পর্দার নিখিল বাস্তবে এমন? অশা’লীন প্রস্তাব, হু’মকি, কুরু’চিকর আচরণ— ‘বৌ কথা কও’র নায়ক ঋজু বিশ্বাস হঠাৎ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে! সমাজ মাধ্যমে অভিনেতার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ, প্রমাণ সহ একাধিক নারী মুখ খুলতেই তোলপাড় নেটপাড়া!

স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘বৌ কথা কও’ (Bou Kotha Kao) দিয়ে অভিনয়জগতে পা রাখেন ‘ঋজু বিশ্বাস’ (Riju Biswas)। নিখিলের চরিত্রে তাঁর সংযত অভিনয় এবং মানালি দে-র সঙ্গে অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি তখন টেলিভিশন দর্শকদের মন জয় করেছিল। ‘মৌরি-নিখিল’ নামেই তাঁদের জুটি আজও অনেকের স্মৃতিতে অমলিন। কিন্তু জনপ্রিয়তার সেই সিঁড়ি বেয়ে ওঠা অভিনেতা হঠাৎ করেই এবার এক বিতর্কের কেন্দ্রে। তাঁর নামে উঠেছে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ, যা শুনে হতবাক নেটপাড়া!

প্রসঙ্গত, অভিনেতার কেরিয়ারে ‘বৌ কথা কও’-এর পরই দেখা যায় দীর্ঘ বিরতি। মাঝেমধ্যে কিছু প্রজেক্টে তাঁকে দেখা গেলেও আগের মতো সাফল্য আর ফেরেনি। হঠাৎ করেই সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বিস্ফো’রক অভিযোগ। বৃষ্টি মণ্ডল নামে এক তরুণী, যিনি সম্ভবত পেশায় মডেল, প্রকাশ্যে আনেন একাধিক স্ক্রিনশট। সেই ছবিগুলোতে দেখা যায় অভিনেতা তাঁর সঙ্গে একাধিকবার কথোপকথন করেছেন এবং পরবর্তীতে কুরু’চিকর মন্তব্য করেছেন বলেই দাবি ওই তরুণীর।

বৃষ্টির অভিযোগ অনুযায়ী, ইনস্টাগ্রামে তাঁর পোস্টে প্রথমে প্রশংসা করতে শুরু করেন ঋজু। পরে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চাওয়া হয়, এবং সেখান থেকেই শুরু হয় একের পর এক অশা’লীন প্রস্তাব। বৃষ্টি নিজের পোস্টে লেখেন, “সবাইকে বলতে চাই, আমি সাধারণত এই ধরনের পোস্ট করি না, কিন্তু আজ সত্যি খুবই ঘৃণিত একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। এই মুখটা অনেকেরই চেনা — বাংলা টিভি সিরিয়ালের অভিনেতা ঋজু বিশ্বাস। প্রথমে ইনস্টাগ্রামে ও আমার পোস্টে প্রশংসা করতে শুরু করে, তারপর আমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার চায়… এরপর সে রেগে যায় এবং বারবার জোর করে কল করতে বলে।

আমি বাধ্য হয়ে খারাপ ভাষা ব্যবহার করি, কিন্তু সত্যি বলতে আমি অপরাধবোধে ভুগছি না, কারণ আমার নিজের নিরাপত্তা আগে।” এতেই শেষ নয়, বৃষ্টি আরও লেখেন যে, অভিনেতা তাঁকে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করার হুমকিও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আমি এই পোস্টটা করছি কারণ, কেউই আসলে নিরাপদ নয়। এখনও সে আমাকে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করার হুমকি দিচ্ছে এবং বাজে কথা বলছে। দয়া করে বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখুন, এমন আচরণ একদমই মেনে নেওয়া যায় না।” তাঁর এই বক্তব্যের পর থেকেই পোস্টটির নিচে শুরু হয়েছে প্রবল প্রতিক্রিয়া।

কমেন্ট বক্সে একাধিক নারী জানান, তাঁরাও নাকি একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “তোমাকেও? অভিনন্দন… আমাকেও তো সে’ক্সের জন্য অফার দিয়েছিল। কী ভয়ানক নোংরা কথা বলে! এক নম্বর থার্ড ক্লাস ছেলে। মারাত্মক অ্যাটিটিউড… তার উপর আবার আমাকেই বলে, আমার নাকি অ্যাটিটিউড কারণ আমি ওর সঙ্গে শুতে চাইনি! ছি! এতটা নোংরা হতে পারে কেউ?” আরও একাধিক মেয়েরাও নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানান, তাঁরা নাকি ঋজুকে ব্লক করে চ্যাট মুছে ফেলেছিলেন, এখন প্রমাণ দেখানোর মতো কিছুই নেই।

আরও পড়ুনঃ ‘এবার অন্য কারোর গলায় ঝুলে পড়ব!’, শ্রীময়ীকে ছেড়ে অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা ফাঁস করলেন কাঞ্চন মল্লিক!

এই ঘটনার পর থেকে নেটদুনিয়ায় তোলপাড়। কেউ কেউ অভিনেতার বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন, বিষয়টি তদন্ত হওয়া উচিত— কারণ সামাজিক মাধ্যমে এমন অভিযোগ প্রমাণ ছাড়া ছড়িয়ে পড়লে সেটা অন্যায়ও হতে পারে। তবে এতকিছুর পরও অভিনেতা ঋজু বিশ্বাসের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁর নীরবতাই এখন নেটিজেনদের কৌতূহল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে— সত্যিই কি এই অভিযোগের পেছনে আছে কোনও বাস্তব ঘটনা, নাকি সবই কাকতালীয়? উত্তর এখনও অজানা।