“মেয়েদের যা ইচ্ছা বলা যায় না?” “সমাজ মাধ্যম এমন জায়গা, না আছে কোনও নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ!” মেসি-কাণ্ডে ট্রোলিংয়ের প্রতিবাদে রাজের পর, শুভশ্রীর পাশে দাঁড়ালেন গায়িকা ইমন চক্রবর্তী! সমাজ মাধ্যমে নারীদের প্রতি অবিচার বন্ধের দাবি তাঁর!

গত শনিবার, অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর কলকাতা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সেই চরম বিশৃঙ্খলার দৃশ্য আজীবন বাঙালির গায়ে দাগ হয়ে থেকে যাবে। এদিন মেসির কলকাতায় আসা (Messi In Kolkata) নিয়ে সবার উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে, তবে সেই উত্তেজনা এক পর্যায়ে ভাঙচুর এবং তাণ্ডবে পরিণত হয়! হাজার হাজার টাকা খরচ করে টিকিট কেটে মেসির দর্শন পাওয়ার আশায় মাঠে উপস্থিত হওয়া দর্শকরা, তাঁকে দেখতেই না পেয়ে ক্ষোভ এবং হতাশা ফেঁটে পড়েন।

চেয়ার, জলের বোতল, সবকিছু মাঠে ছুঁড়ে মারা থেকে শুরু করে মাঠে তোলপাড় মিলিয়ে চরম অশান্তি সৃষ্টি হয়। আর এই ঘটনায় শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও চলে আসে, যদিও তিনি কেবল মেসির সঙ্গে একটি “মিট অ্যান্ড গ্রিট” ইভেন্টে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। শুভশ্রী এদিন মেসি, লুই সুয়ারেজ এবং ডি পলের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন। কিন্তু সমাজ মাধ্যমে তা পোস্ট করতেই সেটা নিয়ে তৈরি হওয়া সমালোচনায় নাজেরহাল হয়ে যান তিনি! সর্বত্র মিমি, কটাক্ষ আর কটুক্তিতে যেন তিনিই প্রধান দোষী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।

অনেকে এটাও প্রশ্ন তোলেন যে, সামান্য একজন অভিনেত্রীকে কেন মাঠে থাকতে হবে, তিনি কি ফুটবলের কিছু বোঝেন? অথচ শুভশ্রী নিজেই একজন ফুটবলপ্রেমী ও মেসির ভক্ত হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি একেবারেই ভাবেননি যে তার পরিচিতি তাকে এমন আক্রমণের শিকার বানাবে। সমাজ মাধ্যমে এই অযাচিত কটাক্ষ এবং ট্রোলিংয়ের জবাবে রাজ চক্রবর্তী তাঁর সমর্থনে দাঁড়িয়েছেন রবিবার সকালেই। তিনি বলেছেন, “এমন বিশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত, এটি ফুটবলপ্রেমী বাঙালির জন্য লজ্জাজনক।”

রাজ স্পষ্টভাবে আরও বলেছেন, এমন একটি বড় অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না কেন সেভাবে? শুভশ্রী এখানে একমাত্র ভুক্তভোগী নন, তবে তার ওপর অবিচার করা হচ্ছে। রাজের কথায়, এটি কেবল শুভশ্রীরই নয়, যে কোনও নারীর প্রতি সমাজের আক্রমণের এক প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন, যেভাবে একটি নারীর অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভুল বার্তা দিচ্ছে।

এবার রাজের পর, জনপ্রিয় গায়িকা ইমন চক্রবর্তীও এই বিষয়ে নিজের মতামত দিয়ে শুভশ্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন! এদিন দুপুরে তিনি সমাজ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইমন বলেছেন, “এখন সমাজ মাধ্যমে এমন এক জায়গায় পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষ কারও প্রতি অপমান বা অসম্মান জানাতে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বিশেষ করে, মহিলা শিল্পীদের নিয়ে এই ধরনের কটাক্ষ খুব সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেছেন, “সমাজ মাধ্যমে না রয়েছে কোনও নিয়ন্ত্রণ, না রয়েছে কোনও নীতি।

আরও পড়ুনঃ “ভালো হয়েছে প্লুটো মা’রা গেছে, মিঠির সঙ্গে কৃশানুকেই মানাচ্ছে বেশি!” “মিঠি-প্লুটোর কোনও রসায়ন চোখে পড়েনি, কিন্তু কৃশানুর সঙ্গে ঝগড়াতেও সেটা প্রকাশ পাচ্ছে!” মিঠির জন্য কৃশানুই সেরা পাত্র! ‘চিরসখা’র নতুন জুটির রসায়নে উচ্ছ্বসিত দর্শকরা, ভুলিয়ে দিলেন প্লুটোকে!

কীভাবে এবং কোথায় কারও অনুভূতি আঘাত করবে, তা অনেকেই বোঝেন না। অথচ তাদের উচিত এই বিষয়গুলো বিবেচনা করা!” প্রসঙ্গত, এই নিয়ে যে অব্যাহত সমালোচনা হয়েছে, সেটি ক্ষোভের পাশাপাশি প্রমাণ করেছে যে, সমাজে এখনও নারীদের প্রতি এমন অবিচার কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। শুভশ্রীও শুধু একজন অভিনেত্রী নয়, একজন মানুষও যার অনুভূতি এবং মর্যাদা রয়েছে। আর তার প্রতি এমন নেতিবাচক মনোভাব সমাজের জন্য মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। শুভশ্রীর পাশে দাঁড়িয়ে যারা প্রতিবাদ করেছেন, তাঁদের মনোভাবই স্পষ্ট যে সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে ট্রোল সংস্কৃতি নিয়ে তাঁরা কতটা বিরক্ত!