স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সিঁদুর পরার কি মানে? সুদীপ মুখার্জির স্ত্রীকে কটাক্ষ নেটিজেনদের ! “আমি আজীবন শাঁখা-সিঁদুর পরেই দেবীবরণ করব”— বিচ্ছেদের পরেও দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৃথা চক্রবর্তী!

সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও পৃথা চক্রবর্তীর দাম্পত্যজীবন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা জল্পনা চলছে। একসময় তাঁদের যুগল জীবনের কেমিস্ট্রি অনেকে ঈর্ষা করতেন, কিন্তু এখন সেই সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গেছে। দু’জনেই নিজেদের পথে হাঁটছেন— সুদীপ একা, আর দুই ছেলেকে নিয়ে নিজের আলাদা সংসারে পৃথা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও এক দৃশ্য দেখে অবাক সবাই— দশমীর দিন সিঁদুরখেলায় অংশ নিতে গিয়ে শাঁখা-সিঁদুর পরেই দেবীবরণ করলেন পৃথা চক্রবর্তী। আর সেই দৃশ্যই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে ওঠে সামাজিক মাধ্যমে।

কেউ তাঁকে সাহসী বললেন, কেউ আবার প্রশ্ন তুললেন— “বিবাহবিচ্ছেদের পরেও কেন শাঁখা-সিঁদুর?” কটাক্ষ, ট্রোল, ব্যঙ্গ— সবই ধেয়ে এল তাঁর দিকে। কিন্তু পৃথা চুপ করে থাকেননি। বরং নিজের মতো করে জানিয়ে দিলেন, কেন তিনি এমনটা করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি আজীবন শাঁখা-সিঁদুর পরেই দেবীবরণ করব। এটা আমার নিজের ইচ্ছে, কারও অনুমতি লাগবে না।”

তিনি আরও বলেন, “দেবীবরণ মানে তো মঙ্গল চাওয়া। আমি আমার দুই ছেলে, বালি আর ঋদ্ধির বাবার মঙ্গলই চেয়েছি। আমাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর জায়গা থেকে হয়তো শেষ, কিন্তু বাবা-মা হিসাবে আমরা আজীবন একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। তাই তাঁর মঙ্গল কামনা করায় সমস্যা কোথায়?” তাঁর এই বক্তব্যে একদিকে যেমন অনেকেই প্রশংসা করেছেন, তেমনি কেউ কেউ বলেছেন, “এটাই তো প্রকৃত পরিণত দৃষ্টিভঙ্গি।”

পৃথা আরও খোলসা করেছেন শাঁখা-সিঁদুর নিয়ে নিজের ভাবনা। তাঁর মতে, “আমরা অনেকেই জানি না, কেন এই গয়না বা প্রতীকগুলি পরা হয়। শুধু সামাজিক প্রথা বলে নয়, এর পেছনে রয়েছে একাধিক ঐতিহাসিক ও মানসিক দিক। অনেকে যদি আসল অর্থটা জানতেন, তাহলে হয়তো এত সহজে বিচার করতেন না।” এই কথাতেই যেন তাঁর কণ্ঠে মিশে ছিল আঘাত, প্রতিবাদ আর আত্মবিশ্বাস।

আরও পড়ুনঃ “পাবলিককে টাকা খাইয়ে আমার নামে দুর্নাম রটিয়েছে, আমার ছবির সাফল্য সহ্য হয়নি! চারিদিকে শত্রু বাড়লে বুঝতে হবে তুমি ঠিক পথে এগোচ্ছ।” অকপট দেব

টানা নেতিবাচক মন্তব্যের পরেও তিনি ভেঙে পড়েননি। বরং জানিয়েছেন, তিনি এই সব মন্তব্য “উপভোগ” করেন। তাঁর ভাষায়, “মানুষ কথা বলবে, আমি আমার মতো থাকব। আমি আমার বিশ্বাসে অটল।” পৃথার এই অবস্থান যেন আজকের সমাজে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়— সম্পর্ক শেষ হলেও সম্মান, শুভেচ্ছা আর মানবিকতার জায়গা শেষ হয়ে যায় না।

বিচ্ছেদের পরেও এমন মর্যাদা ও সংবেদনশীলতা দেখানো খুব সহজ নয়। কিন্তু পৃথা চক্রবর্তী দেখালেন, নিজের বিশ্বাসে দৃঢ় থাকা কতটা শক্তিশালী এক সিদ্ধান্ত হতে পারে। তাঁর শাঁখা-সিঁদুর হয়তো শুধু গয়না নয়, বরং এক নিঃশব্দ প্রতিবাদ— সমাজের নিয়মে নয়, নিজের মনের নিয়মে বাঁচার সাহসের প্রতীক।