বাংলা চলচ্চিত্র জগতের (Bengali Film Industry) এক অমলিন অধ্যায়ের নাম উত্তম-সাবিত্রী। একদিকে তিনি বাঙালির মহানায়ক (Mahanayak Uttam Kumar) , অন্যদিকে তিনি সেই সময়ের রূপালি পর্দার সুন্দরী নায়িকা (Sabitri Chatterjee)। দু’জনের পর্দার রসায়ন যেমন দর্শক হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলেছিল, তেমনই বাস্তব জীবনেও তাঁদের সস্পর্ক নিয়েও চিরকাল কৌতূহল রয়ে গেছে সবার মনে। উত্তম কুমার ছিলেন বিবাহিত, কিন্তু তাঁর প্রকৃত সঙ্গিনী হিসেবে বারবার উঠে আসে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের নাম! প্রেম, আত্মত্যাগ আর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এই কাহিনী যেন নিজেই কিংবদন্তি!
একসঙ্গে অভিনয় করতে করতেই গড়ে ওঠে তাঁদের এই সস্পর্ক, যা ভালোবাসার থেকেও গভীর, আবার সামাজিক স্বীকৃতির চৌহদ্দির বাইরেও। এতোকিছুর পরেও কেন বিয়ে করেননি দুজন? মহানায়ক কেনই বা ধরেছিলেন অন্য নারীর হাত? সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় বা কেন অবিবাহিত রয়ে গেলেন সারা জীবন? এই প্রশ্ন আজও ঘুরপাক খায় দর্শকদের মনে, যার উত্তর হয়ত মহানায়কের সাথেই বিলীন হয়ে গেছে। তবে সাবিত্রী দেবীর কিছু বক্তব্য থেকে এই সব প্রশ্ন কিছু উত্তর মেলে।
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের জীবন হলো সংগ্রামের আর এক নাম! ১৯৩৭ সালে বাংলাদেশের কুমিল্লার গ্রামে জন্ম তারপর দেশভাগের সময় চলে আসেন এপারে। অভাবের সংসারে বেঁচে থাকার তাগিদে শুরু করেন অভিনয়। মঞ্চ দিয়ে শুরু হলেও, ১৯৫১ সালে সিনেমার জগতে পা রাখেন ‘সহযাত্রী’ ছবির মাধ্যমে। সেই ছবিতেই প্রথমবার উত্তম কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেন। প্রথম দেখাতেই ভালোলাগা তৈরি হয় মহানায়কের প্রতি, যা ধীরে ধীরে জায়গা নেয় গভীর অনুভূতিতে।
এরপর থেকে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন আজও থামেনি। কেউ বলেন, তারা একসঙ্গে থাকতেন। আবার কেউ বলেন, সাবিত্রী দেবী উত্তম কুমারকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অভিনেত্রী বারবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মহানায়ককে ভালোবেসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেই ভালোবাসা ছিল সীমার মধ্যে। তিনি কখনোই চাননি, কারো সংসার ভেঙে নিজেরটা গড়তে। এমনকি গৌরীদেবীর সাথে মহানায়কের বিচ্ছেদেও দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। “ভালোবাসা মানেই নিজের সুখ দেখা না”—এই কথা তিনি বারবার বলে এসেছেন।
তবে এটাও বলেছেন যে উত্তম কুমার ছিলেন তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনকি অভিনেত্রীর কথায়, উত্তম কুমার নাকি অন্যের সঙ্গে তার সম্বন্ধ একাধিকবার ভেঙে দিয়েছিলেন! সেসব ঘটনাই প্রমাণ করে, উত্তমের পক্ষেও সাবিত্রীর প্রতি টান নেহাত কম ছিল না। কিন্তু বাস্তব জীবনের সামাজিক কাঠামো আর বাধ্যবাধকতার সামনে দাঁড়িয়ে তারা কেউই সেই সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে পারেননি। সাবিত্রী নিজে এক সাক্ষাতকারে স্বীকার করেছেন, উত্তম কুমারকে না পেয়েই তিনি বিয়ে করেননি, এমনটা কিন্তু নয়।”
আরও পড়ুনঃ সংসারে অশান্তির শেষ নেই! কমলিনীর জন্য বাড়িতে পুলিশ ডাকলো বর্ষা! বধূ নির্যাতনের দায়ে কমলিনীর হাজতবাস! বৌঠান তাঁর এমন বিপদে নতুন ঠাকুরপোকে কি পাশে পাবে?
কিন্তু এই না পাওয়াতে যে তাঁর জীবনের শূন্যস্থানটা চিরকালই রয়েই গেছে, একথাও তিনি স্পষ্ট করেন। মহানায়কের মৃত্যুর দিন ছিল সাবিত্রী দেবীর জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন— নিজেই বলেছেন বারবার। আশির দশকে উত্তম কুমারের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছিলেন, “সেই শূন্যতা আর আজও পূরণ হয়নি।” আজও বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে উত্তম-সাবিত্রী জুটির নাম উচ্চারিত হলে এক নস্টালজিক আবহ তৈরি হয়।
“অনেকে আমাকে নিয়ে কার্টুন আঁকেন, বেশ লাগে! আমার স্ত’ন এতটা সুন্দর না, যতটা তাঁরা আঁকেন।”— নিজের ‘স্ত’ন-ফোকাসড’ কার্টুন প্রিন্ট করে রেখেছেন! স্বস্তিকার এই হাটখোলা স্বীকারোক্তিতে নেটপাড়ার লজ্জা!