“ট্রায়াল দিয়ে জামাকাপড় কেনার মতো হয়ে উঠেছে এখন যৌনমিলন!” টলিউডের বর্তমান সম্পর্কের বিচ্ছেদ আর বাস্তবতা নিয়ে বিস্ফোরক অনুরাধা!

সমাজ বদলেছে, সম্পর্কের সংজ্ঞাও পাল্টেছে। কিন্তু সম্পর্কের গভীরে থাকা অনুভব, নৈকট্য আর মানসিক বোঝাপড়ার অভাব যেন আজকের প্রজন্মের সব চেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে— এমনটাই মনে করছেন অভিনেত্রী ‘অনুরাধা মুখোপাধ্যায়’ (Anuradha Mukherjee) । তাঁর মতে, বর্তমান সময়ে বহু সম্পর্কই শুরু হয় শারীরিক আকর্ষণ দিয়ে, কিন্তু মানসিক সংযোগ না থাকায় তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। দ্রুত ফলাফলের আশায় তৈরি হওয়া এই সম্পর্কগুলো পরে গিয়ে ভেঙে পড়ে।

বর্তমানে ‘তুই আমার হিরো’ (Tui Amar Hero) ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন অনুরাধা, সঙ্গে রয়েছে নতুন ছবির প্রস্তুতিও। তবে এসবের মধ্যেও সমাজের রূপ বদল নিয়ে চিন্তিত তিনি। তাঁর মতে, আজকের দিনে সম্পর্ক মানে যেন আগাছার মতো গজানো কোনও অনুভব, যেটা একটু বাড়লেই কেটে ফেলা যায়! এই মনোভাবই আলাদা করে চিন্তা বাড়াচ্ছে, বাড়াচ্ছে বিচ্ছেদের হারও। একটি সাক্ষাৎকারে অনুরাধা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, যৌনতা হল সম্পর্কের একটি দিক, সম্পর্কের সমার্থক নয়।

কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক থাকলেই সেটা গভীর প্রেম নয়, বরং অনেক সময় সেখানেই সম্পর্ক থমকে যায়। অভিনেত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে একটি সমসাময়িক বাস্তবতা— “বর্তমানে যৌনমিলন যেন ভালবেসে নতুন জামা কেনার মতো সহজসাধ্য হয়ে উঠেছে! পছন্দ হল, কাছাকাছি এলাম, তারপর মিলন। কিন্তু এটাই কি আসল সম্পর্ক? সম্পর্কের ভিত্তি যেখানে থাকবে ভরসা, বিশ্বাস আর ভালোবাসা, সেখানে যৌনমিলন কখনোই থাকতে পারেনা!”

সমাজের চোখে এখনও মহিলাদের স্বাধীনতা এবং প্রকাশ্য মতপ্রকাশ অনেক ক্ষেত্রেই যৌন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়— এই বিষয়টিতেও সরব হয়েছেন অনুরাধা। তিনি জানান, “নারীরা সমাজ মাধ্যমে কোনো ছবি দিলেই শুরু হয় কু-মন্তব্য, অশালীন টিপ্পনী। অথচ সেই ছবি বা পোস্টের পেছনে যদি একটুও সাহস বা আত্মবিশ্বাসের গল্প থেকে থাকে, তা বোঝার চেষ্টা কেউ করে না। না বুঝেই, না জেনেই অকথ্য ভাষায় আক্রমণ শুরু করেন।

আরও পড়ুনঃ “সবকিছু বদলে গেল এক রাতে, সাজগোজ, শুটিং সবই ফিকে হয়ে গেল”, স্বামীর মৃত্যু বদলে দিয়েছে জীবন! পর্দা ছেড়ে নিভৃতে জীবন কাটাচ্ছেন সুভদ্রা মুখার্জি

এই মানসিকতাই বহু সম্পর্ককে বিপর্যস্ত করে তুলছে।” নৈকট্যের প্রকৃত সংজ্ঞা কী? অনুরাধা বলেন, “নৈকট্য মানে যখন কেউ নিজের সত্যিটা বলতে পারে, আর উল্টো দিক থেকে জবাব আসে— ‘তুমি আমার কাছে নিরাপদ’। তখনই জন্ম নেয় আসল সম্পর্ক।” তার চোখে, সত্য আর নির্ভরতাই হল যেকোনো সম্পর্কের মূল ভিত। শুধু শরীর নয়, হৃদয়ই যদি কাছাকাছি আসে— তবেই সম্পর্ক টিকে থাকে।