বর্ষিয়ান অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে কে না চেনে? আজকের টলিউড ইন্ডাস্ট্রির “ইন্ডাস্ট্রি” আক্ষরিক অর্থে যাঁকে বলা হয় সেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা এবং টলিউড ইন্ডাস্ট্রির এক অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা হলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আর শুধু টলিউড নয়, প্রথমে বাংলা আর তারপর বলিউড কাঁপিয়েছেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
তবে আজ বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাজ নয় বরঞ্চ অভিনয় জীবন বাদে ব্যক্তিগত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদেরকে জানাবো যা অনেকেই হয়তো জানেন না কিংবা জানার পর চমকে উঠবেন।
আপনারা কি জানেন যে অভিনয়ের জন্যই একসময় বাড়িছাড়া হতে হয়েছিল এই নায়ককে? এই প্রথিতযশা শিল্পীর জীবন নাটকের মঞ্চ থেকে কোন অংশে কম নয়। যতটাই বর্ণময় নায়কের অভিনয় জীবন ঠিক ততটাই বর্ণময় বিশ্বজিতের ব্যক্তিগত জীবন।
বিশ্বজিতের মামা বাড়ি ছিল প্রচন্ড রক্ষণশীল। তাই অভিনয়ের জন্য শেষমেষ বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল অভিনেতাকে। ৪০ বা ৫০ এর দশকেও বাঙালি পরিবারে সিনেমায় অভিনয় নিয়ে বেশ নাক সিটকানোর মতো একটা ব্যাপার ছিল যেটাকে কোন ভাবেই অগ্রাহ্য করা যায় না। তবে ততদিনে বিশ্বজিতের মনে ঢুকে গেছে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা। এর শুরুটা হয়েছিল নাটকের মঞ্চ দিয়ে।
মুম্বইয়ে কাজের সূত্রে থাকতে থাকতে প্রথম স্ত্রীকে ছেড়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়ে অভিনেতার প্রথম পক্ষের মেয়ে পল্লবী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে ইরা কাকিমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে আবার দ্বিতীয় সংসার তৈরি করলেন বিশ্বজিৎ। বিয়ে করে ফেললেন প্রেমিকাকে। কিন্তু শহর কলকাতা বিশ্বজিতের দ্বিতীয় বিয়ে সহজে মেনে নিতে পারেনি। সহজে ক্ষমাও করেনি।
তবে পল্লবী জানিয়েছিলেন বাবার জন্য যে খুব মন খারাপ করত তেমনটা নয়। কারণ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং পল্লবী চট্টোপাধ্যায় ছোট থেকে বড় হয়েছেন বাবা বিশ্বজিতের ব্যস্ততা দেখেই। বাবা যখন কাজে যেতেন সেই সময়ে সন্তানরা সকলেই ঘুমাচ্ছে। আবার অভিনেতা যখন কাজ করে ফিরতেন তখনও তারা ঘুমের দেশে।
কিন্তু ১৪ ই ডিসেম্বর এলেই খাঁ খাঁ করত সবকিছু। আসলে যতদিন অভিনেতা মুম্বইয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি ততদিন সেখানে গিয়েই জন্মদিন সেলিব্রেট করতে অভিনেতার প্রথম পরিবার। বাবাকে কাছে পেত সন্তানরা। তারপর সেটা বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় অর্থাৎ অভিনেত্রী পল্লবীর বাবাকে নিয়ে পল্লবীর মনে কোন রাগ বা ক্ষোভ নেই পাশাপাশি সৎ মা ইরাকে নিয়েও কোন রাগ নেই অভিনেত্রী মনে। আর সৎ বোনকে নিয়েও মনে কোনরকম হিংসে পুষে রাখেননি পল্লবী।