“ছ’বছরে একদিনও বিছানায়…শেষবারের মতো বোঝার সুযোগটুকুও দিল না!” “ওর শরীরে তেমন কিছু ছিল না, মৃ’ত্যুর আগেও ব্যস্ত ছিল মানুষের জন্য!”— স্মৃতির ভারে বিধ্বস্ত অঙ্কিতা, শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে তাঁর স্মৃতিতে উঠে এল স্বামী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ দিনগুলোর কথা!

অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ জয় বন্দোপাধ্যায়ের মৃ’ত্যু (Joy Banarjee Death) ছিল টলিউডের জন্য একটা বড় ধাক্কা। এখনও সেই রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি, অভিনেতার ঘনিষ্ঠরা। জয়ের বহু সংকর্মী যেমন- ঋতুপর্ণা, প্রসেনজিৎ, দেবশ্রী রায়রা চোখের জলে শোক প্রকাশ করেছিলেন। জয়ের মৃত্যুর পর শুধু ভক্ত কিংবা সহকর্মীরাই নন, অনন্যার চোখের জলেও বলে দিয়েছিল যে জয় তাঁর জীবনে ঠিক কতটা জায়গা জুড়ে ছিলেন। সবচেয়ে গভীর আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন, জয়ের প্রথম স্ত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি এটাও বলেছিলেন যে, জয় ছিলেন তাঁর জীবনের প্রথম প্রেম, যাঁর সঙ্গে একসময় অনেক স্বপ্ন নিয়ে সংসার পেয়েছিলেন। সেই সম্পর্ককে ভুলে যাওয়া তাঁর কাছে অসম্ভব। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিনও তিনি শেষ শ্রদ্ধা জানান, যদিও চোখ ভিজেছিল স্মৃতির ভারে। তিনি বলেছিলেন, “প্রথম পুরুষকে হারানোর শূন্যতা কথায় বোঝানো যায় না। চারপাশে মানুষের ভিড় থাকলেও তাঁর একাকিত্ব যেন আরও বেড়ে যায়। এই ক্ষতি আর কখনও পূরণ হবে না।” সেই বেদনাই অনন্যার চোখের মুখে ধরা পড়ছিল বারবার।

joy banerjee with his second wife ankita

এদিন সেখানে আরও এক নারী ছিলেন যার কথা না বললেই নয়, জয় বন্দোপাধ্যায়ের বর্তমান স্ত্রী অঙ্কিতা বন্দোপাধ্যায়। বয়সে স্বামীর থেকে তিনি অনেকটাই ছোট। ২০১৭ সালে আলাপ হয় দু’জনের। সেই সময় জয় অনন্যার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অঙ্কিতার উপস্থিতিতে তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন। ২০১৮ সালে আইনিভাবে অঙ্কিতার সঙ্গে চার হাত এক হয় জয়ের। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সামাজিক নিয়ম মেনে বিয়ে করেন তারা। মাত্র কয়েক বছরের সংসার জীবন।

তবুও নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। এদিন তিনি জানিয়েছেন, “জয় খুব প্রাণবন্ত একজন মানুষ ছিল। ছ’বছরের কোনদিনও অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখিনি। শরীরে তেমন কোনও রোগ ছিল না বলেই আমার জানা। শেষ কয়েক মাস শরীর একটু খারাপ হলেও পার্টির কাজে সল্টলেকে নিয়মিত যেতেন। হঠাৎ করেই ১৫ তারিখ অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তারপর চলে গেলেন। এটাই সবথেকে খারাপ লাগছে যে, বোঝার সময়টুকু দিলেন না।” তিনি আরও যোগ করলেন, “আমার শাশুড়ি মা, মানে জয়ের মায়ের অনেকটাই বয়স হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ “মাসি ডাকত যাতে একদিন আমরা পেট ভরে মটন খেতে পারি”— এক বছর আগেও বেকারত্ব আর অর্থাভাবে ভুগছিলেন সায়ক, অন্ধকার পেরিয়ে আজ সাফল্যের আলোয় থেকেও স্মৃতিতে উজ্জ্বল সেই কষ্টের দিন!

ছেলের এমন পরিণতি শেষ বয়সে এসে কোনও মা সহ্য করতে পারে না, আমাদেরও ওনাকে সামলাতে সময় লাগবে।” জয়ের প্রথম স্ত্রী অনন্যার সঙ্গে সম্পর্ক কেমন বা ভবিষ্যতে সম্পর্ক রাখবেন কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনন্যা দি জয়ের প্রাক্তন হলেও, কোনদিনও সেটা বুঝতে দেয়নি আমাকে। বিশেষ করে জয় চলে যাওয়ার দিন থেকে আমাদের পাশে যেভাবে উনি থেকেছেন, নিজের পরিবারও থাকে না। আমাদের তিন জনের অনেক ভালো মুহূর্ত রয়েছে একসঙ্গে। এখন আমরা দুজনেই আছি, কোনরকম দূরত্ব আনতে চাই না আর।”

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।