“সন্তানকে শাসন করতে প্রয়োজনে মা’রতেও হয়, মা কঠোর না হলে মানুষ হবে না!” “বাচ্চাটা ভালো হলেও আমারই হবে, বিপথে গেলেও আমারই যাবে…পাশের বাড়ির লোকের কথায় কান দেবো না!”— নিজ সিদ্ধান্তে গর্বিত, অন্যের মতামত গুরুত্বহীন বললেন অঞ্জনা বসু!

বরাবরের মতোই নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট এবং নির্ভীক অভিনেত্রী ‘অঞ্জনা বসু’ (Anjana Basu) আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সন্তানের প্রতি তাঁর কঠোর শাসন এবং সন্তান প্রতিপালনের দর্শন নিয়ে করা মন্তব্যই তাঁকে ঘিরে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল। অনেকেই তাঁর বক্তব্যকে “টক্সিক পেরেন্টিং” হিসেবে দেখেছিলেন, আবার কেউ কেউ তাঁর এই সোজাসাপ্টা মনোভাবের প্রশংসাও করতে ভোলেননি। তবে অঞ্জনা খুবই ক্ষুব্ধ, চারিদিকের লোকজনের এত মতামত নিয়ে!

নিজে স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি কারও মন্তব্যকে গুরুত্ব দেন না এবং নিজের সিদ্ধান্তে তিনি একশো ভাগ নিশ্চিত। প্রসঙ্গত, বর্তমানে জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কুসুম’-এ দুই ছেলের মায়ের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে অঞ্জনাকে। ধারাবাহিকের গল্পও যেহেতু পারিবারিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, তাই সেখান থেকেই তাঁর বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে অভিনেত্রী অকপটে জানিয়েছেন, বাস্তব জীবনেও তিনি ছেলেকে বড় করেছেন কঠোর শাসনের মধ্য দিয়ে।

তাঁর মতে, সন্তানকে মানুষ করার জন্য ভালোবাসার পাশাপাশি দরকার নিয়ম-শৃঙ্খলা এবং প্রয়োজন হলে কঠোরতা। আজও তাঁর ছেলে রাতে বাইরে বেরোতে চাইলে মায়ের অনুমতি নেয়। এমনকি যদি নির্ধারিত সময়ের বাইরে বাড়ি ফেরে, তিনি ছেলের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। অঞ্জনার নিজের কথায়, “আমার সন্তানকে আমি কিভাবে মানুষ করব, সেটা কি আশেপাশের লোক বলে দেবে? তারাই এখন নিয়ম তৈরি করে দেবে নাকি? সন্তানকে নিয়ে আমি বরাবরই খুব শক্ত এবং কঠোর অবস্থানে থাকি।

কে কী বলল, তাই নিয়ে আমার কোনও মাথা ব্যথা নেই!” তিনি আরও বলেন, “সন্তানকে শাসন করতে গেলে প্রয়োজনে মারতেও হয়। আমারই তো সন্তান, পাশের বাড়ির তো না! বাচ্চাটা মানুষ হলেও আমারই হবে, বিপথে গেলেও আমারই যাবে! পাশের বাড়ির সন্তানের সঙ্গে আমি কিছু করিনি, আমার ছেলের সঙ্গেই করেছি আর সেটা নিয়ে লজ্জা নেই। বরং গর্ববোধ করি আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে, যা করেছি ঠিক করেছি একদম!” তাঁর মতে, সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে নরম মনোভাব দেখালে বিপদ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ দিল্লি বি’স্ফো’রণে কাছের মানুষকে হারিয়ে শো’কস্তব্ধ অভিনেত্রী পায়েল ঘোষ! “ওর সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগেই কথা হয়েছিল, বিশ্বাসই হচ্ছে না ও নেই!…”

অভিনেত্রীর দৃঢ় মত, “থাকলেও আমিই থাকবে আর গেলেও, তবে কঠোর ভাবে না হাল ধরলে সন্তান মানুষ হয় না! তাই নিজের ছাড়া কারোর কথা শোনার দরকার আমি প্রয়োজন মনে করি না।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়া হলেও, অঞ্জনা বসু তাতে বিচলিত নন। বরং তিনি মনে করেন, নিজের সন্তানকে যেভাবে মানুষ করেছেন, সেটাই তাঁর কাছে সঠিক এবং গর্বের বিষয়। তাঁর এই দৃঢ় ও নির্ভীক মনোভাবই প্রমাণ যে, বাস্তবেও তিনি ঠিক ততটাই সাহসী, যতটা পর্দায় দেখা যায় তাঁকে।