টলিউডের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar) ফের একবার বিতর্কের কেন্দ্রে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চণ্ডালিকা’ গল্পের আধুনিক উপস্থাপন নিয়ে একটি নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সেখানে তাঁর অভিনয় ও উপস্থাপন ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে দর্শক মহলে। তবে এই সমালোচনার মাঝে এক সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ঋতুস্রাব সংক্রান্ত নিজের মতামত তুলে ধরে ফের চর্চায় অভিনেত্রী। তবে এ বার বিষয়টি আরও সংবেদনশীল, যার প্রভাব পড়েছে সমাজজুড়ে।
মমতার বক্তব্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে তাঁর সেই মন্তব্য, যেখানে তিনি বলেছেন, “আমি কখনওই ছেলেদের সঙ্গে ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনা করতে পারব না।” তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপনে রক্তের লাল রং ব্যবহারকে তিনি অপ্রয়োজনীয় মনে করেন। তাঁর মতে, এই ধরনের উপস্থাপন শুধু মেয়েদের বিচারক্ষমতাকেই খাটো করে তোলে। এমনকি প্রশ্ন তোলেন, নারীর দেহের কোন অংশ থেকে ঋতুস্রাব নির্গত হয়— সে ছবিও কি ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপনে দেখানো হবে?
এই বক্তব্য অনেকের কাছে বাস্তব ও সৎ মনে হলেও, অনেকে একে পিছিয়ে পড়া মানসিকতা বলেই দেখছেন। এই প্রসঙ্গে সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তীর একটি সামাজ মাধ্যম পোস্ট নতুন করে আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। তিনি স্মৃতিচারণা করে জানান, তাঁর বাবা কখনও তাঁকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পাঠাননি, কিন্তু মা তাঁকে বলেছিলেন এইসব জিনিস লজ্জার নয়। ইমনের বক্তব্যের মাধ্যমে একটি আধুনিক, সমানাধিকারমূলক ভাবনার জায়গা উঠে আসে।
আর এখানেই মূল বিতর্ক— সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের মতো পরিচালকের পছন্দের এই অভিনেত্রী, চিরকাল আধুনিকমনস্কতার প্রতীক ছিলেন মমতা। তিনিই কেন তবে এখন নারীর প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নিয়ে এমন রক্ষণশীল অবস্থান নিচ্ছেন? তবে মমতা শঙ্করের দাবি, তিনি কেবলমাত্র নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন, কোনও মত চাপিয়ে দেননি। প্রত্যেকেরই নিজের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে— এই বিশ্বাসেই তিনি কথা বলেন। তিনি জানান, গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে এখনও ঋতুস্রাব নিয়ে সচেতনতা অনেক কম।
আরও পড়ুনঃ “এক বছর শাঁখা-পলা খুলিনি, ওটাই আমার উদযাপন ছিল!”— চার দশকের প্রেমেও নতুন বউয়ের অনুভব নিয়ে বাঁচেন দোলন! বিচ্ছেদের যুগে, দীপঙ্কর-দোলনের প্রেম এখনও স্বপ্নের মতোই টাটকা!
কিন্তু তাই বলে অতিরঞ্জিত ও আপত্তিকরভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করাকে তিনি সমর্থন করেন না। স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন হোক বা সচেতনতা প্রচার— এর মধ্যে শালীনতা বজায় রাখা জরুরি বলেই মনে করেন তিনি। এই ঘটনায় ফের একবার স্পষ্ট হয়েছে— নারীর দেহসংক্রান্ত প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও কতটা বৈচিত্র্যময় মতামত বিরাজ করে সমাজে।বিতর্কের মাঝেই মমতা জানিয়ে দিয়েছেন— ভবিষ্যতেও তিনি নিজের মত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করবেন, তাতে যতই ঝড় উঠুক না কেন।