সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ( Soumitra Chatterjee ) মতো কিংবদন্তি অভিনেতা, যিনি ‘বেলাশুরু’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, সেই ছবি মুক্তির আগেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। ছবি দেখতে না পাওয়ার সেই ক্ষোভ তাঁকে কষ্ট দিয়েছিল, এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এ কথা তিনি ব্যক্ত করেন তাঁর সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘বহুরূপী’র প্রচারের সময়। শিবপ্রসাদ বলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আক্ষেপ নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করেছেন যে, ইন্ডাস্ট্রি তাঁর কাজের প্রাপ্য সম্মান তাঁকে দেয়নি।
টলিউডের বর্তমান কাজের পরিবেশ নিয়েও শিবপ্রসাদের বক্তব্য ছিল কড়া। তিনি বলেন, শুধু কাজের সুযোগ নয়, টলিউডে এখন সম্মান ও শ্রদ্ধার অভাব দেখা যাচ্ছে। অনেক নতুন স্টুডিও তৈরি হলেও সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকভাবে করা হচ্ছে না। মহিলাদের জন্য উপযুক্ত মেকআপ রুম নেই, এমনকি অনেক জায়গায় শ্যুটিংয়ের পরিবেশও সঠিক নয়। শিবপ্রসাদ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, রজনীকান্তের মতো দক্ষিণের সুপারস্টারদের প্রতি তাঁদের ইন্ডাস্ট্রির সম্মান প্রদর্শনের কথা, আর সেই তুলনায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে টলিউডে এই মর্যাদা দেওয়া হয়নি।
শিবপ্রসাদের উক্তি শুধু টলিউডের কাজের পরিবেশের সীমাবদ্ধতা নয়, বরং ইন্ডাস্ট্রির মানসিকতার দিকেও ইঙ্গিত করে। তাঁর মতে, আমাদের শিল্পের বড় স্বপ্নগুলো পূরণ করতে হলে ছোট ছোট ব্যাপার থেকে উন্নতি শুরু করতে হবে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্য এমনকি একটি ফুলের তোড়া নিয়ে যাওয়া হয়নি, যা ইন্ডাস্ট্রির অবহেলার প্রতীক। এই অভিমানের কারণেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চলে যান চুপচাপ, এমনটাই মনে করেন শিবপ্রসাদ।
শিবপ্রসাদের আরও এক অভিমানের জায়গা হলো তাঁর সহকর্মী ও সহ-পরিচালক নন্দিতা রায়ের প্রতি ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি জানান, নন্দিতার অবদান কম না হলেও, সবসময় পুরুষ পরিচালকদের নামই আগে আসে। শিবপ্রসাদ কটাক্ষ করে বলেন, এটি টলিউডের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অংশ, যা এখনও পরিবর্তন হয়নি। যদিও নন্দিতা রায় সমান কৃতিত্বের দাবিদার, তাঁর নাম বা কাজের প্রশংসা অনেক সময় আড়ালেই থেকে যায়।
আরও পড়ুন: রক্তের টান যাবে কোথায়! অবশেষে এক হল দুই বোন, আঁখির দায়িত্ব নিল দাবাং ঝিলিক
শিবপ্রসাদের এই খোলামেলা বক্তব্য টলিউডের বর্তমান পরিস্থিতি ও মানসিকতার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত করে। শিল্পের শ্রদ্ধা, সম্মান ও কাজের পরিবেশের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যা টলিউডের উন্নতির জন্য অত্যন্ত জরুরি।