‘আমার স্বপ্ন তুমি, ওগো চিরদিনের সাথী’- আনন্দ আশ্রমের এই বিখ্যাত গান আজও বাঙালির মুখে মুখে ঘুরে বেড়াই। অপুর সংসারের মাধ্যমে যে অভিনেত্রীর অভিনয় যাত্রা শুরু হয় তিনি হলেন কিংবদন্তি বর্ষীয়মান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি অপর্ণা চরিত্র আজও বাঙালি দর্শকে মুগ্ধ করে। অপুর সংসারের পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি পাতৌদি পত্নীকে।
কিন্তু, সেকালের অভিনেত্রী হয়ে আজকালকার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। সাম্প্রতিককালে, নতুন প্রজন্মের অভিনেতা অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। এর সঙ্গে বর্তমান সময়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পাতৌদি পত্নী।
বর্তমান যুগে, বিনোদন জগতে জড়িয়ে থাকা কলাকুশলীদের সম্পর্কে জানতে পারেন অনেকেই এমন আছে শুটিংয়ে যারা নিজের টিম নিয়র কাজ করেন। যার ফলে অভিনেতাদের নিজস্ব খরচ অনেকাংশেই বেড়ে যায়। ঠাকুর পরিবারের কন্যা শর্মিলা বলেন, “আমি একটা বিজ্ঞাপনের শুটে রূপটান শিল্পীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি, এখনকার অভিনেতারা নাকি তাঁদের মেকআপ ভ্যান কতটা বড়, তা নিয়েও প্রতিযোগিতায় নামেন।”
শর্মিলার মতে, তাঁদের সময়ে ভ্যানিটি ভ্যান কেবলই শিল্পীদের নিরিবিলিতে থাকার জন্য ব্যবহার করত। অভিনেত্রীর মতে, “সেখানে রান্নাঘর, বৈঠক করার জায়গা— ইত্যাদি থাকলে অভিনয় থেকে অভিনেতা আসলে দূরে সরে যান।” অভিনেত্রী সে যুগের স্মৃতিচারণা করে বললেন, “আমি যখন ‘আরাধনা’র জন্য পুরস্কৃত হই, তখন নার্গিস এবং ওয়াহিদা রহমান দর্শকাসনে। মঞ্চে গান গেয়েছিলেন কিশোর কুমার। তখন পুরো বিনোদন জগৎ উদ্যাপনে শামিল হত।” অভিনেত্রীর এই মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন আজকের দিনের পরিচালকেরা।
আরও পড়ুনঃ আমি অভিনয় দিয়ে নিজের স্টেটাস তৈরি করেছি, দামি জামা কাপড়, দামি গাড়ি দিয়ে নয়! অকপট টোটা
অভিনেত্রী জানান, “এখন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কেউ হয়তো দেরিতে আসেন। প্রথম সারির অভিনেতাদের জন্য আলাদা জায়গা থাকে। তার থেকেও বড় বিষয়, এই ধরনের অনুষ্ঠানে কেউ কারও সঙ্গে কথা বলেন না! পুরস্কার না পেলে অনেকে উপস্থিতও হন না।” বয়সজনিত কারণে শর্মিলার অভিনয় করার মাত্রা কমে গেলেও একেবারে ছেড়ে দেননি শুটিং ফ্লোর। গত বছর মুক্তি পেয়েছে যেমন ‘গুলমোহর’ নামের ওয়েব সিরিজ তেমনই আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে নতুন ছবি ‘পুরাতন’ মুক্তি পাওয়ার কথা আছে।