তাঁর নামটা শুনলেই মনে পড়ে মঞ্চে আলো, গানের ছন্দ আর প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা এক ব্যক্তিত্বের কথা। ছোটবেলা থেকেই সুর যেন ছিল তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ, জন্ম থেকেই ‘জোজো মুখোপাধ্যায়’ (Jojo Mukherjee) বড় হয়েছেন সঙ্গীতময় পরিবেশে— বাবা-মা দু’জনেই ছিলেন শিল্পী, তাই সুর আর তাল তাঁর কাছে কোনও শেখার বিষয় ছিল না, বরং শ্বাস নেওয়ার মতোই স্বাভাবিক এক অভ্যাস। তবে, প্রতিভাবান বাবা-মায়ের সন্তান হলেই সাফল্য আসে না, এই কথাটা জোজো খুব ভালো করেই জানতেন। বরং তুলনা, প্রত্যাশা আর প্রমাণের চাপের মধ্যে দিয়েই নিজেকে গড়ে তুলতে হয়েছে তাঁকে।
গানের প্রতি ভালোবাসা তাঁর কাছে কখনও পেশা নয়, বরং আত্মার প্রকাশ। তাই মঞ্চই হয়ে উঠেছিল তাঁর প্রথম প্রেম। দর্শকের সামনে দাঁড়িয়ে সুরের সঙ্গে নাচা, অভিব্যক্তিতে অনুভূতি মেশানো— এগুলোই তাঁকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছিল। তবে তাঁর এই পথচলা কখনওই মসৃণ ছিল না। শুরুতে নিজের কণ্ঠ আর পরিবেশনের ধরন নিয়ে শুনতে হয়েছে নানা মন্তব্য, কিন্তু জোজো জানতেন যে নিজের রঙে নিজেকে না আঁকলেই শিল্পী অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই সমালোচনাকে দূরে সরিয়ে তিনি আরও বেশি করে মঞ্চে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন।
হঠাৎ করেই সবাইকে চমকে দিয়ে, এদিন তিনি সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিলেন সংগীতশিল্পী তথা লোক-গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে! কিন্তু কী এমন ঘটেছে? এদিন একটি মঞ্চানুষ্ঠান শেষ করার পর, সমাজ মাধ্যমে লাইভে এসে জোজো জানান, “আমি আজকে যে জায়গায় পৌঁছেছি, সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায়। কাউকে ছোট করিনি, সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টা করেছি। আমি সচরাচর রেগে যাই না, কিন্তু আজকে একজনের উপর আমার খুব রাগ হচ্ছে। আমাদের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিটা খুব ছোট, সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হয়।
সেখানে একজন নতুন শিল্পী হয়ে, এত উদ্ধত্য মোটেই ভালো না।” তিনি আরও যোগ করলেন, “বিজয়গড় উদয়চক্র ক্লাবের হয়ে একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে আজ প্রায় ১৭ বছর পর সেখানে গেলাম। মানুষজন খুবই ভালো ছিল, কিন্তু একজনের জন্য সবটা মাটি হয়ে গেল! কোনও অনুষ্ঠানে যখন দুজন সঙ্গীত শিল্পী থাকেন, যে প্রথমে গান গায় সে শেষে এবং যে শেষে গান গায় সে শুরুতে সাউন্ড চেক করে নেয়। এদিন আমরা আগে সাউন্ড চেক করি, সমস্ত ইন্সট্রুমেন্ট ঠিক জায়গা মত রেখে টিমের সবাই রেস্ট নিতে যায়। পৌষালীর টিমের সবাই এসে, বিনা অনুমতিতে কাউকে কিছু না জানিয়েই এক কোনায় সরিয়ে দেয় আমাদের সব ইন্সট্রুমেন্ট।
প্রথমত, যেটা এক কথায় অসভ্যতামি! আর যারা মিউজিকের সঙ্গে যুক্ত, তারা জানেন যে একবার সাউন্ড চেক হয়ে গেলে আর কিছু বিশেষ ইন্সট্রুমেন্ট সরানো যায় না। সেখানে একবার না বলে পৌষালী এবং তার ম্যানেজমেন্ট টিম, স্বামী— সবাই এই কাজটা করেছে। এরপর আর অনুষ্ঠান করার কোনও ইচ্ছা ছিল না, শুধুমাত্র দর্শকদের কথা মাথায় রেখেই আমি করেছি। একটা কথা বলতে আজ বাধ্য হচ্ছি যে, এটা যদি আমার দলের কেউ করত, তাহলে দোষটা কিন্তু আমার নামেও পড়ত। পৌষালীর টিম আমার সঙ্গে অসভ্যতামি করেছে, এটা মেনে নেব না। মঞ্চ কারোর বাবার সম্পত্তি নয়।
আরও পড়ুনঃ মানবিক দেব! এক টাকাও রাখলেন না নিজের কাছে! ‘রঘু ডাকাত’ ইভেন্টের সব টাকা ফেডারেশনের হাতে তুলে দিলেন মেগাস্টার, মুগ্ধ টলিউড
জীবনে অনেক শিল্পী আসতে দেখেছি আবার ধুলোয় মিশে যেতে দেখেছি, তাই অহংকার কমাতে হবে। ভবিষ্যতে আর কারো সঙ্গে এটা করলে, তার ফলাফল কিন্তু ভালো হবে না!” এটা না বললেই নয়, আজ জোজো শুধু একজন গায়িকা নন, বরং এক ‘স্টেজ ফেনোমেনন’, যাঁর উপস্থিতি মানেই তাল, তালে মেতে ওঠা দর্শক। জীবনের নানা ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে জোজো মুখোপাধ্যায় আজ প্রমাণ করেছেন— সত্যিকারের শিল্পী কখনও থেমে যায় না, বরং সুরের ভেতর দিয়েই বেঁচে থাকে। একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হয়ে তাই, নবাগত শিল্পীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশও স্বাভাবিক।






‘যা পরিস্থিতি মধুবনীকেও বলতে ভয় লাগছে ইউ লুক গুড ইন শাড়ি! ঋজুর বোকামির দায় যেন আমারও!’ সহ অভিনেতা রাজা গোস্বামীর মন্তব্যে বিত’র্ক টলিপাড়ায়