স্টার জলসার ‘কে আপন কে পর’ (Ke Aapon Ke Por) ধারাবাহিকের মাধ্যমে যে কয়েকটি মুখ ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম ‘পল্লবী শর্মা’ (Pallavi Sharma) । ‘জবা’ চরিত্রে তাঁর সাবলীল অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিল বাংলার দর্শক। ধারাবাহিকটির দীর্ঘ পথচলা আর জবার সংগ্রামী জীবন দর্শকের মনে গেঁথে গিয়েছিল স্থায়ীভাবে। ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল সিরিয়ালটি এবং প্রতিটি ধাপে পল্লবী নিজের চরিত্রটিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিলেন।
এরপর একটা লম্বা বিরতি নিয়ে জনপ্রিয়তার শিখর থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন পল্লবী। কিন্তু প্রত্যাবর্তনটা হয়েছিল জি বাংলার ধারাবাহিকের মাধ্যমে। সেখানে ‘পর্ণা’ চরিত্রে অভিনয় করে আবারও নিজের অভিনয়ের দক্ষতা প্রমাণ করেন তিনি। এবার তিনি আর কোনও কাল্পনিক চরিত্র নন, একেবারে আমজনতার ঘরের মেয়ে। সাদামাটা অথচ সাহসী, একেবারে মন ছুঁয়ে যাওয়া চরিত্রে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন পল্লবী।
তবে যতই পর্দায় তাঁর জীবন থাকুক নানা রঙের, বাস্তব জীবনে তিনি কিন্তু একদম উল্টো মেরুর মানুষ। গ্ল্যামার দুনিয়ার ঝলমলে জগৎ তাঁর খুব একটা পছন্দ নয়। পার্টিতে, জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বা মদ খেতে দেখা যায় না তাঁকে। এমনকি বন্ধুবান্ধবের সংখ্যাও হাতে গোনা। স্কুলজীবনের দু’একজন বন্ধু ছাড়া তাঁর আড্ডার তালিকায় আর কেউ নেই বললেই চলে। সম্প্রতি ‘দিদি নাম্বার ১’ মঞ্চে এসে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু কষ্টের গল্প শেয়ার করেন পল্লবী।
পল্লবী জানান, খুব ছোট বয়সেই বাবা-মাকে হারিয়েছেন। তারপর থেকে বড় হয়েছেন পিসির কাছে। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে সেখানেও স্থায়ী আশ্রয় দেয়নি। বছর দুয়েক আগে সেই পিসিও প্রয়াত হন। বর্তমানে তিনি একাই থাকেন নিজের ফ্ল্যাটে। একাকীত্ব এখন তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে এত একাকী জীবন হলেও, তাঁর মধ্যে এখনও একটা আশা রয়েছে, কেউ একজন যদি জীবনে আসেন—তাঁকে আপন করেই বাকি জীবনটা কাটাতে চান।
আরও পড়ুনঃ ন্যাড়া হয়েছে ইয়ালিনী! প্রতিবাদ জানিয়েছেন একরত্তির অনুরাগীরা! ‘যাহ, সব উড়ে গেল’ বোনকে আদুরে উপহাস ছোট্ট দাদা ইউভানের!
অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি যতই শক্ত নারী হয়ে উঠুন না কেন, বাস্তবে তিনি একজন সংবেদনশীল, শান্তস্বভাবা এবং নিঃসঙ্গ শিল্পী। নিজের কাজ আর নীরব জীবনের মধ্যেই শান্তি খুঁজে পান তিনি। দিনের শেষে নিজেকে ভালোবাসাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। হয়তো জীবনের কোনও মোড়ে ভালোবাসা এসে আবার নতুন করে গল্প লিখবে পল্লবীর জীবনে। ততদিন পর্যন্ত, নিজের একাকীত্বকে সঙ্গী করেই তিনি এগিয়ে চলবেন নিঃশব্দ যোদ্ধা।