলের অভিনয় এখানে শিল্পী হিসেবে নিজের সীমা ছাপিয়ে যাওয়ার এক প্রচেষ্টা। এদিন কিঞ্জলকে আরও প্রশ্ন করা হয়, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় যে আন্দোলন হয়েছিল সারা দুর্গাপুজো ধরেই। অভয়া মঞ্চ গড়ে উঠেছিল। প্রায় এক মাসের কাছাকাছি সেখানে ডাক্তাররা অনশন করেছেন।
আর সেই আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন কিঞ্জল। কোথাও গিয়ে কি আজ এক বছর পরেও যে বিচার পাওয়া গেল না, সেই আন্দোলনকে কি ব্যর্থ মনে হয়? কিঞ্জলের কথায়, “আমি বিশ্বাস করি যে কোনও আন্দোলনই ব্যর্থ হয় না। ছোট হলেও একটা না একটা প্রভাব থেকেই যায়। আমাদের হয়তো বড় কোনও লাভ হয়নি, কিন্তু ওই আন্দোলনের জন্যই মানুষ জানতে পেরেছে যে মেডিকেল কলেজে রাতের অন্ধকারে কি কি হয়। আমি তখনও ওখানের ডাক্তার ছিলাম, এখনও আছি। আগে যেমন পরিস্থিতি ছিল, এখন অনেকটাই পাল্টে গেছে।
ডাক্তাররা একটু হলেও কম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, এখন মেয়েরা শান্তিতে কাজ করে হাসপাতালে।” এরপর প্রশ্ন আসে, আজকে দাঁড়িয়ে লোকে অভিনেতা কিঞ্জলকে চেনে নাকি প্রতিবাদী কিঞ্জলকেই চেনে? কিঞ্জলের কথায়, “আমি কোনদিনও চাইনি লোকে আমাকে আন্দোলনের মুখ হিসেবে চিনুক। আমি অনেক আগে থেকেই অভিনয় আর থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত। যদি নাম কামাতেই হতো আন্দোলন দিয়ে, তাহলে সংবাদ মাধ্যমের তরফে যখন আমায় সান্ধ্যকালীন টোক শোয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল, যেতেই পারতাম। কিন্তু তখন আমি একটাতেও যাইনি। আমি কোনদিনই চাইনি যে আন্দোলনকে হাতিয়ার করে জনপ্রিয় হবো।
বরং নীরবেও যে কিছু আন্দোলন করা যায় সেটাই করেছি। অনেকেই বলছে তাদের কাজ পেতে সমস্যা হয়েছে, কিন্তু আমার তেমন কিছু হয়নি এখনও।”অভয়ার এক বছরের রাতে আবার যখন সবাই রাস্তায় নেমেছিল আন্দোলনে, কিঞ্জলকে সেখানে দেখা যায়নি। এই নিয়ে অনেকেই বলেছেন যে নিজের নাম করা হয় গেছে আগেরবার আন্দোলন করে, তাই এবার আর তাঁর দেখা নেই। এই প্রসঙ্গেও কিঞ্জল বলেন, “অনেকই হয়তো জানেন আবার অনেকেই জানেন না যে বর্ষপূর্তির আগেরদিন আমার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
স্ত্রী এবং মেয়ে হাসপাতালে থাকায় তাদের ফেলে রেখে সারাদিন আন্দোলনে থাকতে পারেনি। শেষ রাতে একবার গেছিলাম, তাছাড়াও যখন যেখানে আন্দোলন হয় আমি উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি।” সম্প্রতি কিঞ্জলের সহকর্মী অনির্বাণের গানে রাজনীতির তিনি ঘোষের কথা উঠে এলেও, চাকরি দুর্নীতি বা অভয়ার কথা নেই। এর প্রসঙ্গেও কিঞ্জল বলেন, “শিল্পীর স্বাধীনতা থাকা সবার আগে জরুরী। অনির্বাণ বা তার গানের দল কি লিখেছে সেটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এই নিয়ে কোনরকম মন্তব্য করতে চাই না।”
আরও পড়ুনঃ “ভাবতেই ঘেন্না করে আজকাল প্রোমোশনের নামে, ভিক্ষা চাইছেন শিল্পীরা!” “কেউ ছাউ নাচছে, কেউ মাছ ধরছে…ভালো ছবি বানান, দর্শক নিজেই আসবে!”— টলিউডে প্রচারের নতুন ধারা নিয়ে বিস্ফোরক ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়!
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।