‘‘যে মুখ থেকে প্রথম বাবা ডাক শুনলেন, তাকেই ভুলে গেলেন?’’ কাঞ্চনের ফাদার্স ডে পোস্টেই উঠল নেটিজেনদের অভিযোগের ঝড়

বাবা হওয়া মানেই জীবনের এক অনন্য প্রাপ্তি। ছোট্ট একটা মুখ, তার মিষ্টি হাসি আর ‘বাবা’ বলে ডাকা— এটাই হয়তো অনেক পুরুষের কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার। আর তাই বাবা দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই সেই আবেগ ভাগ করে নেন। এমনই একটি পোস্ট করেছিলেন বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ কাঞ্চন মল্লিক। মেয়ের সঙ্গে তোলা একটি স্নেহমাখা ছবি পোস্ট করে আবেগঘন ক্যাপশন দিয়েছিলেন অভিনেতা। এক পাশে নিজের বাবার সঙ্গে পুরনো ছবি, আর অন্য পাশে তাঁর মেয়ের সঙ্গে বর্তমানের মুহূর্ত। আবেগের প্লাবনে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর অনুভব— একজন বাবা হিসেবে কী অনুভব করেন, তার প্রতিচ্ছবি ছিল এই পোস্টেই।

পোস্টে কাঞ্চন লেখেন, “আমি কখনোই কোনও বিশেষ দিন উদযাপনে বিশ্বাসী নই, আমি একটু পুরনো মানসিকতার মানুষ… তবে আমার মেয়ে ২০২৪-এর প্রজন্মের, তার কাছে এই দিনগুলো বিশেষ হয়ে উঠবে, তাই আমি আজকের দিনটা ওর জন্যই বললাম।” এরপর তিনি লেখেন, কীভাবে তাঁর মেয়ে তাঁকে প্রতিদিন ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়, আদর করে গাল ছুঁয়ে বুঝিয়ে দেয়— প্রত্যেকটা দিনই যেন ফাদার্স ডে। ছোটবেলায় বাবার কাছে যে আশ্রয় পেতেন, সেই একই আশ্রয়ের অনুভব যেন এখন নিজেই দিতে পারছেন তাঁর সন্তানকে। সব মিলিয়ে পোস্ট ছিল এক আবেগে ভরপুর ‘ফাদারহুড’-এর চিত্র।

কাঞ্চনের এই পোস্ট চোখে পড়তেই প্রথমে প্রশংসা করতে থাকেন অনেকে। কিন্তু তারপরেই কমেন্ট বক্সে একে একে ধরা পড়তে শুরু করে বিতর্কিত মন্তব্য। প্রশ্ন ওঠে— “আপনার আগের সন্তান কোথায়?” নেটিজেনদের একাংশ সরাসরি কমেন্ট করেন, “আপনার তো আগেও এক সন্তান ছিল, সেই ছেলেটির কথা মনে নেই?” কেউ কেউ লেখেন, “যে ছেলের মুখ থেকে প্রথম বাবা শুনলেন, তার কি আজ কোনও অস্তিত্বই নেই আপনার কাছে?” কেউ কেউ আবার কড়া সুরে লেখেন, “একটা ছবি দিয়েই আপনি যদি সব বোঝাতে চান, তাহলে সেটাতে আপনার সব সন্তান থাকা উচিত ছিল। নাকি বাবার ভালবাসাও এখন কাস্টমাইজড হয়?”

এই ধরণের মন্তব্য একটার পর একটা আসতে থাকে। কেউ লেখেন, “আপনার মেয়ে যদি সত্যিই শিক্ষিত পরিবেশে বড় হয়, তাহলে একদিন সে নিজেই আপনার থেকে প্রশ্ন করবে— প্রথম সন্তানকে আপনি ভুলে গেলেন কেন?” একজন ব্যঙ্গ করে লেখেন, “আপনার ফাদার্স ডে পোস্ট দেখেই বুঝলাম— ফাদার আপনি নন, বরং একজন সিলেক্টিভ স্নেহপ্রার্থী!” হাসির ছলে একজন তো লিখেই ফেলেন, “আপনি সত্যিই বাবা? না কি শুধু ছবিতে ভালো মানুষ দেখাতে চান?”

আরও পড়ুনঃ সংসার করতে না পারায় গৃহত্যাগ করবে চাঁদু! এদিকে বৈবাহিক জীবনে আর নিজেকে বাঁধতে চায় না কমলিনী! ছেলেমেয়েরাও আজ কমলিনীর বিরুদ্ধে! তবে কি সমাজের বিধি নিষেধ মেনে নেবে কমলিনী? 

সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, এত কিছুর পরেও কাঞ্চন এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। পোস্ট ডিলিট করেননি, এমনকি কমেন্ট অফ-ও করেননি। এটা দেখেই অনেকেই বলছেন, কাঞ্চন হয়তো বুঝেও না বোঝার ভান করছেন। তবে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গেল— একজন বাবা কি শুধু সেই সন্তানকে ভালোবাসেন যাকে নিয়ে এখনকার সংসার, না কি সেই সন্তানকেও মনে রাখেন, যে প্রথমবার তাঁকে বাবা ডাকতে শিখিয়েছিল?

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।