থিয়েটারের কোলাহল, আলো-অন্ধকারের মায়াজাল আর মঞ্চের কাঠের গন্ধের পরিবেশেই বড় হয়েছেন অভিনেত্রী ‘মানসী সিনহা’ (Manasi Sinha)। বহু শিল্পীর মতো বড় হয়ে অভিনয়ের দিকে ঝোঁকেননি তিনি, বরং অভিনয় যেন জন্ম থেকেই তাঁর শিরায়। তিন বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে ওঠা, আজ তিনিই ছোট এবং বড়পর্দা মিলিয়ে টলিউডের এক জনপ্রিয় মুখ। অভিনয়ে তাঁর স্বচ্ছ ভাবনা, শরীরী ভাষা আর সহজাত স্বাভাবিকতা তাঁকে আলাদা করে দেয় সমসাময়িক অনেকের থেকেই।
মানুষ হিসেবেও তিনি ঠিক পর্দায় দেখা সেই মাতৃত্বমাখা চরিত্রগুলোর মতোই। খুব প্রাণবন্ত আর অতিরিক্ত আন্তরিক। মানসীর সান্নিধ্যে এলেই বোঝা যায় শিল্পী হতে হলে কতটা মানুষ হতে হয়। দর্শক যেমন তাঁকে পর্দায় ভালোবেসেছেন, সাধারণ মানুষ হিসেবেও তিনি ঠিক ততটাই গ্রহণযোগ্য। থিয়েটার থেকে সিনেমা, তারপর পরিচালনার দিকে এগোনোর সাহস, সবই তাঁর আত্মবিশ্বাস আর শিল্পের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রমাণ।
ব্যক্তিগত আদর্শের জায়গাতেও তিনি বরাবর অটল। বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী মানসী রাজনীতি নিয়ে কখনও লুকোচুরি করেন না। তিনি যে সমাজ, কাজ আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবেন তা তাঁর কথাতেই পরিষ্কার। বিশেষ করে ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে তাঁর ছেলে-মেয়ে মেঘ ও বৃষ্টির প্রথম ভোট নিয়ে তিনি যে পরামর্শ দিলেন, তা মা হিসেবে যেমন দায়িত্বশীল, নাগরিক হিসেবেও তেমনই স্পষ্ট। তাঁর বক্তব্য, “আমার মনে হয় যদি সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কতটা ক্ষতি হতে পারে।
তাহলে তারা বামপন্থী মানুষদের কথা আবার একবার ভাবতে পারেন। একটা জিনিষ যেটা সবার কথা শুনে বুঝি যে, তৃণমূলকে সহ্য হচ্ছে না আর। এদিকে বিজেপি স্বপ্নেও নেই, তাহলে তো বাকি রইল বামফ্রন্ট! সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি পরর্বতী প্রজন্মকে বলব যে, যেটাই সিদ্ধান্ত নেবে, যেন নিজের কথা না ভেবে নেওয়া হয়। বরং ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিতে হবে। একটু ভেবে দেখতে হবে, একেবারেই কি ধ্বংস করে দিতে চান নাকি আবার একটু উঠে আসুক রাজ্যটা? নতুন ভোটাররা ওয়াকিবহাল হও!
সব দিকটা দেখে, বাবা-মায়ের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাটা বুঝেই সিদ্ধান্ত নাও তোমার কি করা উচিৎ। মাথায় রেখো যে, তোমার একটা ভোটও কিন্তু প্রয়োজনীয়!” নতুন ভোটারদের কাছে তাঁর বার্তা শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং এক ধরনের সামাজিক শিক্ষা। যাঁরা ভোট দিতে যাচ্ছেন তাঁদের প্রতি তাঁর আহ্বান, নিজের স্বার্থ না ভেবে সমাজের স্বার্থ ভাবো। পরিবারের বড়দের শিক্ষার আলোয় বিচার করো। এই পরামর্শের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এক পরিণত নাগরিকের উদ্বেগ আর অভিজ্ঞতার বার্তা।
আরও পড়ুনঃ ‘শোলাঙ্কি আর গৌরব ভীষণ প্রিয়, তবে গল্পটা যেন ‘গাঁটছড়া’র মতো!’ দমদার জুটি সত্ত্বেও ক্লিশে গল্পে দর্শকদের মন জিততে ব্যর্থ হচ্ছে ‘মিলন হবে কত দিনে’? নতুনত্ব কোথায়? প্রশ্ন নেটপাড়ার
মানসী সিনহার যাত্রাপথে তাই অভিনয়ের সাফল্য যেমন বড়। তেমনই মানুষের জীবনে প্রভাব রাখার মতো ভাবনার উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্য। আজ তিনি শুধু পর্দার নন, এমন এক কণ্ঠ যাঁর কথায় অনেকেই নিজেদের অবস্থান নতুন করে ভাবেন। নিজের স্বকীয়তায় আলাদা ছাপ রেখে মানসী প্রমাণ করেছেন, একজন শিল্পীর বিস্তার শুধু কাজের গণ্ডিতে নয়, সমাজেও! যতটা খ্যাতি সে সমাজের থেকে পাবে, তাঁকে সমাজের প্রতিও ততটাই দায়িত্বশীল হতে হবে!






‘মেয়েটাকে দেখলেই ওর বাবার কুকীর্তি আর অন্য সন্তানের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের কথা মনে পড়ে যায়!’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কৃষভিকে নজিরবিহীন আক্রমণ নেটিজেনের! রেগে আগুন শ্রীময়ী