“আমি ইংরেজি পারি না…নিজেকে কাজের মাসি মনে হত, যাদের পেটে সন্তান দিয়ে স্বামীরা পালিয়ে যায়!” সৌম্যর অভিযোগের পাল্টা, দাম্পত্য জীবনের অন্ধকার অধ্যায় এবার সামনে আনলেন স্বরলিপি! ঠিক কী ঘটেছিল?

এক সময় টেলিভিশনের সেটে কাজ করতে করতেই অভিনেতা সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিলেন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায় (Swaralipi Chatterjee)। এই কথা তিনি নিজেই সাম্প্রতিক আলাপচারিতায় জানিয়েছেন। আজ অবশ্য তাঁর পরিচয়ের কেন্দ্রে অভিনয় নয় বরং জনপ্রিয় ক্যাফে ‘আবার বৈঠক’-এর সফল উদ্যোক্তা হিসেবেও। যার প্রতিটি ইট গাঁথার পেছনে সৌম্যর সমান ভূমিকা রয়েছে। তবে, হঠাৎ করেই তাদের বিচ্ছেদ হাজারো প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। স্বরলিপির কথায়, অতীতের সম্পর্কের যন্ত্রণাকে সঙ্গে নিয়েই তিনি এখন মেয়ে সহচরীকে নিয়ে শান্ত জীবন গড়ে তুলেছেন।

এদিন তিনি প্রথমবার খোলামেলা ভাবে নিজের দাম্পত্য জীবনের অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। স্বরলিপির কথায়, দীর্ঘদিন প্রেম আর লিভ-ইন সম্পর্কের পর দু’জনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। মূলত তাঁদের ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও, পরিবারের চাপ সামলাতেই। কিন্তু বিয়ের পর কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি দেখতে পান, তাঁর স্বামীর ফোনে আসতে থাকা কিছু বার্তা তাঁকে নিয়মিত ছোট করে চলেছে। তাঁর ভাষায়, সৌম্যর অনুরাগীদের একটি অংশ তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্তব্য করত।

এমনকি একটা পর্যায় তাঁর মাতৃত্বক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হত! বলা হতো যে, স্বরলিপি কোনদিনও নাকি মা হতে পারবেন না! সেই সময় তাঁরা দু’জন মিলে অল্প কিছু সঞ্চয় দিয়ে ক্যাফের কাজ শুরু করেন, ফলে তখন কোনও ঝামেলা তৈরি করতেও স্বরলিপি পিছিয়ে যান। তাঁর দাবি, হঠাৎ তিনি বুঝতে পারেন সৌম্যের জীবনে অন্য নারীর উপস্থিতি। তখনই তিনি জানতে পারেন নিজের গর্ভধারণের কথাও। স্বরলিপির বক্তব্য অনুযায়ী, ওই সময়টিই তাঁর জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায় ছিল।

তিনি বলেন, শারীরিক অসুবিধার সময় পাশে সেভাবে কাউকে পাননি। এমনকি সাহায্য চাওয়ার পরও উত্তর মিলত না। তাঁর কথায়, প্রায়ই তাঁকে এমনভাবে কথা শুনতে হত যেন তিনি সংসারের একটি অপ্রয়োজনীয় অংশ। তিনি আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়লেও, স্বামীর আচরণ তাঁকে ভীষণ মানসিক চাপে ফেলেছিল। স্বরলিপির ভাষায়, কোনও কোনও রাতে সৌম্য অন্যত্র নারীর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। ফলে তাঁর মনে হতো, সম্পর্কের ভাঙন যেন তাঁকেই একা বহন করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ বাবা-মায়ের মতোই সাফল্যমন্ডিত ইউভানের যাত্রা! ছেলের তিনটি মেডেল জয়েই গর্বিত মা শুভশ্রী! চোখের সামনে সন্তানের জীবনে প্রথম হওয়ার আনন্দ, ক্যামেরাবন্দি করে সকলের সঙ্গে এই বিশেষ মুহূর্ত ভাগ করলেন তিনি!

সমাজের রীতি-নীতি, তাঁর সীমিত শিক্ষা সবকিছুকে নিয়ে কটাক্ষ তিনি নীরবে সহ্য করেছেন বলেও জানান স্বরলিপি। তাঁকে নাকি সৌম্য অশিক্ষিত এবং ইংরেজি না পারার খোঁটা দিতেন। স্বরলিপির কথায়, “মনে হতো আমি কাজের মাসি, যাদের পেটে সন্তান দিয়ে স্বামীরা পালিয়ে যায়।” তবু এই সমস্ত অভিজ্ঞতা তাঁকে ভেঙে দেয়নি। বরং তিনি জানান, সন্তানকে কেন্দ্র করে নতুন করে নিজেকে গড়ে তুলতে পেরেছেন। দুঃখকেও তিনি আজ আর তেমন গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁর কথায়, জীবনের কিছু অধ্যায় নিজের কাছে রেখে দেওয়া ভালো।